মুসলিম নারী হয়েও যোগ ব্যায়াম শেখানোয় হুমকি
ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের এক মুসলিম যোগ ব্যায়াম শিক্ষিকাকে লাগাতার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাফিয়া নাজ নামের ওই শিক্ষিকা মুসলমান হয়েও যোগব্যায়াম শেখাচ্ছেন এই অভিযোগেই তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। হুমকির কারণে তার বাড়িতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। খবর বিবিসি বাংলার।
রাজধানী শহর রাঁচির বাসিন্দা রাফিয়া স্নাতকোত্তর পড়ছেন। কিন্তু অনেক দিন ধরেই তিনি অনাথ শিশুদের যোগ ব্যায়াম শেখান।
রাফিয়া বলেন, তিন বছর ধরেই হুমকি পাচ্ছেন তিনি। কিন্তু এখন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। বাড়িতে মানুষজন পাথর ছুঁড়েছে কয়েকদিন আগে। আর তারপরেই বাড়ির চারদিকে পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে। লাগানো হয়েছে সিসিটিভিও। মনে হচ্ছে জেলে বন্দি হয়ে আছি আমরা।
হুমকির ঘটনা লিখিতভাবে পুলিশকে জানাননি রাফিয়া। তিনি বলেন, অভিযোগ দায়ের করলেই তো আদালতে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে। আমি সাধারণ পরিবারের মেয়ে, কে করবে ওসব!
তবে অভিযোগ না জানালেও রাঁচির সিনিয়র পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট কুলদীপ দ্বিবেদী বিষয়টা জানতে পেরেই রাফিয়ার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। আর রাফিয়ার নিরাপত্তার ব্যাপারে খোঁজখবর রাখছেন পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।
রাফিয়া বলেন, বিশ্ব যোগ দিবসকে কেন্দ্র করে আমাকে নিয়ে সংবাদপত্রে খবর ছাপা হয়েছিল। তখন থেকেই কলেজে হুমকি দেওয়া শুরু হয়। তারপরে বাবা রামদেবের সঙ্গে মঞ্চেও আমি যোগ ব্যায়াম প্রদর্শন করেছি।
নিয়মিতই ফোন করে বলা হয় যে আমি মুসলিম হয়েও কী করে পুরুষদের যোগ ব্যায়াম করাই। অথচ আমি অনাথ আশ্রমের শিশুদের যোগ শেখাই, বলেন রাফিয়া নাজ।
কারা হুমকি দিচ্ছে জানতে চাইলে রাফিয়া বলেন, কারো নাম নিতে চাই না। তবে হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের লোকই আছে তাদের মধ্যে। পুলিশ জানতে চেয়েছিল বলে তাদের বলেছি। অনেক কল রেকর্ডও দিয়েছি পুলিশকে।
চার বছর বয়স থেকে যোগ ব্যায়াম করেন রাফিয়া নাজ। নানা যোগ প্রদর্শনী করার কারণে কলেজেও যথেষ্ট জনপ্রিয় তিনি। কলেজের ভোটে লড়ার সময় থেকেই তার যোগ ব্যায়াম করার জন্য একটি মহল থেকে দুর্নাম ছড়ানো শুরু হয় বলে অভিযোগ করেন রাফিয়া।
এ/আরকে
মন্তব্য করুন