• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরা নিয়ে জাতিসংঘের শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২৩:০৩

বাংলাদেশ অবস্থানরত প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গাকে নিজের দেশে ফেরার সুযোগ দেয়া হবে কি-না সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। বললেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক (ইউএনএইচসিআর) হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি।

বাংলাদেশ থেকে জেনেভায় ফিরে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রহীনতার বিষয়টি নিয়ে তিনি আগামী সপ্তাহে জেনেভায় মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার আশা করেছিলেন, তবে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে এটি খুবই জটিল বিষয়।

তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত পরিষ্কার যে এই সংকট তৈরি হয়েছে মিয়ানমারে, আর এর সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারেই।

এসময় ইউএনএইচসিআর প্রধান রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে এই পরিস্থিতির সমাধান নিয়ে আলোচনা করা যায়।

তিনি বলেন, যেহেতু এটা নিশ্চিত যে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাটা বেশ সময় সাপেক্ষ বিষয়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে অবস্থানরত মানুষগুলোর জন্য মধ্যমেয়াদি গ্রহণযোগ্য সমাধান খোঁজাও গুরুত্বপূর্ণ হবে।

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব না থাকার বিষয়টি চিহ্নিত করে এর সমাধান করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, কাগজপত্র রয়েছে— কেবল এমন মানুষগুলোকেই যদি মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়া হয়, তবে সেই সংখ্যাটা নিশ্চিতভাবেই অনেক কম হবে। তাই আমি মনে করি, তাদের (মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ) এ অবস্থান থেকে সরে আসা উচিত। একান্তই যদি প্রয়োজন হয় তবে মিয়ানমারের প্রকৃত বাসিন্দাদের চিহ্নিত করে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্ব দেয়া উচিত।

রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আমি যখন উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনে গিয়েছিলাম তখন রোহিঙ্গাদের প্রতি ব্যাপক বৈষম্য ও তাদের দরিদ্রতা দেখে সেখানে সন্ত্রাসবাদের উত্থানকে আমার কাছে অবশ্যম্ভাবী বলে মনে হয়েছিল।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই পরিস্থিতির নিরসন না হলে এই পুরো অঞ্চলে সন্ত্রাসাবাদ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়বে শিগগিরই, বিশেষ করে এই ভঙ্গুর অঞ্চলে।

আগস্টের শেষ দিকে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩০টি চেক পোস্টে হামলা চালায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) নামে একটি জঙ্গি গোষ্ঠী। এরপর প্রদেশটিতে অভিযান চালায় সরকার।

এ অভিযানে ৪০০ জন নিহত হওয়ার কথা দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়। তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার দাবি, নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।

সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে এ পর্যন্ত চার লাখ ২৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশের উপকূলে আশ্রয় নিয়েছে বলে দাবি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার।

চলতি মাসের শুরুতেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) দাবি করে, স্যাটেলাইট ইমেজে রাখাইনে কয়েকশ বাড়ি-ঘর পুড়ে যাওয়ার প্রমাণ দেখা গেছে।

সে সময় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, প্রদেশে বসবাসকারীদের জোর করে দেশত্যাগ, হত্যা, হত্যা চেষ্টা, ধর্ষণ ছাড়াও যৌন হয়রানি করা হচ্ছে।

এদিকে এই ইস্যুতে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

ওয়াই/

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh