ব্রিটেন নির্বাচন, নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ব্রিটেনের মধ্যবর্তী নির্বাচন। কয়েক দিনের ব্যবধানে দুটি সন্ত্রাসী হামলার পর দেশটির ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল ও প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি উভয়ই জঙ্গিবাদকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ইস্যুকে শেষ মুহূর্তের প্রচারণার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে পাল্টে যেতে পারে আগের সব হিসাব-নিকেশ।
তিন মাস আগের জরিপে বড় ব্যবধান এগিয়ে ছিলেন কনজারভেটিভ দলের নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তবে সম্প্রতি সময়ে ব্রিটেনে একাধিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে আগের জরিপের সঙ্গে সবশেষ জরিপ মিলছে না।
সবশেষ প্রকাশিত এক জরিপে দেখা যায়, ব্যবধান কমিয়ে থেরেসার একেবারের কাছাকাছি চলে এসেছে লেবার নেতা করবিন। ফলে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে তাদের মধ্যে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে তার পূর্বাভাস এখনই পাওয়া যাচ্ছে।
মধ্যবর্তী এ নির্বাচনটি মূলত ছিল ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে জনগনের ম্যান্ডেট অর্জনের নির্বাচন। কৌশলী ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে থেরেসা মে’র কনজারভেটিভ পার্টিকেই এখনও শ্রেয়তর মনে করে বেশিরভাগ ব্রিটিশ। নির্বাচনেও শুরুতে দেশটির মূলধারার মিডিয়ায় কনজারভেটিভ সমর্থনের আধিপত্য দেখা গেছে। কিন্তু ধারাবাহিক জঙ্গি হামলার পর সে হিসেব পাল্টে যেতে পারে।
গেলো মাসে ম্যানচেস্টারে বোমা হামলার ঘটনা আজীবন যুদ্ধবিরোধী করবিনের ভোটে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা ছিল। ওই হামলার কারণে তিনদিন বন্ধ ছিল নির্বাচনী প্রচার। কিন্তু শুক্রবার জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে নিজের অবস্থান তুলে ধরেই প্রচারে নামেন করবিন। বিদেশে যুদ্ধে জড়ানোর কারণে ব্রিটেনে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বেড়েছে জানিয়ে তিনি পররাষ্ট্রনীতি বদলের ঘোষণা দেন। এতে তিনি বেশ সাড়াও পেয়েছেন।
এদিকে মে জঙ্গিবাদের ব্যাপারে 'জিরো টলারেন্স' নীতি নেয়ার পরিকল্পনা জানিয়েছেন। আর প্রচারণার শেষ মুহূর্তে থেরেসা মে একধাপ এগিয়ে সবকিছুকে ছাপিয়ে ইসলামী জঙ্গিবাদকে উপজীব্য করেন। প্রয়োজনে মানবাধিকার আইনে পরিবর্তন এনে জঙ্গিদের শায়েস্তা করবেন বলে প্রচারণার শেষ মুহূর্তে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
তাই বলা যায়, থেরেসা ও করবিন দু’মেরুর হলেও উভয়ই এখন নিরাপত্তা ইস্যুকে প্রচারণার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করায় পাল্টে যেতে পারে আগের সব জরিপের ফল।
২০২০ সালে দেশটির পরবর্তী নির্বাচন হবার কথা ছিল। তবে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে হঠাৎ করেই ৮ জুন বৃহস্পতিবার মধ্যবর্তী নির্বাচন ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে জয়ী কোনও দলের এককভাবে সরকার গঠন করতে হলে অন্তত ৩২৬টি আসন পেতে হবে। ৬৫০ আসনের ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গেলো নির্বাচনে কনজারভেটিভরা পেয়েছিল ৩৩০ আসল। লেবার পার্টি জিতেছিল ২২৯ টি।
এপি
মন্তব্য করুন