ফাঁসির আগে আমেরিকান গায়িকার গান শুনতেন সাদ্দাম
মৃত্যুর আগে কারাবন্দি অবস্থায় আমেরিকান গায়িকা মেরি জে ব্লিজের গান শুনতেন ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন।
বাগদাদের জেলে সাদ্দামের কারারক্ষী হিসেবে দায়িত্বে পালন করছিলেন আমেরিকার ৫৫১ তম মিলিটারি পুলিশ কোম্পানির ১২ সদস্য। উইল বারডেনওয়েরপার ছিলেন তাদের একজন।
তার লেখা বই ‘দ্য প্রিজনার ইন হিজ প্যালেস: সাদ্দাম হুসেন, হিজ আমেরিকান গার্ডস অ্যান্ড হোয়াট হিস্ট্রি লিভস আনসেড’। বইতে তিনি লিখেছেন, রেডিওতে মেরি জে ব্লিজের গান শুনতে ভালবাসতেন সাদ্দাম।
মার্কিন সেনার হাতে ধরা পড়ার সময়েও যার প্রথম কথা ছিল, আমি সাদ্দাম হুসেন। ইরাকের প্রেসিডেন্ট।
সেই গদিচ্যুত প্রেসিডেন্টকে খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো তার।
তথ্য বহুল বইটিতে তিনি আরো জানান, কারাগারের টিভিতে শিশুদের অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে খিলখিলিয়ে হেসেও উঠতেন। বাগানও করতেন। সাইক্লিং মেশিনে শরীরচর্চা করতেন, আবার দেদার মিষ্টি খেতেও ভালবাসতেন। মাফিন ছিল বড় প্রিয়।
কারারক্ষীদের সঙ্গে আলাপকালে সাদ্দাম বলেছিলেন, একটি পার্টিতে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে কয়েকজনকে খুন করেছিলো আমার ছেলে উদে। খবর পেয়ে শাস্তি হিসেবে গ্যারেজে থাকা গাড়িগুলো পুড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরমধ্যে ছিলো রোলস রয়েস, ফেরারি, পোরশে।
উইল লিখছেন, ক্ষমতাচ্যুত সাদ্দাম সকালের নাস্তায় প্রথমে খেতেন ডিমের ওমলেট। তার পরে মাফিন। সব শেষে তাজা ফল। ওমলেট ছেঁড়া-ফাটা থাকলে কখনওই খেতেন না।
সঙ্গে থাকতো কোহিবা চুরুট, ভেজা কাপড়ে জড়িয়ে বাক্সে রাখা।
মজার ব্যাপার হলো রক্ষীদের সাদ্দাম জানিয়েছিলেন, তাকে চুরুট খাওয়ার কৌশল শিখিয়েছিলেন কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো।
উইরে বইতে আরো ফুটে ওঠে, সাদ্দাম জীবনের অনেক গল্প কারারক্ষীদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। ছেলেমেয়েদের স্কুলের প্রথম দিনের গল্প। ছেলেকে সাজা দেয়ার গল্প। কোথায় যেনো তৈরি হয় একটা সখ্য। হয়তো তাই সাদ্দামের ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পরে একটা শূন্যতা গ্রাস করেছিল রক্ষীদের অনেককেই।
একজন বলেই ফেলেছিলেন, মনে হচ্ছে, নিজের পরিবারের কেউ মারা গিয়েছে। সেই মৃত্যুর জন্য যেনো আমিই দায়ী।
ওয়াই/জেএইচ
মন্তব্য করুন