• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ক্ষমতায়নে এখনো পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে নারীরা

শামীমা নাসরিন

  ০৮ মার্চ ২০১৭, ২১:৪২

এ বছর ‘পরিবর্তনের জন্য সাহসী হও, প্রতিপাদ্যে লিঙ্গ সমতা ও উন্নত বিশ্ব গড়ার ডাক দিয়ে দিনটি উদযাপন করছে বিভিন্ন নারী সংগঠনগুলো। বদলে যাওয়া বিশ্বের কর্ম পরিবেশে নারীর সরব উপস্থিতির কথা বলছে জাতিসংঘ। দু’হাজার ত্রিশ সালের মধ্যে বদলে যাওয়া বিশ্বে কর্ম পরিবেশে নারী পুরুষের সমতায়নে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে।

নারীর নিজস্ব অর্জন ও সফলতার স্বীকৃতি, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। জাতি, ভাষা, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক- সব ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনভাবে নারীর অর্জনকে আজ মর্যাদা দেয়ার দিন। তবে এ স্বীকৃতি, সহজে মেলেনি!

মজুরি বৈষম্য, শ্রমঘণ্টা কমানো, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে, ১৮৫৭ সালে গর্জে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সুতা কারখানার ১৫০০ নারী শ্রমিক। তাদের সাহসী পদযাত্রায় পুলিশ বাধা দিলেও, দাবি আদায়ে এগিয়ে যান তারা।

১৯০৮ সালে নিউইয়র্কে ‘সোশ্যাল ডেমোক্রেট’ নারী সংগঠনের পক্ষে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের ডাকে বসে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৯১০-এ ডেনমার্কে ১৭টি দেশের ১০০ নারীর উপস্থিতিতে হয় দ্বিতীয় নারী সম্মেলন। সেখানেই প্রতি বছর ৮ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন ক্লারা। সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ সাল থেকে পালিত হবে, নারীদের সম-অধিকার দিবস। আন্দোলনে এগিয়ে আসে চীন, সোভিয়েত ইউনিয়নসহ, সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো। এরপর বিভিন্ন দেশে পালিত হতে থাকে নারী দিবস। স্বীকৃতির জন্য ১৯৭৫ সালে প্রস্তাব ওঠে জাতিসংঘে। অবশেষে ১৯৭৭ সালে মেলে নারী দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

তবে, যে লক্ষ্যে এ দীর্ঘ সংগ্রাম, তা পূর্ণতা পায়নি আজও। অথচ, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে, নারীদের ভূমিকা চোখে পড়ার মতো। যুক্তরাষ্ট্রের ‘কেআইভিএ’র পরিসংখ্যান বলছে, কৃষিক্ষেত্রে পুরুষের মতোই ভূমিকা নারীর। বিশ্বে খাদ্য উৎপাদনের ৫০ ভাগই করে নারী। কাজ করে বিশ্বের ৬৬ ভাগ নারী। আয়ের ৮০ ভাগ নারী খরচ করে পরিবারের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। ১৫ কোটি মানুষের ক্ষুধা দূর করে দারিদ্রের চক্র ভাঙছে নারীরাই। নারীরা বিনিয়োগ করলে সুফল পায় পরিবারের সবাই। ২০-৩০ ভাগ জমিতে উৎপাদন বাড়াতে ভূমিকাও নারীর।

বিশ্বজুড়ে নারীদের কণ্ঠ বলিষ্ঠ হলেও, ক্ষমতায়নে এখনো পুরুষের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। ‘আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন ২০০৯’-র প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বে পুরুষের তুলনায় ১৬ ভাগ কম পারিশ্রমিক পান নারীরা। আরেক পরিসংখ্যান বলছে, শতকরা ৬৫ ভাগ নারী কাজ করলেও, আয় করেন মাত্র ১০ ভাগ। বিশ্বে নারী-পুরুষের সংখ্যানুপাত প্রায় সমান হলেও, মোট সম্পদের ১০০ ভাগের কেবল এক ভাগের মালিক নারী।

দু’হাজার ত্রিশ সালের মধ্যে বিশ্বে কর্ম পরিবেশে নারী পুরুষের সমতায়নে ‘বদলে যাওয়া বিশ্বে কর্মক্ষেত্রে নারীর সরব উপস্থিতি’-প্রতিপাদ্যে এ বছর দিনটি উদযাপন করছে, জাতিসংঘ। ক্ষমতায়নের মাধ্যমে আগামি দিনকে গৌরবোজ্জ্বল করতে এগিয়ে যেতে হবে নারীকেই।

জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh