• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নৌযানের নকশা

বড় কর্তার দাবি পূরণ না হলে মেলে না অনুমোদন

নাজিব ফরায়েজী

  ১৫ জুন ২০১৮, ০৮:৫১

নৌযানের নকশা অনুমোদনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পেছনে ঢালতে হয় কাড়ি কাড়ি টাকা। কর্তাদের দাবি পূরণ না হলে মাসের পর মাস অপেক্ষায়ও মেলে না অনুমোদন। প্রকাশ্যে এমন ঘুষের টাকাসহ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের দু’জন প্রধান প্রকৌশলী পরপর দুদকের হাতে গ্রেপ্তার হলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি।

নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান জানিয়েছেন, অপরাধ দমনে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

দেশের নৌযানগুলোর নকশা অনুমোদন ও সার্ভে সনদ দেয়ার দায়িত্ব নৌপরিবহন অধিদপ্তরের। গুরুত্বপূর্ণ এই দায়িত্ব পালনেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়মের অভিযোগের পাহাড়। সরকার অনুমোদিত ডিজাইন হাউজ থেকে নকশা তৈরি করে আবেদনপত্র জমা দেয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান থাকলেও বেশির ভাগের বেলায়ই তা মানা হয় না। প্রতিষ্ঠানটিতে এখনো জমা আছে ৩১৩টি আবেদন। হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া সবগুলোই পেরিয়েছে মাসের পর মাস।

লঞ্চ মালিক সমিতির সহ সভাপতি শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, টাকার জন্য নকশাকে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করে ফেলে রাখা হয়। টাকা দিলে আবার তা হয়ে যায়। তারা আমার ৩ জাহাজকে দীর্ঘ একটা বছর ঘুরিয়েছে শুধু টাকার জন্য।

অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, নকশা অনুমোদন করতে নিয়ে আটকে রাখে। বাধ্য হয়ে তখন নতি স্বীকার করে তারা যেটা চায়, সেটাই দিতে হয়। এভাবেই আমাদের প্লান আনতে হয়। আমরা এগুলো প্রকাশ্যে বলছি- একটা প্ল্যান আনতে ১৫ লাখ টাকা চায়। তিনি প্রশ্ন করেন- এগুলোর সমাধান কোথায়?

মালিকদের অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে বার বার। গত ১২ এপ্রিল সেগুনবাগিচার একটি রেস্তোরায় বসে ‘ঘুষের পাঁচ লাখ টাকা’ নেয়ার সময় দুদকের কাছে ধরা পড়েন, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এসএম নাজমুল হক। নক্শা অনুমোদনের জন্য ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে সৈয়দ শিপিং লাইন্সের কাছ থেকে প্রথম দফা পাঁচ লাখ নেয়ার পর দ্বিতীয় দফার টাকা নিতে এসে গ্রেপ্তার হন তিনি।

নাজমুল হকের আগের প্রধান প্রকৌশলী ফখরুল ইসলামও ধরা পড়েন, ঘুষের পাঁচ লাখ টাকাসহ। গত বছরের ১৮ জুলাই জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস থেকে এই ঘুষ নেন তিনি।

পরপর একই অধিদপ্তরের দু’জন সিনিয়র কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তারে দীর্ঘ দিনের অনিয়মের জট খুলতে শুরু করে। তাই নকশা অনুমোনের দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রেখে করা কমিটিকে দেয়া হয়।

নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম বলেন, এটার সঙ্গে যেহেতু ডিপার্টমেন্ট সম্পৃক্ত, সুতরাং ডিপার্টমেন্টে এক ধরনের সংকটের জায়গা তৈরি হয়। এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই সংকট থেকে আমরা যাতে উত্তোরণ ঘটাতে পারি তার জন্য যত পদক্ষেপ নেয়া দরকার, তা আমরা নিচ্ছি। তবে কেউ সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি ধরে অভিযোগ করলে আমরা এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে পারবো।

নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ডিজাইন হাউস বা মালিকরা কি করেন না করেন তা সাধারণত মন্ত্রণালয়ের জানার কথা না। উনারাও কখনও আমাদের কাছে অভিযোগ করেন না।

তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, নতুন উদ্যোগের ফলে নকশা অনুমোদনে দুর্নীতি ও জটিলতার অবসান হবে।

এসআর

মন্তব্য করুন

daraz
  • এক্সক্লুসিভ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মঞ্চে ফিরছে ‘মাধব মালঞ্চী’
শ্যামবাজারে লঞ্চের আগুন নিয়ন্ত্রণে 
রাজধানীর শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চে আগুন
মালয়েশিয়ায় দুই হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে নিহত ১০
X
Fresh