• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

৬৬ বছরেও শহিদ সালামের কবর পাকা হয়নি

আজাদ মালদার

  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৭:০১

ভাষা আন্দোলনের প্রসঙ্গ এলেই সালাম, রফিক, জব্বর, বরকত, শফিউরের নাম আসবেই। ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম আবদুস সালাম। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বায়ান্নর ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তায় ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নেন বাংলার দামাল ছেলেরা। পরে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে আবদুস সালাম গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে তাকে ভর্তি করা হয়। দেড় মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৯৫২ সালের ৭ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আবদুস সালাম ১৯২৫ সালে ফেনীর দাগনভূঁইয়ায় লক্ষণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে গ্রামটি তার নামানুসারে সালাম নগর করা হয়।

আবদুস সালাম কর্মজীবনে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের ডিরেক্টরেট অব ইন্ডাস্ট্রিজ বিভাগের 'পিয়ন' হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঢাকার নীলক্ষেত ব্যারাকের ৩৬বি নম্বর কোয়ার্টারে থাকতেন।

এরই মধ্যে তার নামে সালামনগরে ভাষা শহিদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর, লক্ষণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরি করা হয়।

তবে ভাষা আন্দোলনের ৬৬ বছর পার হলেও আজিমপুর কবরস্থানে আবদুস সালামের কবরটি এখনো পাকা করা হয়নি।

এদিকে প্রায় ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে শহিদ সালামের বাড়ির অদূরে নির্মাণ করা হয় ভাষা শহিদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। অযত্ন আর নানা অব্যবস্থাপনায় পড়ে আছে গ্রন্থাগার ও জাদুঘরটি। স্থানীয়ভাবে শহিদ সালাম স্মরণে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তদারকির অভাবে চলছে ধুঁকে ধুঁকে। ২০০৮ সালের ২৬ মে স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগারটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: লক্কড়-ঝক্কড় গণপরিবহন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন যাত্রীরা
--------------------------------------------------------

এরপর থেকে আর কোনো সংস্কার হয়নি স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগারটির। ভবনের ছাদ বেয়ে বর্ষাকালে পানি পড়ে। জানালার গ্লাসগুলো ভেঙে পড়ে আছে। গ্রন্থাগার ভবনের বৈদ্যুতিক সুইচ ও বোর্ডগুলো নষ্ট হয়ে আছে বহুদিন থেকে। গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে একজন কেয়ারটেকার নিয়োগ দেয় জেলা পরিষদ। অল্প বেতনের কারণে কিছুদিন পর তিনি চলে যান। পরে একজন লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ দেয়া হলেও তিনিও কয়েক দিন পর চলে যান। দীর্ঘদিন গ্রন্থাগারটি না খোলায় ময়লার স্তূপ জমে গেছে। আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরে যাওয়ার রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। চলাচলের ভোগান্তিতে দর্শনার্থীও কমে গেছে।

শহিদ সালামের ছোট ভাই আবদুল করিম জানান, সালামের স্মৃতিচিহ্ন বলতে কিছুই নেই। রক্তমাখা শার্ট আর একটি ছবি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য খাজা আহমদ নিয়ে যান। এরপর তা আর ফেরত পাওয়া যায়নি। তার স্মৃতিতে নির্মিত গ্রন্থাগার ও জাদুঘরটি সংরক্ষণেও সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস এলেই শুধু শহিদ সালামের পরিবারের খোঁজখবর নেয়া হয়। বাকি সময় তারা উপেক্ষিত থাকেন বলে জানান আবদুল করিম ।

শহিদ সালাম স্মৃতি যাদুঘরের লাইব্রেরিয়ান খাদিজা বেগম। তিনি জানান, রাস্তা সংস্কার না করায় আগের মতো দর্শনার্থী আসে না। আগে সপ্তাহে কয়েক শতাধিক পাঠক ও দর্শনার্থী আসলেও এখন মাসে ৫০ থেকে ৬০ জন আসে।

আরও পড়ুন:

এমসি/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • এক্সক্লুসিভ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম হাসপাতালে ভর্তি
ঈদ সালামি নিয়ে দ্বন্দ্ব, স্ত্রীর কোপে স্বামী হাসপাতালে 
জি এম কাদেরকে পা ছুঁয়ে সালাম করলেন রাঙ্গা
‘নতুন মানিব্যাগ কিনতাম সালামির টাকা রাখার জন্য’
X
Fresh