• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

এখনো সরেনি পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসা

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১০ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:৪০

পুরানো ঢাকার নিমতলীতে ২০১০ সালের ৩ জুন রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ১২৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। এছাড়া দগ্ধ হয়েছে আরো শতাধিক মানুষ। এ ঘটনার পর নিমতলী থেকে কিছু গুদাম ও কারখানা সরানো হলেও পুরানো ঢাকার অন্য এলাকা থেকে খুব বেশি সরেনি। বরং এই গুদামগুলো অন্য এলাকায় স্থানান্তর হয়েছে মাত্র।

এমন ভয়াবহ ঘটনার পরও টনক নড়েনি পুরান ঢাকাবাসীর। গোডাউন ও বাসা-বাড়িতেই এখনও মজুদ রাখা হচ্ছে রাসায়নিক দাহ্যবস্তু। এতে যে কোনো সময় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এসব কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটলে নিমতলীর চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা। তাই কারখানাগুলোকে চিহ্নিত করে দ্রুত সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) এক হিসেবে দেখা গেছে, পুরানো ঢাকায় রয়েছে ২৫ হাজার কেমিক্যাল গোডাউন বা রাসায়নিক দাহ্য বস্তুর গুদাম। এসবের মধ্যে ১৫ হাজার আছে খোদ বাসা-বাড়িতেই। মাত্র আড়াই হাজার গুদামকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে সিটি করপোরেশন। বাকি ২২ হাজারের বেশি গুদামই অবৈধ। ২০০ ধরনের ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিকের ব্যবসা রয়েছে এলাকাজুড়ে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজধানীর লালবাগ, ইসলামবাগ, হাজারীবাগ, কোতোয়ালি, চকবাজার, বংশাল, কামরাঙ্গীরচর, শ্যামপুর ও কদমতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় অলিগলিতেই গড়ে উঠেছে হাজার হাজার কারখানা। অবৈধ কারখানার মধ্যে রয়েছে— ব্যাটারি তৈরি, নকল ওষুধ, নিষিদ্ধ পলিথিনব্যাগ, প্লাস্টিক সরঞ্জাম, নকল বৈদ্যুতিক ক্যাবল, ঝালাই, খেলনা ও জুতা-স্যান্ডেলসহ শতাধিক পণ্য তৈরির কারখানা।

এসব পণ্য উৎপাদনে বেশিরভাগ কারখানায় ব্যবহার করা হয় দাহ্য কেমিক্যাল। বিশেষ করে জুতা তৈরির ফ্যাক্টরিতে যে সলিউশন ব্যবহার করা হয় সেগুলো খুবই বিপজ্জনক বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক আলী আহমেদ খান।

তিনি আরটিভি অনলাইনকে বলেন, কেমিক্যাল থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে খুবই অল্প সময়ে অনেক বড় আকার ধারণ করে। বাসাবাড়িতে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে জুতা কারখানা। এসব জুতা কারখানার সলিউশনে আগুন লাগলে তা খুবই স্বল্প সময়ে দ্রুত ছড়ায়। তাই ঘনবসতি এলাকা ও বাড়ি ঘরে কারখানা গড়া ঠিক নয়।

নিমতলীর ঘটনার পর কেমিক্যাল গোডাউনগুলো সরানোর উদ্যোগ নেয়া হলেও অবৈধ কারখানার বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী খান মোহাম্মদ বিলাল আরটিভি অনলাইনকে বলেন, পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল কারখানার পাশাপাশি অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা তাদের ও নগরবাসীর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা উচিত।

পরিবেশবিদরা অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি এড়াতে অবৈধ এসব কারখানায় নতুন করে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন না করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

এমসি/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • এক্সক্লুসিভ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh