• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে

অনলাইন ডেস্ক
  ১৫ আগস্ট ২০১৬, ১৬:২১

১. স্যার, আপনি লক্ষ্য করে থাকবেন যে, তারা পূর্ববঙ্গের স্থলে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ বসাতে চায়। আমরা বহুবার দাবি জানিয়ে এসেছি যে, [পূর্ব] পাকিস্তানের পরিবর্তে আপনাদের পূর্ব [বঙ্গ] ব্যবহার করতে হবে। ‘বঙ্গ’ শব্দটির একটি ইতিহাস আছে, আছে নিজস্ব একটি ঐতিহ্য (২৫ আগস্ট, ১৯৫৫ # পাকিস্তান গণপরিষদ)

২. এখানে বাংলায় কথা বলতে চাই। আমরা অন্য কোনো ভাষা জানি কি জানি না তাতে কিছুই যায় আসে না। যদি মনে হয় আমরা বাংলাতে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি তাহলে ইংরেজিতে কথা বলতে পারা সত্ত্বেও আমরা সবসময় বাংলাতেই কথা বলব। যদি বাংলায় কথা বলতে দেওয়া না হয় তাহলে আমরা পরিষদ থেকে বেরিয়ে যাবো। কিন্তু পরিষদে বাংলায় কথা বলতে দিতে হবে। এটাই আমাদের দাবি (২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৫ # পাকিস্তান গণপরিষদ)

৩. জনগণের খাদেম হতে হবে, বড়কর্তা হলে চলবে না । বড় চেয়ারে বসলে চলবে না, মানুষের সাথে মিশতে হবে (৩ জানুয়ারি - ১৯৭১ # রেসকোর্স ময়দান, ঢাকা)

৪. বাঙালিরা বহু রক্ত দিয়েছে। ১৯৫২ সাল থেকে রক্ত দেয়া শুরু হয়েছে। সে রক্ত আজো শেষ হয়নি। কবে শেষ হবে জানি না। আজ শহীদ দিবসে শপথ নিতে হবে, যে পর্যন্ত ৭ কোটি মানুষ তাদের অধিকার আদায় করতে না পারবে, সে পর্যন্ত বাংলার মা বোনেরা, বাংলার ভাইয়েরা আর শহীদ হবে না, গাজী হবে (২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ # কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার)

৫. প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।... এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম (৭ মার্চ ১৯৭১ # রেসকোর্স ময়দান)

৬. ৭ কোটি মানুষের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে। আপনাদের মনে রাখা দরকার নীতির সঙ্গে আপস হয় না। যদিও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ফয়সালা করতে চাই (২৩ মার্চ ১৯৭১ # বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে)

৭. ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ হতে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা যে যেখানেই থাকুন এবং যার যা কিছু আছে তা দিয়ে শেষ পর্যন্ত দখলদার সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করুন। বাংলাদেশের মাটি থেকে পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর শেষ সৈনিকটি বিতাড়িত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের এ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’ (২৫ মার্চ ১৯৭১ # তারবার্তা)

৮. আমি কারাগারে বন্দি ছিলাম। ফাঁসিকাষ্ঠে যাবার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম, আমার বাঙালিদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না (১০ জানুয়ারি, ১৯৭২)

৯. আমি বাঙ্গালি ! আমি মানুষ ! আমি মুসলমান ! একবার মরে, দুইবার মরে না : বঙ্গবন্ধু (১০ জানুয়ারি, ১৯৭২)

১০. কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন ৭ কোটি বাঙালির হে বঙ্গজননী রেখেছো বাঙালি করে, মানুষ করোনি। কবিগুরুর কথা মিথ্যা প্রমাণ হয়ে গেছে। আমার বাঙালি আজ মানুষ, আমার বাঙালি আজ দেখিয়ে দিয়েছে দুনিয়ার ইতিহাসে স্বাধীনতা সংগ্রামে এতলোক আত্মাহুতি এতলোক জান দেয় নাই। (১০ জানুয়ারি, ১৯৭২)

১১. পঁচিশ বছর পাকিস্তানিরা বাংলাদেশ শাসন কিংবা শোষণ করতে পারতো না। যদি বাংলাদেশের একদল লোক পাকিস্তানিদের সাথে হাত না মেলাতো। (স্বাধীনতার পর)

১১. আমাদের চাষীরা হল সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে। ( এপ্রিল ১৯৭২)
১২. সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুসলমান তার ধর্মকর্ম করবে। হিন্দু তার ধর্মকর্ম করবে। বৌদ্ধ তার ধর্মকর্ম করবে। কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না। কিন্তু ইসলামের নামে আর বাংলাদেশের মানুষকে লুট করে খেতে দেওয়া হবে না।( এপ্রিল ১৯৭৩)
১৩. পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষার ব্যবস্থা করেছি। কেউ যদি বলে গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার নাই, আমি বলব সাড়ে সাত কোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যদি গুটিকয়েক লোকের অধিকার হরণ করতে হয়, তা করতেই হবে। (এপ্রিল ১৯৭৩)
১৪. আমরা গণতন্ত্র চাই, কিন্তু উচ্ছৃঙ্খলা চাই না, কারও বিরুদ্ধে ঘৃণা সৃষ্টি করতেও চাই না। যে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আমার দেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে, এখানে বসে কেউ যদি তার বীজ বপন করতে চান তাহলে তা কি আপনারা সহ্য করবেন? ( মার্চ ১৯৭৪)

১৫. আমার দেশ স্বাধীন দেশ। ভারত হোক, আমেরিকা হোক, রাশিয়া হোক, গ্রেট ব্রিটেন হোক, কারো এমন শক্তি নাই যে, আমি যতক্ষণ বেঁচে আছি, ততক্ষণ আমার দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে।( মার্চ ১৯৭৩)
১৬. ‘অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সাথে কোনোদিন একসাথে হয়ে দেশের কাজে নামতে নেই। তাতে দেশসেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়।

১৭. এ প্রধানমন্ত্রীত্ব আমার কাছে কাঁটা বলে মনে হয়। আমি যদি বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে না পারি, আমি যদি দেখি বাংলার মানুষ দুঃখী, আর যদি দেখি বাংলার মানুষ পেট ভরে খায় নাই, তাহলে আমি শান্তিতে মরতে পারবো না । ( জুলাই ১৯৭৪)

১৮. ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। বিদেশ থেকে ভিক্ষা করে এনে দেশকে গড়া যাবে না। দেশের মধ্যেই পয়সা করতে হবে।

১৯. আমি আমার জন্মদিনের উৎসব পালন করি না। এই দু:খিনী বাংলায় আমার জন্মদিনই-বা কি আর মৃত্যুদিনই-বা কি?

২০. ব্ল্যাকমার্কেটিং কারা করে? যাদের পেটের মধ্যে দুই কলম বিদ্যা রয়েছে তারাই ব্ল্যাকমার্কেটিং করে। স্মাগলিং কারা করে? যারা বেশি লেখাপড়া করেছে তারাই করে। হাইজাকিং কারা করে? যারা বেশি লেখাপড়া শিখছে তারাই করে। ইন্টারন্যাশনাল স্মাগলিং তারাই করে। বিদেশে টাকা রাখে তারাই। আমরা যারা শিক্ষিত, আমরা যারা বুদ্ধিমান, ওষুধের মধ্যে ভেজাল দিয়ে বিষাক্ত করে মানুষকে খাওয়াই তারাই। নিশ্চয়ই গ্রামের লোক এসব পারে না, নিশ্চয়ই আমার কৃষক ভাইরা পারে না। নিশ্চয়ই আমার শ্রমিক ভাইরা পারে না।( জুলাই ১৯৭৫)

মন্তব্য করুন

daraz
  • এক্সক্লুসিভ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh