• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

‘ফেসবুক-ইউটিউবের জনপ্রিয়তা আসল নয়’

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৩ জুলাই ২০১৮, ১১:৩২
ছবি: সংগৃহীত

তরুণ প্রজন্মের সঙ্গীতশিল্পীদের জন্য ২৫টি পরামর্শ দিয়েছেন দেশের নন্দিত সঙ্গীতশিল্পী কনকচাঁপা। নিজের ফেসবুকে এই সঙ্গীতশিল্পী লিখেছেন, আপনারা নানা সময়ে আমার কাছে কিছু উপদেশ শুনতে চেয়েছেন। আমি আসলে উপদেশ দেয়ার মতো কেউ নই। তবে দীর্ঘ সময় গানের সাথে কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু কথা বলা যেতেই পারে।

পরামর্শে কনকচাঁপা লিখেন, *আপনার অবশ্যই গান ধারণ করার মতো কণ্ঠ থাকতে হবে। *একজন সম্যক জ্ঞান সম্পন্ন গানের ওস্তাদের কাছে গান শিখতে হবে ধৈর্যের সাথে নিয়মাবলী মেনে। *বাংলা ভাষার উচ্চারণ, বানান, প্রক্ষেপণ পরিষ্কার হওয়ার মতো শিক্ষা থাকতে হবে বা সেই শিক্ষা নিতে হবে। ভেবে দেখেন আমাদের দেশের নামকরা শিল্পীরা কখনই তার গানে গ্রামের ভাষা টেনে আনেন না। *তাল বুঝতে হবে। তালকানা কখনই গাইতে পারে না। * অসীম ধৈর্যের শক্তি নিয়ে এ পথে নামতে হবে।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : আট বছর পর অভিষেক-ঐশ্বরিয়া!
--------------------------------------------------------

* বুঝতে হবে শিল্পীর পেশা অন্য পেশার চাইতে আলাদা। পয়সার হিসাব না করে তালের লয় মাত্রা বুঝলে বেশি উপকার হবে। * শিল্পীকে নিজের সাথে, নিজের পেশার সাথে অসম্ভব সৎ থাকতে হবে। * কোনও রকম আপত্তি ছাড়াই রেয়াজ করতে হবে। * শরীরের সুস্থতা অনেক বড় করে দেখতে হবে। * বিনোদনকারী, গায়ক, কণ্ঠশিল্পী, শিল্পী এগুলো একেকটা ক্যাটাগরি। আপনি কোনটা হবেন তার ফোকাস আপনাকেই করতে হবে।

*সহজে নাম করার জন্য ছলচাতুরী মার্কা বুদ্ধি বের না করে সহজ পথে গলা সেধে ভালো করে শিখে এই পথে নামলেই বরং শিল্পী বা কণ্ঠশিল্পী হওয়ার কাজ সহজ হয়। শিল্পীদের আসলে ছলচাতুরী মানায় না। * সহজে স্টার হলে একদিন ঠিক অতি সহজেই মানুষ ভুলে যায়। পাবলিক দারুণ কঠিন চিজ বটে। তারা ভালো মন্দ খুব ভালো চেনেন। *গানের বিনিময়ে পয়সার জন্য ছুটবেন না। ভালো করে গান শিখুন, অধ্যবসায় করে গান ধারণ করুন, পয়সা একসময় আপনার পেছনে ছুটবে।

*নিজের গান নিয়ে মানুষের ইনবক্সে ইনবক্সে দৌড়াবেন না। এতে মানুষ হয়তো ভালো কমেন্ট করে কিন্তু আসলে বিরক্ত হয়। জোর করে গান শোনানো যায় না বরং এতে শিল্পীকে ভিক্ষুকের মতো দেখায়। *সময় নিয়ে ভালো কথার ভালো সুরের ভালো গান তৈরি করুন। আজ না হোক কাল সেই গান মানুষ শুনবেই। ‘গান খাওয়ার’ উদ্দেশ্য নিয়ে গান তৈরি করবেন না। গান আসলেই মন, কান, হৃদয় শোনে। গান হোঁচট বা উষ্টা খাওয়ার জিনিস নয়।

*নাম করার জন্য যেখানে সেখানে গান গাইবেন না। গান আপনার সম্পত্তি নয়। স্রষ্টার দেয়া আমানত। সেই আমানত আপনি ভুল জায়গায় ব্যবহার করবেন না। *সম্মানী ছাড়া কোথাও গাইবেন না। শ্রোতাদের সামনে নিজেকে খেলো করবেন না। *গান খুব অভিমানী। গানের সাথে বাজে অনৈতিক কিছু মেলাবেন, গান আপনাকে ছেড়ে দূরে চলে যাবে। *নিজের পেশাকে সম্মান করুন। জেনে রাখবেন সবাই গাইতে চান, সেই ক্ষমতা পান খুব অল্পসংখ্যক মানুষ। এক কোটি মানুষের মাঝে শিল্পী হন আসলে একজন!

*ফেসবুকে গান ভাইরাল করার চেষ্টা না করে গান আকাশে বাতাসে ছড়ানোর চেষ্টা করুন। ফেসবুক, ইউটিউবের জনপ্রিয়তা আসল জনপ্রিয়তা নয়। যখন দেখবেন পানের দোকান, পাড়ার অনুষ্ঠানে আপনার গান বাজছে তখন বুঝবেন আপনার গান সত্যিকারের ছড়িয়ে গেছে। নিজকে মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে লাভ? *স্পষ্ট উচ্চারণ স্পষ্ট সুরে গান করুন। গানের কথা গানের মাধ্যমে শ্রোতাদের কানে পৌঁছে দেয়া আপনার দায়িত্ব। গানের কথা তো আর লিখে লিখে শ্রোতাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে পারবেন না।

*শিল্পীকে খুব ভালো মানুষ হতে হয়। শিল্পীদের ভুলভাল নিয়ে সাধারণ মানুষরা খুবই বিচলিত থাকেন। তারা শিল্পীদের ভালো মানুষ হিসেবে দেখতে ভালবাসেন। এই ভালবাসার মূল্য অনেক। তাই ভুল কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। সামান্য ভুলে আকাশচুম্বী জনপ্রিয় স্টার এর নামধাম ধুলায় মিশে যাওয়ার উদাহরণ হাজার হাজার আছে।

*গানকে রাজমুকুট না পরাতে পারেন কিন্তু তাই বলে তাকে স্যান্ডো গেঞ্জি পরাবেন না। গানের উচ্চতায় নিজেকে নিয়ে যান। গানকে নিচে নামাবেন না। *ওস্তাদকে বাবা-মায়ের মতো সম্মান করুন। তাদের শিক্ষা এবং দোয়া কাজে লাগান। তাদের শিখিয়ে দেয়া নিয়মাবলী অক্ষরে অক্ষরে পালন করুন।

*ভালো করে নিজে শুনে দেখেন আপনার কণ্ঠে মানুষের মনে প্রশান্তি আনার মতো সুর আছে কিনা! সত্যি সত্যিই নিজের কণ্ঠের প্রতি সুবিচার করুন। সেরকম কণ্ঠ না হলে গান গেয়ে মানুষকে জ্বালাবেন না! গান গাইতেই হবে এমন কোনও কথা নেই। ভালো শ্রোতাদেরও অনেক সম্মান আছে। সবার জন্য শুভ কামনা। সবার ভালো ইচ্ছাগুলো পূর্ণ হোক। আমার কোনও কথায় কষ্ট পেলে ক্ষমা করবেন প্লিজ।

আরও পড়ুন :

পিআর/এ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh