• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সিংহের সঙ্গে লড়াই করেছি: ড্যানি সিডাক (ভিডিও)

এ এইচ মুরাদ

  ২৩ জুন ২০১৮, ১৯:০৮

বুকভরা সাহস ও ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। মার্শাল আর্টে গোল্ড মেডেল পাওয়ার জন্যই হয়তো অ্যাকশন ছবিতে পরিচালক-প্রযোজকদের অন্যতম আস্থা অর্জন করে নেন। তার অ্যাকশন দৃশ্য দেখার জন্য সিনেমা হলে হতো দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। যার অভিনীত বেশিরভাগ ছবি ছিল ব্যবসা সফল।

সিনেমার কোনও দৃশ্য বাস্তবসম্মতভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য তিনি কখনও সিংহের, কখনও বাঘ, আবার কখনও তিন মণ ওজনের ভয়ংকর অজগর সাপের সঙ্গে লড়াই করেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অভিনয়ের জন্যই হয়তো তিনি অল্প সময়ের দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন।

পাঠক এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম, তিনি হলেন দেশীয় ছবির সবচেয়ে সাহসী নায়ক ড্যানি সিডাক। সম্প্রতি ড্যানি সিডাক মুখোমুখি হয়েছিলেন আরটিভি অনলাইনের। রাজধানীর প্রিয়াঙ্কা শুটিং বাড়িতে ‘প্রতিশোধের আগুন’ ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে এ আলাপচারিতায় অংশ নেন ড্যানি সিডাক। এ সময় ক্যারিয়ার, চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন তিনি।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : ৩০৮ নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সঞ্জয়ের!
--------------------------------------------------------

‘২০০০ সালের পর থেকে দেশীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অশ্লীলতা শুরু হয়। এ সময় পরিবার নিয়ে দেখার ছবি কমতে থাকে। চলচ্চিত্রে সবচেয়ে বেশি যে শ্রেণীর দর্শক হলে গিয়ে পরিবারসহ ছবি দেখতেন, তারাই অশ্লীল ছবির প্রকটে হলবিমুখ হতে থাকেন। আজও সেই দর্শকদের হলমুখী করা সম্ভব হয়নি। তাদের হলে আনার জন্য আরও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। ভালো ছবির মাধ্যমেই আগেই সেই দর্শকদের হলে ফেরানো সম্ভব।’ এমনটাই মনে করেন ‘বাঘা-বাঘিনী’ ছবির এই নায়ক।

‘সুপারম্যান’ খ্যাত এই নায়ক মনে করেন, দেশীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখনও প্রযুক্তির দিক থেকে পিছিয়ে আছে। আর নকল ছবিও বন্ধ করা দরকার। কারণ এখন বিদেশে ছবি মুক্তি দিয়েও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়া যাচ্ছে। নকল ছবি দিয়ে দেশের বাইরের বাজার ধরা সম্ভব নয়। তাইতো নির্মাতা-প্রযোজকদের প্রতি তিনি মৌলিক ছবি তৈরির আহ্বান করেন।

‘বাঘা-বাঘিনী’ ছবিতে সিংহের সঙ্গে লড়াই করেছেন ড্যানি সিডাক। ছবির শুটিং করতে ভারতে যান তিনি। সেখানকার একটি সার্কাস দলের কাছে গিয়ে সিংহের সঙ্গে লড়াইয়ের কথা বলেন। কিন্তু সেই সার্কাস দলের কেউই ড্যানিকে শুটিংয়ের অনুমতি দিতে চাইছিলেন না। শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনের বন্ড সই করে শুটিংয়ের অনুমতি পান। কিন্তু প্রথমদিনেই ঘটে অঘটন। ড্যানি বলছিলেন, আসলে সিংহের সঙ্গে যুদ্ধ করে জেতা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি বাংলাদেশি বলেই হয়তো এই সাহস দেখাতে পেরেছি। ৯ মাস যুদ্ধ করার পর আমরা স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে পাই। সেই রক্ত আমার শরীরে প্রভাবিত। প্রথম যেদিন আমাকে সিংহের খাঁচার মধ্যে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেয়া হয়, সেদিন অল্পের জন্য প্রাণ নিয়ে ফিরে এসেছি। একের পর এক আক্রমণে আমাকে দুর্বল করে দেয়। শেষ পর্যন্ত ওই যাত্রায় বেঁচে যাই। পরদিন আবারও আমি শুটিং করতে চাই। কিন্তু কোনওভাবেই তারা রাজি হচ্ছিলেন না। আমিও নাছোড়বান্দা। বুকভরা সাহস নিয়ে কাজটি করলাম। দেশে ফিরে দেখি অন্যরকম ব্যাপার। এই ঘটনা সেসময় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হয়। এয়ারপোর্টে আমাকে রিসিভ করার জন্য পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টুসহ আরও অনেকেই এসেছিলেন। সবাই আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। সেই দৃশ্য এখনও আমার চোখে ভাসে। সে বছর ঈদেই ছবিটি মুক্তি পায় এবং তুমুল ব্যবসা সফল হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘বনের রাজা টারজান’ ছবিতেও আমি বাঘের সঙ্গে লড়াই করেছি। ছবির শুটিংয়ের জন্য প্রযোজক তিন মণ ওজনের একটি সাপ কিনে আনেন। সাপকে গাড়ি থেকে নামানোর পরই কখনও সে প্লাস্টিকের মোড়া কামড়ে ধরে আবার কখনও ক্যামেরার বাক্সে কামড় দেয়। শুটিংস্পটে হৈ-হুল্লোড় পড়ে গেলো। ক্যামেরাম্যান আমাকে বললো- সাপের সঙ্গে তোমার শুটিং করার দরকার নেই। এটা তোমার জীবনের জন্য রিস্ক হয়ে যেতে পারে। তার পরেও আমি শুটিং করলাম। সাপটা আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আসলে সাপের গায়ে কী শক্তি, তা না ধরলে বোঝা যাবে না। লোহার মতো শক্ত। আমি মার্শাল আর্টের কসরত জানার ফলে নিজেকে সামলে নিতে পারি।

ড্যানি সিডাক চান উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সামনে আরও এধরনের ছবি বানাতে। এদিকে ড্যানি সিডাক পরিচালিত ‘কাঁসার থালা রূপালী চাঁদ’ ছবিটির কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবিটি আগামী ঈদ-উল-ফিতরে মুক্তির পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।

বিভিন্ন সময়ে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন ড্যানি সিডাক। আগামীতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রতিটি মুহূর্ত চলচ্চিত্রের উন্নয়নের কথা চিন্তা করি। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সঠিক মানুষের নেতৃত্ব দরকার। আমি চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি। পরিচালক সমিতিতে আমি নির্বাচিত ছিলাম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে। আর শিল্পী সমিতিতেও পর পর তিনবার সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত ছিলাম। জয়েন সেক্রেটারিও ছিলাম। সামনে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতির নির্বাচন আছে। সবগুলো সংগঠনের নির্বাচনে আমি অংশ নিতে চাই। আমি প্রথমে শিল্পী ছিলাম, তারপর পরিচালক হয়েছি। এরপর প্রযোজক হয়েছি। আমি কোনও অন্যায়কে কখনও প্রশ্রয় দেইনি। আমি নির্বাচিত হলে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কাজ করে যাব।

ড্যানি সিডাকের সাক্ষাৎকার বিস্তারিত দেখুন নিচের লিংকে

আরও পড়ুন :

এম/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ধর্ম-কর্মে সময় কাটছে চিত্রনায়ক মেহেদির
ছবি নিয়ে রাজনীতি, কান্নায় ভেঙে পড়লেন নায়ক
মোস্তাফিজদের কাছে হেরে যে ব্যাখ্যা কলকাতা অধিনায়কের
শাহিনের হুঙ্কার ‘আমার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবেন না’   
X
Fresh