• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নৃত্য-মঞ্চে পরিচয়, নাচ নিয়েই সংসার

পাভেল রহমান

  ২৭ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:৩১
ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের ছেলে অমিত চৌধুরী ও কলকাতার মেয়ে সুইটি দাশ। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নৃত্যকলা’ বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন সুইটি। ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পরিচয় তাদের। সেই বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই পরবর্তীতে একসঙ্গে ঘর বাঁধেন। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করছেন অমিত ও সুইটি।

এই দম্পতি এখন ঢাকার চলতি প্রজন্মের মেধাবী দুই নৃত্যশিল্পী। গত ডিসেম্বরে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসবে নৃত্য পরিবেশন করে প্রশংসিত হন এই দম্পতি। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন মঞ্চে নিয়মিত নৃত্য পরিবেশনায় তাদের মেধার সাক্ষর রেখে চলেছেন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও আমন্ত্রিত হয়ে নৃত্য পরিবেশন করছেন। তুলে ধরছেন বাংলাদেশের পতাকা।

অমিত চৌধুরী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। অন্যদিকে সুইটি বনানীতে ‘সাধনা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে নৃত্য শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : ছবিতে নাবিলার জমকালো বিয়ে
--------------------------------------------------------

আগামী ২৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস। এই দিনটিকে ঘিরে আরটিভি অনলাইনের সঙ্গে আড্ডা হয় অমিত ও সুইটির। এসময় কলকাতার মেয়ে সুইটি বলেন, ‘রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্যকলা নিয়ে আমরা দুজনই পড়ালেখা করেছি। কিন্তু ভিন্ন বিষয়ে পড়ার কারণে আমাদের ব্যবহারিক ক্লাস আলাদা হতো। তবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমরা অসংখ্য অনুষ্ঠানে একসঙ্গে নাচ করেছি। একসময় আমাদের বন্ধুত্বটা হয়ে গেলো। পরে দেখলাম দুজনই একই রকম স্বপ্ন নিয়ে নিজেদের তৈরি করছি। পরবর্তীতে আমরা একসঙ্গে বাকি জীবন কাটানোর সিদ্ধান্তটা নেই। নাচের মাধ্যমেই আমাদের পরিচয়। এখন নাচ নিয়েই আমাদের সংসার।’

এই দুজনের বর্তমান ব্যস্ততা প্রসঙ্গে অমিত বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার পাশাপাশি সাধনা’তেও নাচের ক্লাস নিই। আর সুইটি এখন সাধনা’তে ড্যান্স ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করছে। মৌলভীবাজারের ঘোড়ামারা গ্রামের মণিপুরি থিয়েটার ও সাধনা যৌথভাবে ‘ধ্রুমেল’ নামের নাচের একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে। সেখানে গ্রামের মণিপুরি ছেলেমেয়েদের নাচের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মণিপুরি গানকে কিভাবে নাচের মুদ্রায় মঞ্চে উপস্থাপন করা যায়। সেটা নিয়ে কাজ করছে। সেখানে সুইটি প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছে।’

ভারতে মমতা শঙ্করের কাছে নাচ শেখা শুরু করেন সুইটি দাশ। পরবর্তীতে মণিপুরি নাচের প্রশিক্ষণ নেন কলাবতী দেবীর কাছে। এরপর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্যকলায় উচ্চতর পড়ালেখা করেন। বর্তমানে মণিপুরি নৃত্য নিয়েই চর্চা করছেন সুইটি দাশ।

বাংলাদেশের সমকালীন নৃত্যচর্চা নিয়ে সুইটি দাশ বলেন, ‘আমি বিগত ৫ বছর ধরে বাংলাদেশে বসবাস করছি। আমার মনে হয়, এখানকার ছেলেমেয়েরা এখন অনেক বেশি নাচ নিয়ে ভাবছে। তরুণদের অনেকেই নাচ শেখায় আগ্রহী হচ্ছে। তরুণদের মধ্যে সম্ভাবনাও অনেক বেশি। তাদের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নৃতচর্চা বিশ্বে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত হবে।’

নিজের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে সুইটি বলেন, ‘আমি যেহেতু মণিপুরি নাচ নিয়ে চর্চা করছি। আমার স্বপ্ন বাংলাদেশের মণিপুরি নৃত্য আঙ্গিক আন্তর্জাতিকভাবে সম্মান বয়ে আনবে। কিছুদিন আগে আমরা ভারতের বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসব ‘খাজুরাও উৎসব’ এ বাংলাদেশের মণিপুরি নাচ নিয়ে অংশ নিয়েছি। সবাই খুবই প্রশংসা করেছেন। এছাড়া দিল্লীর ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার আমন্ত্রণে আমরা মণিপুরি নৃত্য পরিবেশন করেছি।’

এবারের নৃত্য দিবস নিয়ে সুইটি দাশ বলেন, নৃত্যই তো আমার জীবনের অংশ। ফলে নৃত্য দিবস আমার কাছে জন্মদিনের চাইতেও বেশি আনন্দের।

অন্যদিকে অমিত চৌধুরী বলেন, ‘নাচ শেখানো নিয়ে এখন ব্যস্ততা বেশি। তবে একজন শিল্পী হয়ে নিজের পারফরমেন্স টিকিয়ে রাখাটা মূল পরিকল্পনা হওয়া উচিৎ, বিশেষ করে আমরা যারা ক্লাসিক্যাল নাচ করি। আমি মূলত ভরনাট্যম চর্চা করি। এখনো ভরতনাট্যম তালিম নিচ্ছি। এছাড়া আমেরিকার ডোনাল্ড বার্ড এর কাছে ‘ছৌ’ নাচ শিখেছি। এখন মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা নিয়েই ব্যস্ত। সেখানে বিভিন্ন কোর্সে মুভমেন্ট এর কাজ করছি। সামনে সাধনা’র একটা নৃত্য প্রযোজনার কাজ চলছে। এই বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’

আরও পড়ুন :

পিআর/এম

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh