• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

'ব্যাক বেঞ্চাররাই গল্পের নায়ক'

এ এইচ মুরাদ, আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৯ অক্টোবর ২০১৬, ১০:৪২

আমাদের দেশের বেশিরভাগ হিরো কন্ডিশননির্ভর। বাস্তব জীবনের সঙ্গে তাদের কোনো মিল খুঁজে পাবেন না। আমার গল্পের নায়ক দশবার ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ফেল করা মানুষটি। বারবার সে ফেল করার পর তার ওপরে যে নির্যাতন হয় সেটাও কিন্তু উপভোগ করার মতো! একটা সময় যখন সে পাশ করল তাকে কেউ জিজ্ঞেস করেনা যে পাশ করেছে কিনা। মারজুক রাসেল তার মামাকে যখন বলে আমি পাশ করেছি কিনা জানতে চাইছেন না কেনো। তার প্রশ্ন করার ধরণটাও উপভোগ করার মতো কমেডি।

যে কোনো মানুষই হিরো হতে পারেন। তার চরিত্র বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে। যখন ‘এফডিসি’ ধারাবাহিক নাটক তৈরি করি। যে মানুষটি ৫০বার চেষ্টা করেও এফডিসির ভেতরে যাবার সুযোগ পাননি। তিনিও আমার গল্পের নায়ক। ক্যারামে বারবার হেরে যাওয়া কিংবা ভূগোল নাটকে পথ ভুল করা মানুষটিও হিরো।

নিজের লেখা ও পরিচালিত কবি (পরিচালনা ফারুকী), খসরু প্লাস ময়না, ভূগোল, বাইসাইকেল, এফডিসি, অফ দ্য ফুটবল ফর দ্য ফুটবল বাই দ্য ফুটবল গল্পের নায়ক ও প্রেক্ষাপটের ব্যাপারে আরটিভি অনলাইনকে বলছিলেন নির্মাতা, নাট্যকার ও অভিনেতা কচি খন্দকার।

সারাজীবন পেছনের সারির মানুষ ছিলাম। তাইতো আমার গল্পের নায়করাও ব্যাক বেঞ্চার। 'কবি' আমার জীবনের গল্প নিয়েই লেখা। নাটকটি তৈরি করেছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

কুষ্টিয়া শহরে একজন কবি ছিলেন যাকে আমরা খুব নির্যাতন করতাম। এতে অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসান। আর আমার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেতা মারজুক রাসেল। খুব সাধারণ ঘটনা প্রতিনিয়তই হচ্ছে এমন গল্প দর্শকদের কাছে এত জনপ্রিয় হতে পারে ওই নাটকটি তা প্রমাণ করেছে। জীবনবোধ ও পারিপার্শ্বিক ঘটনাকে উপজীব্য করেই বেশিরভাগ নাটক তৈরি করেছি।

নির্মাতাদের সম্পর্কে অভিযোগ শোনা যায়, তারা একই ধরণের নাটক তৈরি করছেন। কমেডির মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে।

কচি মনে করেন, 'রসবোধ ভিন্ন একটি বিষয়। একজন রসবোধহীন মানুষ যদি কমেডি নাটক তৈরি করে তবে তো রসের যে ব্যাপার আছে তাতে ভাটা পড়বে। আমাদের দেশের মোশাররফ করিম অথবা জাহিদ হাসানের রসবোধের যে স্তর রয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের প্রোপার ট্রিটমেন্ট দিতে পারছিনা। আমার নাটকের অভিনেতা যখন অন্য পরিচালকের নাটকে কাজ করেছেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে সেগুলো হিট হয়েছে। জনপ্রিয়তা আর পপুলারিটি এক না।'

একসময় খণ্ড নাটক পরিচালনা করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। এরপর ধারাবাহিক নাটক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কচি।

তিনি বলেন, 'খণ্ড নাটক তৈরির সময় একটা পর্যায়ে মনে হল চরিত্রগুলো নিয়ে বিস্তর গল্প বলা হচ্ছে না। ধারাবাহিক নাটকে চরিত্র নিয়ে কাজ করার সুযোগ বেশি থাকে। তাই এদিকে বেশি মনোযোগ দেয়া। গেলো ঈদে জেলাস নামে খণ্ড নাটক প্রচার হয়েছে। ভালো সাড়াও পেয়েছি। ভাবছি এখন থেকে বিরতি দিয়ে খণ্ড নাটক তৈরি করবো। এ ধরণের নাটকের বিরাট একদল দর্শক আছে।'

সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল কুষ্টিয়ায় বেড়ে ওঠা এ অভিনেতা শিশুকাল থেকেই মঞ্চ নাটকে জড়িয়ে পড়েন।

১৮০০ সালে স্থাপিত কুষ্টিয়ায় পরিমল থিয়েটার। বাংলা নাটকের দিকপাল বলে পরিচিত শিশির ভাদুরি, অহেন্দ্র চৌধুরী, গিরীশ ঘোষ এ থিয়েটারে সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। লালন শাহ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মীর মশাররফ হোসেনের এ অঞ্চলের বসবাস করার জন্যই হয়তো নাটকের প্রতি ভালোবাসার তৈরি হয় কচি খন্দকারের ।

ছোট পর্দার ব্যস্ত এ নির্মাতা ও অভিনেতা চলচ্চিত্র তৈরি করবেন বলে আরটিভি অনলাইনকে জানালেন। ছবির নাম 'বঙ্গবাহাদুর'।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কচি বলেন, 'দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল চলচ্চিত্র তৈরি করার। প্রেক্ষাপট খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বঙ্গবাহাদুর এখনকার সময়ের শাশ্বত গল্প। মানুষের একদেশ থেকে অন্য দেশে যেতে পাসপোর্ট ভিসা লাগে। কিন্তু পশুর তো কোনো সীমারেখা থাকতে পারেনা। কাজটি শেষ করার জন্য ভালো বাজেট দরকার। একটা হাতিকে পোষ মানিয়ে তাকে দিয়ে অভিনয় করানো কঠিন বিষয়। আশা করছি ভালো চলচ্চিত্রই দর্শকদের উপহার দিতে পারবো।'

২০০০ সালের দিকে মঞ্চ নাটকের দাপুটে এ অভিনেতা প্রথম 'আয়নামহল' নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু করেন।

এইচএম/এস/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh