৩ বছরে ১০০ নাটকের নায়ক
পুরো নাম ইরফান সাজ্জাদ। দেশীয় মিডিয়ার পরিচিত মুখ তিনি। টেলিভিশনের ব্যস্ত এ অভিনেতা কাজ করছেন বড় পর্দায়ও। ২০১৩ সালে ‘ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম দি আলটিমেট ম্যান’ প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে মিডিয়া যাত্রা শুরু করেন। লাখ লাখ প্রতিযোগীকে পাশ কাটিয়ে বিজয়ের মুকুট মাথায় তোলেন এ তরুণ।
এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে কাজ করে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। শুরুর দিকে বেশিরভাগ নাটকে সিনিয়র অভিনেত্রীরা কাজ করেছেন তার বিপরীতে। তাদের মধ্যে ছিলেন সাদিয়া ইসলাম মৌ, রিচি সোলায়মান, বিজরী বরকত উল্লাহ ও তিশা। ‘ভালোবাসার শেষাংশ’ তার অভিনীত প্রথম টেলিছবি। এতে জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিশার সঙ্গে জুটি হন সাজ্জাদ।
এ ব্যাপারে ইরফান সাজ্জাদ আরটিভি অনলাইনকে বললেন, তাদের অভিনয় দেখে বড় হয়েছি। তারা ছিল আমার কাছে স্বপ্নের নায়িকা। তাদের সঙ্গে মুখোমুখি কাজের অভিজ্ঞতা সত্যিই বলে বোঝানো যাবে না। অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। সবসময় ভালো ছাত্রের মতো শেখার চেষ্টা করেছি। মনের মধ্যে একটা সংকল্প ছিল- উনারা বড় অভিনেত্রী, সুতরাং আমাকেও ভালো অভিনয় করতে হবে।
তিনি বললেন, জানেন- কোআর্টিস্ট যদি ভালো হন, তখন নিজেরও দায়িত্ব বেড়ে যায়। কারণ আমি যদি উনাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজটা করতে না পারি, তাহলে পুরোটাই বরবাদ হয়ে যাবে। তাইতো, যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতাম তখন আমার বিপরীতে কে আছেন তা ভাবতাম না। জাস্ট একটা চরিত্র মনে করতাম।
মিডিয়াতে পথচলার বয়স তিন বছর। এরই মধ্যে ১০০-এর বেশি নাটকে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ। অভিনয়ের ক্ষেত্রে পছন্দের তালিকায় খণ্ড নাটক। এর মধ্যে নিজের মনের মতো কয়টি নাটক- ‘ভালোবাসার শেষাংশ’, ‘সরীসৃপ’, ‘যদি ভালো না লাগে দিও না তো মন-২’, ‘কখনো ফিরে এসো না’, ‘চট্টলা এক্সপ্রেস’, ‘মেইড ইন চিটাগং’সহ প্রায় ২০টির নাম ও প্রেক্ষাপট বলে হাঁপিয়ে ওঠেন সাজ্জাদ। আরো নাকি বেশ কয়টি বাকিই আছে। সত্যি একজন ভালো শিল্পীর গুণ তো এটাই হওয়া দরকার, যে তার সব কাজ হৃদয়ে ধারণ করবেন।
হালের মডেল-অভিনেতাদের মধ্যে চলচ্চিত্রে কাজের জন্য এক ধরনের তাড়াহুড়ো লক্ষ্য করা যায়। অথচ সাজ্জাদ একটু অন্যরকম। তিনি নায়ক হয়ে হারিয়ে যেতে চান না। অভিনেতা হয়ে বেঁচে থাকতে চান দর্শক হৃদয়ে। তিনি মনে করেন- শিল্পীর কোনোদিন মৃত্যু হয় না। শিল্পী তার শিল্পকলার মধ্যেই বেঁচে থাকেন।
তাই বলে চলচ্চিত্রাঙ্গনে যে খুব একটা পিছিয়ে আছেন তিনি, তা বলা যায় না। কারণ এরই মধ্যে তার অভিনীত ‘ইউটার্ন’ ও ‘মন জানে না মনের ঠিকানা’ ছবি দু’টো মুক্তি পেয়েছে। তবে ইরফান সাজ্জাদকে যারা সত্যিই বড় পর্দায় নতুনভাবে আবিষ্কার করতে চান, তাদের দেখতে হবে ‘ভালোবাসা এমনই হয়’ ছবিটি। এতে তিনি জনপ্রিয় নায়িকা বিদ্যা সিনহা মিমের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন। চলচ্চিত্রটি এখন মুক্তির মিছিলে।
হালের এ ক্রেজ বললেন, তানিয়া আহমেদ পরিচালিত চলচ্চিত্রটির বেশিরভাগ শুটিং হয়েছে লন্ডনে। গান ও চিত্রায়ন অসাধারণ। এ ছবিতে যথেষ্ট অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছি। চেষ্টা করেছি সুন্দর অভিনয় করার। সম্পূর্ণ মৌলিক গল্পের ছবি। আশা করি সবার ভালো লাগবে। কতোটা পেরেছি তা দর্শকই বিচার করবেন।
সুদর্শন এ অভিনেতার বিজ্ঞাপনে উপস্থিতি কিছুটা কম। মডেল হিসেবে কাজ করেছেন কেয়া, প্রাণ ফ্রুটো, রাঁধুনি রেডি মিক্সের বিজ্ঞাপনে। তার মতে, ভালো প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন হলেই শুধুমাত্র কাজ করবেন। একজন অভিনেতার দায়িত্ব শুধু অভিনয় করাই নয়, তার কাজ যারা পছন্দ করেন কিংবা যে পণ্যটা তিনি মানুষকে কেনার জন্য বলবেন তার মান নিয়েও ভাবা দরকার।
মানসম্মত কাজের মধ্যে দিয়ে দর্শকের হৃদয়ে বেঁচে থাকতে চান ইরফান সাজ্জাদ।
অবসরে তার বেশিরভাগ সময় কাটে ঘুমিয়ে। এর মাধ্যমে নাকি নিজেকে পরবর্তী শুটিংয়ের জন্য চাঙা করে নেন। ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন খুব। পরিবারের মানুষদের সঙ্গেই কাটে সেরা সময়।
মিডিয়াতে সাজ্জাদের কয়েকজন কাছের বন্ধু রয়েছে। অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ, অভিনেতা মিশু সাব্বির তাদের অন্যতম। তাদের সঙ্গেও আড্ডা জমে জমপেশ।
এইচএম/ এস
মন্তব্য করুন