• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

ভিনদেশি চলচ্চিত্র : পোর লিজ

রুটি বিক্রেতা ও পুলিশের প্রেমের গল্প

এ এইচ মুরাদ

  ১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৯:৪৪

ধরন- রোমান্টিক-কমেডি

দেশ- রাশিয়া

ভাষা- রাশিয়ান

মুক্তিসাল-২০১৩

সময়- ৯০ মিনিট

পরিচালক- আলেকসে লিসোভেট

কাহিনি- এলেনা জুয়েভা, লিওনোরা পাছেনকো

অভিনয়- মারিয়া মাস্কোভা, অ্যান্টন পামপুশনি, নিয়েলে সেরেজনিকভা, আলেক সানদার দানিছেনকো, লিনা বুদনিক, ডমিত্রি লেনেকোভ।

দাদীর শেষ ইচ্ছা পূরণের লক্ষ্যে কানাডিয়ান পুলিশ জয়েসেফ সকোলোফ তার জন্মভূমি রাশিয়ার উদ্দেশে বিমানযোগে রওনা করেন। রাশিয়ায় পৌঁছে তার গ্রামের যাবার জন্য ট্রেনে উঠেন সঙ্গীতপ্রেমী মানুষটি। তার দুই সহযাত্রী তাকে মদ পানের আহ্বান করেন। প্রথমে সকোলোফ রাজি না হলেও পরে তাদের সঙ্গ দেন। সবুজে ঘেরা পথঘাট পেরিয়ে ট্রেন চলছে। ঘুম ভাঙার পর তিনি দেখলেন কেবিনে একাই পড়ে আছেন। তার সহযাত্রীর নেই সেখানে। বিস্ময়ের সঙ্গে আরো লক্ষ্য করলেন তার ব্যাগসহ সব কিছু চুরি হয়ে গেছে।

সব হারিয়ে সকোলোফ স্থানীয় পুলিশকে জানানোর জন্য ট্রেন থেকে নামেন। কিন্তু সেই ট্রেন ফেল করেন তিনি। স্থানীয় পুলিশকে জিনিসপত্র হারানোর ঘটনা জানান। পুলিশ তাকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। এরই মধ্যে তার পরিচয় হয় স্টেশনে এক রুটি বিক্রেতার সঙ্গে।

সহায় সম্বলহীন লোকটি প্রথম দর্শনেই লিজা নামের সেই মেয়েটিকে পছন্দ করেন। একটা সময় তিনি লিজার পিছু নেন। নিজের বিপদের কথা খুলে জানান তাকে। অবশেষে সকোলোফের আশ্রয় জুটে যায় দরিদ্র লিজার ছোট্ট বাড়িতে। যেখানে লিজা তার মেয়েকে নিয়ে একাই বসবাস করেন।

সাদাসিধে স্বভাবের মানুষটির সঙ্গে খুব সহজেই লিজার মেয়ের খুব ভাব জমে। ছোট্ট মেয়েটি কথা বলতে পারে না। এ নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় থাকেন মা লিজা।

সকোলোফ গ্রামের মানুষের আচার-আচরণে অবাক হন। সংস্কৃতির ফারাকই যার কারণ। মা-বাবা তার সন্তানকে মারবে বিষয়টি ওই গ্রামের খুব সাধারণ ঘটনা হলেও কানাডার এই পুলিশ কিছুতেই বিষয়টি মানতে চান না। আর রাশিয়ান ভাষা না জানায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন না তিনি। ভাষা না বোঝায় সবার সঙ্গে মিশতেও পারেন না তিনি। অপেক্ষায় থাকেন কখন লিজা আসবে। উটকো অতিথি নিয়ে অবশ্য লিজাও খুব বিব্রত।

একদিন পাশের বাড়িতে আগুন লেগেছে। চারিদিকে হৈচৈ পড়েছেন আগুন নেভানোর জন্য। ওই বাড়ির এক বৃদ্ধ নারীর চিৎকার করে বলছিলেন বাড়ির ভেতরে কেউ একজন আছেন তাকে বাঁচানোর আহ্বান করছিলেন তিনি।

আগুনের মধ্যে সকোলোফ বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়লেন কিন্তু কোনো মানুষের অস্তিত্ব পেলেন না তিনি। ঘরের মধ্যে খুঁজে পেলেন একটা ছাগল। সকোলোফ বাইরে এসে বৃদ্ধ নারীকে জানালেন, ভেতরে অনেক খোঁজাখুজির পর কিছুই পেলাম না এই ছাগল ছাড়া। ছাগলটিকে পেয়ে ওই নারী তাকে জরিয়ে চুমু খেতে লাগলেন। দৃশ্যেটি দেখে বেশ অবাক হলেন সকোলোফ! এদিকে সকোলোফের এই বিস্ময় হওয়া দেখে উপস্থিত সবাই হোহো করে হেঁসে উঠলেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লিজা-সকোলোফ একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেন। তাদের ভালোবাসার মাঝে হঠাৎ বাধা হয়ে দাঁড়ান লিজার স্বামী, যার সঙ্গে লিজার এখন আর কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি একমাত্র মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু লিজার মেয়ে তার বাবা ভীষণ ভয় পায়।

এরই মধ্যে গ্রামের মানুষের আপনজন হয়ে উঠেছেন সকোলোফ। লিজার প্রতিবেশীরাও লোকটিকে বিয়ে করার কথা জানায় তাকে। ভিন্ন সংস্কৃতি, পরিবেশ ও নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝে সকোলোফ-লিজার প্রেম পরিণয় পায় কিনা তা জানার জন্য দেখতে পারেন ‘পোর লিজ’ সিনেমাটি।

দারুণ একটি কমেডি ছবি পোর লিজ। আছে রোমান্টিকতা। গানগুলোও চমৎকার। ছোট্ট সুন্দর গ্রামটি পরিচালক দারুণভাবে দেখানো চেষ্টা করেছেন।

সিনেমাটি দেখার সময় দর্শকের হয়তো নিজেরও ওই গ্রামের কোনো এক বাসিন্দা মনে হতে পারে। কিংবা এমন একটি গ্রামে গিয়ে নিজেরও কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হবে। সিনেমার নামকরণের ক্ষেত্রে পরিচালক সার্থক। কারণ দরিদ্র লিজার জীবনের গল্প দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি।

রোমান্টিক-কমেডি সিনেমাটি অনুভূতি ও রোমান্টিকতা বাড়তি ভালো লাগা তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে। ভালোবাসার আসলে কোনো দেশ নেই, আলাদা কোনো সমাজ নেই। ভালোবাসার কাছে কোনো বাধাই বাধা নয়। সত্যি ভালোবাসা তো পৃথিবী বদলে দিতে পারে।

এম/ওয়াই/এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh