• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

‘বাঁশির সুর শুনে বারীকে গোপালদার কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম’

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৪ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:২৯

‘১৯৮১ সালের দিকের ঘটনা। সাবেক পৌর মেয়র মতিউর রহমানের সাতপাইয়ের বাসা থেকে সন্ধ্যার দিকে আসছিলাম। নেত্রকোনা সরকারি কলেজের মাঠের কাছে আসার পর একটি বাঁশির সুর শুনে থমকে দাঁড়ালাম।

এরপর বংশীবাদকের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করলাম তোমার নাম কী? সে বললো আমার নাম বারী? বললাম বাহ! তুমি তো বেশ সুন্দর বাঁশি বাজাও। কালই তুমি আমার সঙ্গে শিল্পকলা একাডেমিতে দেখা করো। এরপর আমি তাকে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিল্পী ওস্তাদ গোপাল দত্তের কাছে নিয়ে গেলাম।’

প্রয়াত শিল্পী বারী সিদ্দিকীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আরটিভি অনলাইনকে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন নেত্রকোনার সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিকড়ে’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ ফ ম রফিকুল ইসলাম খান (আপেল)।

তিনি আরো বলেন, গোপাল দার কাছে বারীকে নিয়ে যাবার পর বললাম, দাদা একে আপনার সঙ্গীতের তালিম দিতে হবে। সে ভালো একজন বংশীবাদক।

দাদা বললেন, আমি তো বাঁশি বাজাতে পারি না। আমি কিভাবে ওকে সঙ্গীতের তালিম দেব। এরপর আমি বললাম, দাদা আপনি যে রাগগুলো বাজাবেন তার সঙ্গেই সে সঙ্গত করবে। এরপর দাদা রাজি হলেন।

এভাবে বছর দুয়েক গোপাল দত্তের কাছে সঙ্গীতের তালিম নেয় বারী সিদ্দিকী। এরপর ১৯৮৪ সালের দিকে ঢাকায় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আয়োজন করে শুদ্ধ প্রসাদ নামের একটি সংগঠন।

সেখানে গান গাইতে যান গোপাল দত্ত। গান শেষে গোপাল দত্তকে অভিনন্দন জানাতে আসেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী আমিনুর রহমান। এ সময় গোপাল দত্ত আমিনুর রহমানকে বলেন- আমার বারী নামে একটি ছেলে আছে। তাকে আপনার কাছে দিতে চাই। আপনি যদি তাকে সঙ্গীতের তালিম দিতেন।

আমিনুর রহমান এমনিতে কাউকে শিষ্য না করলেও গোপাল দত্তের অনুরোধ ফেলতে পারেননি। তিনি বারীকে তার শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন। সেখানে বারীর শিল্প সাধনার পথ আরো প্রশস্ত হয়।

আমিনুর রহমানের বাসায় ভারত থেকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিখ্যাত শিল্পীরা আসতেন। তাদের মাধ্যমে বারী ভারতে গিয়ে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ওপর তালিম নেয়। এভাবেই বারী সঙ্গীতের একজন একনিষ্ঠ সাধক হয়ে উঠেন। পরে বংশীবাদক হিসেবে দেশে-বিদেশ সফর করেন।

রফিকুল ইসলাম খান আরো বলেন, বারী সিদ্দিকীর সঙ্গীতে ঈশ্বরপ্রদত্ত প্রতিভা ছিল। তিনি সেটাকে কাজে লাগিয়েছেন।

তবে ১৯৯৯ সালের দিকে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার মাধ্যমে তিনি সারা বাংলাদেশে গায়ক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। বলা যায়, হুমায়ূন আহমেদেই বারী সিদ্দিকীকে গায়ক বানিয়েছিলেন, যা বারী নিজেও স্বীকার করতো।

তিনি বলেন, নানা কারণে বারীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলেও পরস্পরের মধ্যে স্নেহ, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা অটুট ছিল। বারী একটি সঙ্গীত পরিবারেই জন্মগ্রহণ করেছিল। তার মা গান জানতেন। তার বড় ভাই আবুল হাশেম যাত্রার শিল্পী ছিলেন। বলা যায় বারীর শিল্পী হয়ে উঠার পেছনে তার পরিবারের পরম্পরাও ছিল। বারী মারা গেছে। সে যেখানেই থাকুক। ভালো থাকুক।

জেবি/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ভোগান্তির আশঙ্কা
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ১৩ কিলোমিটার সড়কে ভোগান্তির শঙ্কা
ছুটির দিনেও রাজধানীতে তীব্র যানজট
গানে গানে দর্শক মাতাতে আসছে ‘জোকার টু’
X
Fresh