• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
‘শিগগিরই ভারত থেকে পেঁয়াজ আসবে’
'রপ্তানিতে নতুন পণ্য বাছাইয়ের কাজ চলছে'
রপ্তানিতে সারাদেশ থেকে নতুন পণ্য বাছাইয়ের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।   শনিবার (২ মার্চ) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে তৃণমূল নারীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব গ্রাসরুট উইম্যান এন্ট্রাপ্রেনিয়ার অব বাংলাদেশ আয়োজিত এক সভায় একথা জানান তিনি।  প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, রপ্তানিতে নতুন পণ্য বাছাইয়ে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এবার হস্তশিল্পকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। একটি গ্রাম, একটি পণ্য-কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশ থেকে উপযুক্ত পণ্য দেশে ও বিদেশের বাজারে পৌঁছাতে কাজ করা হচ্ছে। যোগ্য পণ্যগুলোকে ই-কমার্সের সঙ্গে যোগ করে রপ্তানির ব্যবস্থা করা হবে। আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আমরা নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিয়ে আসতে চাই। পণ্যের সঙ্গে পণ্যের কারিগর ও অবস্থানকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করতে চাই। বিশ্বের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও), যা সরকারের পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। এসএমই খাতের বিকাশে ভিন্ন ট্যাক্স-ভ্যাট নীতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে এ খাতের সম্ভাবনা ও অবদান নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন তিনি। অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে উদ্যোক্তাদের আয়োজিত কিছু স্টল পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম।
ভারত থে‌কে পেঁয়াজ আসছে চল‌তি সপ্তাহেই
৪৩৯ কোটি টাকার সার কিনছে সরকার
নেপাল থেকে কমে বিদ্যুৎ চায় বাংলাদেশ, চলছে দর কষাকষি
মার্চের প্রথম সপ্তাহেই আসছে ভারতীয় পেঁয়াজ
বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারত
বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত। রপ্তানিকারকরা ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানি করতে পারবেন। অবিলম্বে রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের ভোক্তা বিষয়ক অধিদপ্তরের সচিব রোহিত কুমার সিং সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেছেন, আমরা বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ, মরিশাসে ১ হাজার ২শ’ টন, বাহরাইনে ৩ হাজার টন এবং ভুটানে ৫শ’ ৬০ টন পেঁয়াজ অবিলম্বে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছি।’ রোহিত কুমার বলেন, ব্যবসায়ীদের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই পরিমাণ রপ্তানি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং এই লক্ষ্যে কাজ চলছে। তিনি বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে বাংলাদেশে রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরআগে গত বছরের ডিসেম্বরে ভারত অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়াতে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এই মাসের শুরুর দিকে ভারত সফরের সময় পবিত্র রমজান মাসের আগে বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারে তাদের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশে পেঁয়াজসহ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছিলেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর এবং বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠকের সময় ড. হাছান ওই পণ্যগুলো বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য আবেদন করেছিলেন। সূত্র : বাসস
বাংলাদেশকে পেঁয়াজ দিতে ভারতের নীতিগত সম্মতি
ভারত বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন শুধু অফিসিয়ালি বিষয়গুলো বাকি। অফিসিয়ালি কাগজ পেলে দ্রুত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।  মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক টাক্সফোর্সের সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ এবং চিনি আমদানির জন্য যে প্রক্রিয়াগুলো আমরা নিয়েছি, নীতিগতভাবে ভারত সরকার সে বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। এখন আমরা অফিসিয়ালি কাগজ পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আনতে পদক্ষেপ নেবো। এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু টেলিফোনে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প, বস্ত্র ও ভোগ্যপণ্য এবং খাদ্য ও গণবিতরণবিষয়ক মন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে আলাপ করেন। এসময় ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীকে ১ লাখ টন চিনি ও ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ সরবরাহের পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান তিনি।     ভারতীয় বড় রপ্তানিকারকরা গত রোববার সে দেশের সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল, স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়ার কারণে সীমিত পরিসরে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিক এলাকায় এরই মধ্যে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৪০ রুপি থেকে ১৩ রুপিতে নেমে এসেছে। রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে দেশটিতে পেঁয়াজের এই অন্যতম উৎপাদনস্থলের কৃষকরা তা প্রত্যাহারের জন্য বিক্ষোভ করে আসছিলেন। নাসিক জেলা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতি বেশ কয়েক দফায় প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করে। এরপর থেকেই বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। 
নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারত
অভ্যন্তরীণ বাজারে ক্রমবর্ধমান দাম নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাচনের আগে পর্যাপ্ত সরবরাহ বহাল করতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে ভারত সরকার। তবে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার রাখতে এর মধ্যেও বাংলাদেশে সীমিত আকারে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।  দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে বাংলাদেশ ছাড়াও চারটি দেশে সরকারিভাবে সীমিত আকারে পেঁয়াজ রপ্তানির এ অনুমতি দিতে যাচ্ছে ভারত সরকার। দেশগুলো হলো- নেপাল, ভুটান, বাহরাইন ও মরিশাস। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও, দ্বিপক্ষীয় উদ্দেশে সীমিত পরিসরে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে, কী পরিমাণ রপ্তানি করা হবে তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও জানা যায়নি।   সূত্রমতে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সম্পর্কিত বিভিন্ন শর্তাবলির বিষয়ে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। এর আগে পবিত্র রমজান মাসে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমাতে নির্দিষ্ট পরিমাণে চিনি ও পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিতে ভারত সরকারকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রসঙ্গত, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ রপ্তানিকারক দেশ ভারত। ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশটির সরকার। পরে এই নিষেধাজ্ঞা চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কারণ, অভ্যন্তরীণ বাজারেক্রমবর্ধমান দাম নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাচনের আগে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে চেয়েছিল দেশটি। রপ্তানি আটকাতে প্রথমে পেঁয়াজের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল ভারত। কিন্তু তাতেও আশানুরূপ ফল না আসায় পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। তবে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তিতে এবার  বাংলাদেশসহ ৫টি দেশের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা সীমিত আকারে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। 
লক্ষ্য এবার ওষুধের কাঁচামাল রপ্তানি 
ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ১৫৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধ। দেশে প্রায় সব ধরনের ওষুধ তৈরি হচ্ছে এবং তা রপ্তানি করা হচ্ছে। এছাড়া দেশে মোট চাহিদার ৯৮ ভাগ ওষুধ দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। অন্যদিকে তৈরি হচ্ছে ওষুধের কাঁচামাল (এপিআই)। আর তা রফতানিতে প্রণোদনা দিবে সরকার। এই বছরের জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেন। কাঁচামাল রফতানি বাড়লে ২০-৩০ বিলিয়ন ডলার আয় হতে পারে বলে ধারনা সংশ্লিষ্টদের। ২০০৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়, ওষুধশিল্পের জন্য মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসংলগ্ন বাউশিয়া ও লক্ষ্মীপুর মৌজায় ২০০ একর জায়গাজুড়ে একটি অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট (এপিআই) পার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোর নিজেদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটানো, প্রতিযোগিতামূলক বাজার ধরতে পণ্য বৈচিত্র্য সৃষ্টি করা ও পণ্যের মান উন্নয়নে গবেষণা করা হচ্ছে এই পার্কটির প্রধান উদ্দেশ্য। এছাড়াও ওষুধ উৎপাদনে যেসব কাঁচামাল প্রয়োজন ও যেসব কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশেই তা উৎপাদন করা ও কাঁচামাল আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো বা বন্ধ করার লক্ষ্যে এই পার্ক তৈরি করা হয়েছে। ফলে বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় হাজার কোটি টাকারও বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর দেশের প্রথম অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট এপিআই শিল্প পার্কের উদ্বোধন করেন। ২০০ একর জমির ওপর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ৩৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এই ওষুধ শিল্প পার্কটি। বাংলাদেশ প্রধানত ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, ক্যান্সার, কুষ্ঠ, কিডনি ডায়ালাইসিস, হোমিওপ্যাথি, বায়োকেমিক্যাল, আয়ুর্বেদিক ও হাইড্রোসিলের পাশাপাশি পেনিসিলিন, স্ট্রেপটোমাইসিন ও এন্টি হেপাটিক ওষুধ রফতানি করে।  ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের যাত্রা শুরু পঞ্চাশের দশকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এ শিল্পের পরিধি। বর্তমানে সারা দেশে ২৯৫টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে প্রায় ৪৬ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল। এছাড়া দেশের ২৮৪টি ইউনানি ও ২০৫টি আয়ুর্বেদিক, ৭১টি হোমিওপ্যাথিক ও ৩১টি হার্বাল ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদন করছে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প উত্তরোত্তর উন্নতি করছে। দেশের মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশেই উৎপাদিত হয়। ডা. সামন্ত লাল সেন আরও বলেন, দেশে উৎপাদিত ওষুধ বিদেশে রফতানিতে উৎসাহিত করতে উৎপাদনকারীদের সরকারিভাবে প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। এই বছরের জানুয়ারি থেকে দেশে উৎপাদিত ওষুধের একটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইনগ্রিডিয়েন্ট রফতানির জন্য ১০ শতাংশ হারে এবং ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য রফতানির জন্য ৮ শতাংশ হারে সরকারিভাবে প্রণোদনা প্রদান করা হবে বলে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত বাংলাদেশে ওষুধের বাজারের আকার ছিল ৩ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। গত ১ দশকে বাজার ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে এটি ৬ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, লিকুইড প্রিপারেশন, ড্রাই সাসপেনশন, ইনজেকশন, ন্যাজাল স্প্রে ও স্যাশের মাধ্যমে গ্র্যানিউলসহ প্রায় সব ধরনের ডোজ উৎপাদনে সক্ষম। স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল ও ল্যাবরেটরি স্থাপনে এপিআই শিল্প পার্ককে ২০৩২ সাল পর্যন্ত কর অবকাশ ‍সুবিধা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন, ওষুধ উৎপাদকরা তাদের প্রতিযোগিতামূলক শক্তিমত্তা বাড়ানোর জন্য ওষুধের কাঁচামাল বা এপিআই উৎপাদনের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। কারন বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পেটেন্টকৃত ওষুধ উৎপাদনে ছাড় সুবিধা হারাবে। তখন পেটেন্টকৃত পণ্যের দাম বেড়ে যাবে এবং কিছু কমপ্লেক্স বায়োলজিকস দেশে আর পাওয়া নাও যেতে পারে। বর্তমানে রাজধানী থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে মুন্সিগঞ্জের এপিআই পার্কে ১৫ প্রতিষ্ঠান এপিআই উৎপাদন করছে এবং আরও ২৭ প্রতিষ্ঠান সেখানে এপিআই অবকাঠামো নির্মাণ করতে যাচ্ছে। গত ৭ বছরে এ খাতে রপ্তানি আয় প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের (বাপি) মহাসচিব এস এম শফিউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বমানের জেনেরিক ওষুধ উৎপাদন করে যা অন্য যেকোনো দেশের দুর্যোগ ছাড়া যে কোনো ধরনের সংকট মোকাবেলায় শক্তি অর্জন করেছে। তার মতে, ফার্মাসিউটিক্যাল নির্মাতারা খুব অত্যাধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করেছে এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্য সরবরাহ করতে পারে, যার জন্য আপাতত কিছু বাধার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও রফতানি বৃদ্ধি পাবে।  তিনি বলেন, ওষুধ উৎপাদনের মতোই কাঁচামাল উৎপাদনেও স্বয়ংস্বম্পূর্ণ হওয়ার দিকে যাচ্ছি আমরা। ২০৩০ সালের মধ্যে সব কারখানায়ই এপিআই উৎপাদনে যেতে পারবে বলে আশা করি।  বিশেশজ্ঞদের মতে, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরে পেটেন্টসহ নানা রকম সুবিধা হারানোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ওষুধ শিল্পখাতে গবেষণা বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির সম্ভাবনা তুলে ধরে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি আনায় জোর দিতে হবে। সঠিক প্রস্তুতি নিতে পারলে কম উৎপাদন খরচের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল রপ্তানিতে ২ থেকে ৩ হাজার কোটি ডলারের আয় করা সম্ভব।
বঙ্গবন্ধু রপ্তানি ট্রফি পাচ্ছে ৭৭ প্রতিষ্ঠান
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফির জন্য নির্বাচিত হয়েছে ৭৭টি প্রতিষ্ঠান। ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের ভিত্তিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচিত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি পাচ্ছে রিফাত গার্মেন্টস।    সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সরকারি এক গেজেটে ২০২১-২২ অর্থবছরে জাতীয় রপ্তানি ট্রফির জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা ওই গেজেটে বলা হয়, দেশের সেরা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বঙ্গবন্ধু রপ্তানি ট্রফি (স্বর্ণ) পাচ্ছে রিফাত গার্মেন্টস। স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ এ তিন ক্যাটেগরিতে জাতীয় রপ্তানি ট্রফির জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো তৈরি পোশাক খাতে (ওভেন) উইন্ডি অ্যাপারেলস স্বর্ণ, অ্যাপারেল গ্যালারি রৌপ্য এবং চিটাগাং এশিয়ান অ্যাপারেলস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। তৈরি পোশাক খাতে (নিটওয়্যার) লিবার্টি নিটওয়্যার স্বর্ণ, ডিভাইন ইন্টিমেটস রৌপ্য, ফ্লামিংগো ফ্যাশনস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। সব ধরনের সুতা খাতে বাদশা টেক্সটাইলস স্বর্ণ, স্কয়ার টেক্সটাইলস রৌপ্য এবং কামাল ইয়ার্ন ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। টেক্সটাইল ফেব্রিকস খাতে নাইস ডেনিম মিলস স্বর্ণ, হা-মীম ডেনিম রৌপ্য এবং ফোর এইচ ডায়িং অ্যান্ড প্রিন্টিং ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। হোম ও স্পেশালাইজড টেক্সটাইল খাতে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস স্বর্ণ, মমটেক্স এক্সপো রৌপ্য এবং এসিএস টেক্সটাইলস (বাংলাদেশ) ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। টেরিটাওয়েল খাতে নোমান টেরিটাওয়েল মিলস স্বর্ণ এবং এসিএস টাওয়েল রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে। হিমায়িত খাদ্য খাতে ছবি ফিশ প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ স্বর্ণ, প্রিয়াম ফিশ এক্সপোর্ট রৌপ্য এবং এমইউসি ফুডস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। কাঁচা পাট খাতে পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ স্বর্ণ, তাসফিয়া জুট ট্রেডিং রৌপ্য এবং ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্স ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। পাটজাত দ্রব্য খাতে জনতা জুট মিলস স্বর্ণ এবং আকিজ জুট মিলস রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে। চামড়াজাত পণ্য খাতে পিকার্ড বাংলাদেশ স্বর্ণ এবং এবিসি ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে। ফুটওয়্যার খাতে বে-ফুটওয়্যার স্বর্ণ, এডিসন ফুটওয়্যার রৌপ্য এবং এফবি ফুটওয়্যার ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। কৃষিজ পণ্য খাতে (তামাক ব্যতীত) ইনডিগো করপোরেশন স্বর্ণ, মনসুর জেনারেল ট্রেডিং কোং রৌপ্য এবং সিএসএস ইন্টারন্যাশনাল ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। অ্যাগ্রো প্রসেসিং পণ্য খাতে (তামাকজাত পণ্য ব্যতীত) হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো স্বর্ণ, প্রাণ অ্যাগ্রো রৌপ্য এবং প্রাণ ফুডস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। হস্তশিল্পজাত পণ্য খাতে কারুপণ্য রংপুর স্বর্ণ, বিডি ক্রিয়েশন রৌপ্য এবং ক্লাসিক্যাল হ্যান্ডমেড প্রোডাক্টস বিডি ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। মেলামাইন খাতে ডিউরেবল প্লাস্টিক স্বর্ণ ট্রফি পেয়েছে। প্লাস্টিক পণ্য খাতে অলপ্লাস্ট বাংলাদেশ স্বর্ণ, আকিজ বায়াক্স ফিল্মস রৌপ্য এবং বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। সিরামিক সামগ্রী খাতে শাইনপুকুর সিরামিকস স্বর্ণ, আর্টিসান সিরামিকস রৌপ্য এবং প্রতীক সিরামিকস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে এমঅ্যান্ডইউ সাইকেলস স্বর্ণ, মেঘনা বাংলাদেশ রৌপ্য এবং রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস পণ্য খাতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি স্বর্ণ এবং বিআরবি কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে। অন্যান্য শিল্পজাত পণ্য খাতে মেরিন সেফটি সিস্টেম স্বর্ণ, এশিয়া মেটাল মেরিন সার্ভিস রৌপ্য এবং তাসনিম কেমিক্যাল কমপ্লেক্স ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস স্বর্ণ, ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস রৌপ্য এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। কম্পিউটার সফটওয়্যার খাতে সার্ভিস ইঞ্জিন স্বর্ণ এবং গোল্ডেন হারভেস্ট ইনফোটেক রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে। ইপিজেডভুক্ত শতভাগ বাংলাদেশি মালিকানাধীন (সি ক্যাটেগরি) তৈরি পোশাক শিল্প খাতে (নিট ও ওভেন) ইউনিভারসেল জিন্স স্বর্ণ, প্যাসিফিক জিন্স রৌপ্য এবং শাশা ডেনিমস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। প্যাকেজিং ও অ্যাকসেরিজ পণ্য খাতে স্বর্ণ, মনট্রিমস রৌপ্য এবং ইউনিগ্লোরি পেপার অ্যান্ড প্যাকেজিং ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। অন্যান্য প্রাথমিক পণ্য খাতে হেয়ার স্টাইল ফ্যাক্টরি স্বর্ণ ট্রফি, রায় ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল রৌপ্য ও ইকো ফ্রেশ ইন্টারন্যাশনাল ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। অন্যান্য সেবা খাতে এক্সপো ফ্রেইট স্বর্ণ ট্রফি এবং মীর টেলিকম রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে। এছাড়া নারী উদ্যোক্তা বা রপ্তানিকারকদের জন্য সংরক্ষিত খাতে পাইওনিয়ার নিটওয়্যার্স (বিডি) স্বর্ণ ট্রফি, বিকন নিটওয়্যার রৌপ্য ট্রফি এবং ইব্রাহিম নিট গার্মেন্টস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি সরকারের দেওয়া সর্বোচ্চ পুরস্কার। এর বাইরে তৈরি পোশাক, সুতা, কাপড়, ওষুধ, পাটসহ বিভিন্ন রপ্তানি খাতে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ– এই তিন ক্যাটাগরিতে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি দেওয়া হয়।
রপ্তানি খাতে কমছে ভর্তুকি
রপ্তানি খাতে কমানো হচ্ছে প্রণোদনা বা ভর্তুকির হার। গড়ে সর্বনিম্ন দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের কারণে রপ্তানি খাতে পর্যায়ক্রমে প্রণোদনা বা ভর্তুকির হার কমানো হলো। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব পণ্য জাহাজীকরণ করা হবে সেগুলোর ক্ষেত্রে নতুন প্রণোদনার হার কার্যকর হবে। এ বিষয়ে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রণোদনার বিষয়ে গত ৩০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংক অপর এক সার্কুলার জারি করে বলেছিল ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব পণ্য রপ্তানির জন্য জাহাজীকরণ হবে সেগুলোর বিপরীতে নতুন হারে প্রণোদনা দেওয়া হবে। সোমবারের সার্কুলারের মাধ্যমে ৩০ জানুয়ারির সার্কুলারটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুন প্রণোদনা পাওয়ার সময় এক মাস পেছানো হয়েছে। সোমবারের (১২ ফেব্রুয়ারি) ওই সার্কুলারে বলা হয়, আগামী ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটবে বাংলাদেশের। এরপর থেকে রপ্তানি খাতে আর কোনো প্রণোদনা বা ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। বর্তমানে ৪৩টি খাতে রপ্তানিতে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ থেকে সর্বনিম্ন ১ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এসব প্রণোদনা ২০২৬ সালে এক সঙ্গে তুলে নেওয়া হলে রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই পর্যায়ক্রমে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসাবে চলতি অর্থবছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত রপ্তানির জন্য যেসব পণ্য জাহাজীকরণ করা হবে সেগুলোতে প্রণোদনার হার কমবে। তবে চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত যেসব পণ্য জাহাজীকরণ করা হয়েছে সেগুলোর বিপরীতে আগের ঘোষিত হারে প্রণোদনা বা ভর্তুকি দিবে সরকার। খাত ভেদে সর্বনিম্ন দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা কমেছে। প্রায় সব খাতেই প্রণোদনার হার কমানো হয়েছে। রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতের শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকরা আগে নিয়মিত প্রণোদনার অতিরিক্ত আরও ২ শতাংশ পেতেন। এখন থেকে তা কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের বস্ত্রশিল্পের উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা ৪ শতাংশে অপরিবর্তিত রয়েছে। নতুন বাজারে রপ্তানি প্রণোদনা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ, তৈরি পোশাক খাতে অতিরিক্ত নগদ সহায়তা ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রণোদনা ছিল সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ। এখন তা কমিয়ে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ করা হয়েছে, এ খাতে সর্বনিম্ন প্রণোদনা ৭ থেকে ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে। চামড়া খাতে ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১২ শতাংশ, কৃষিপণ্যে ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। হিমায়িত চিংড়ি খাতে আগে বিভিন্ন স্তরে সর্বোচ্চ প্রণোদনা ছিল ১০ শতাংশ। এখন তা কমিয়ে করা হয়েছে ৯ শতাংশ। এ খাতের সর্বনিন্ম প্রণোদনা চিল ২ শতাংশ, তা অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে মধ্যবর্তী স্তরে প্রণোদনার হার কমেছে। আলু রপ্তানিতে প্রণোদনা ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ, হালকা প্রকৌশল শিল্প খাতে ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১২ শতাংশ, হালাল মাংস রপ্তানিতে ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া জাহাজ রপ্তানিতে ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ, ফার্নিচার রপ্তানিতে প্রণোদনা ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। আর ওষুধ রপ্তানিতে ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ, কাগজ রপ্তানিতে ১০ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ, সিনথেটিক জুতা ও ব্যাগে ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ, আগর রপ্তানিতে ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ, ব্যাটারি খাতে ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ, মোটরসাইকেলে ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে। সিরামিক পণ্য রপ্তানিতে প্রণোদনা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ, টুপি রপ্তানিতে ১০ শতাংশের পরিবর্তে ৯ শতাংশ, সফটওয়ারে ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু খাতে কমানো হয়েছে রপ্তানিতে ভর্তুকি বা প্রণোদনার হার।
যে কারণে বাড়ছে পোপা-ভোল মাছের চাহিদা 
বেশ কিছুদিন হলো বাজারে পোপা বা পোয়া এবং ভোল মাছের চাহিদা অনেক বেড়েছে। বাজারে মাছগুলো বিক্রিও হচ্ছে চড়া দামে। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না যে কেনো এ মাছের চাহিদা দিনদিন এতো বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের মতে এ মাছের বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদাও অনেক। কিন্তু কেনো এ মাছের বাজারে এত চাহিদা এবং কি স্বাস্থ্য গুণাগুণ রয়েছে চলুন জেনে নেওয়া যাক।  ঢাকার বাজারে সাধারণত প্রতি কেজি পোপা বা পোয়া মাছের দাম আড়াই শ' টাকা থেকে শুরু হয়। তবে আকৃতির ওপর ভিত্তি করে দামের ওঠানামা নির্ভর করে। কক্সবাজার মেরিন ফিশারিজ ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বিবিসিকে বলেছেন, দামটা আসলে নির্ভর করে মাছের এয়ার ব্লাডারের ওপর। এয়ার ব্লাডার বা সুইম ব্লাডার মাছের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এটি মাছকে পানিতে ভাসিয়ে রাখে। ভেতরে বাতাসে ফাঁপা সাদা রংয়ের এই বস্তুটিকে কক্সবাজারের স্থানীয় ভাষায় ফদনা বলা হয়ে থাকে। কারো কারো কাছে এর পরিচয় ফ্যাপড়া বা ফটকা নামেও। শফিকুর রহমান বলেন, যে সমস্ত মাছে ফটকা বড় হয় তাদের মূল্যও বেশি হয়। বিভিন্ন কোম্পানি এখন সব মাছের এয়ার ব্লাডার সংগ্রহ করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদা আছে, এগুলো বিদেশে রপ্তানি হয়। তিনি আরও বলেন, এই এয়ার ব্লাডার থেকে সার্জারির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং কসমেটিকস তৈরি হয় বলে জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা। জাপানে এর গুরুত্ব বেশি, সেলাইয়ের সুতা, বিভিন্ন মেডিসিন এ থেকে উৎপন্ন হয়। পোয়া বা পোপা মাছ সম্পর্কে যা জানি আমরা-  স্থানীয় বাজারে পোপা মাছের আট থেকে ১০ রকমের প্রজাতি আছে। তবে বাজারে মূলত লোনা পানি এবং মিঠা পানির পোয়া মাছ হিসেবেই লোকে আলাদা করেন একে। তবে বাজারে যে পোয়া মাছ পাওয়া যায়, সেটা মিঠা পানির পোয়া মাছ। এটি আকারে কিছুটা ছোট। সাধারণত দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা বা পটুয়াখালীর দিকে নদীতে পাওয়া যায় এটি। এছাড়া চিংড়ি ঘেরেও এই জাতের পোয়া মাছের চাষ হয় এখন। কিন্তু কালো ও লাল পোয়া গভীর সমুদ্রের মাছ। এগুলো লবণাক্ত পানিতে থাকে এবং আকারেও অনেক বড় হয়। ট্রলার মালিক এবং মৎস্য ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন বিবিসিকে বলেন, আমাদের চোখে দেখার মধ্যে এই মাছটা দামি মাছ। সুন্দরবনের হরিণের মতো হঠাৎ এক ঝাঁক পাওয়া যায়। এটা বিভিন্ন জাতের হয়। তিনি দাবি করেছেন, গভীর সমুদ্রের এই জাতের ৪০ বা ৫০ কেজি ওজনের মাছ কেজিতে এক লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া এই মাছের কিছু উপকারিতার কথাও বলেন মৎস বিজ্ঞানীরা। শফিকুর রহমান জানান ডায়েবেটিস বা উচ্চরক্তচাপের ক্ষেত্রেও এই মাছ উপকারী। এছাড়া এটি কোলস্টেরল মুক্ত বলেও জানান তিনি। এমনিতে এই মাছ খেতেও অনেক সুস্বাদু। আর এসব কারণেই এ মাছটি এত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। দেশের আরও সব দামি মাছ- পোপা বা পোয়া মাছের মতোই দামি আরেকটা মাছ হল ভোল মাছ। ভোল মাছের ওজন ৫০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। কক্সবাজারের একজন সাংবাদিক বলছিলেন, বড় ভোল মাছ গরুর মত জবাই করা হয়। এরপর শহরে মাইকিং করে মাংস বিক্রি হয়। মৎসবিজ্ঞানী শফিকুর রহমান বলেছেন, মোট কথা যেসব মাছের আকার বড়, তাদের এয়ার ব্লাডার বড় হয় এবং দামও বেশি হয়। আর এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। “এখন কক্সবাজারে মাছ কিনলে জিজ্ঞেস করে এয়ার ব্লাডার রেখে দেবে কি-না। এয়ার ব্লাডার ছাড়া নিলে দাম কম পাওয়া যায়। আগে এগুলো জানতাম না।” এ ছাড়া স্যামন মাছ যা স্থানীয়ভাবে তাইল্যা মাছ নামে পরিচিত সেটি এবং কামিলা মাছ সমুদ্রের দামি মাছগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে জানান মি. রহমান। দামি এখন মাছের আঁশও- বাংলাদেশে এখন অন্যতম কয়েকটি অভিনব ব্যবসার একটি মাছের আঁশের রপ্তানি। যদিও মাছে-ভাতে বাঙালি হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশের মানুষের কাছে মাছ বরাবরই জনপ্রিয় থাকলেও, মাছের আঁশের কোন কদর ছিল না। কিন্তু সেই ফেলে দেওয়া পণ্যটিও এখন রপ্তানি আয় আনতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ২০০ কোটি টাকার বেশি মাছের আঁশ সাত-আটটি দেশে রপ্তানি হয়। রপ্তানিকারক জুলফিকার আলম বিবিসিকে বলেছেন, বাংলাদেশে এখন প্রায় প্রতিটি বাজারে যারা মাছ কাটেন, তারা সবাই আর আঁশ ফেলে না দিয়ে সংগ্রহ করে রেখে দেন। সারা দেশ থেকেই আমরা আঁশ সংগ্রহ করি। এক সময় যে পণ্যটি ফেলে দেওয়া হতো, সেটি থেকে আমরা এখন রপ্তানি আয় করছি। তাদের কাছ থেকে পাইকারি ক্রেতারা এসব আঁশ সংগ্রহ করে ময়লা দূর করে ধুয়ে শুকিয়ে নেন। এরপর রপ্তানিকারকরা সেগুলো প্রক্রিয়া করে বিদেশে রপ্তানি করেন। যদিও মাত্র ১০-১২ জন ব্যক্তি আঁশ রপ্তানি করেন, কিন্তু সব মিলিয়ে এই ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত রয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। এখন বাংলাদেশ থেকেই প্রতি বছর প্রায় আড়াই হাজার টন আঁশ রপ্তানি হয় জাপান, চীন, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোয়। সেখানে মাছের আঁশ থেকে কোলাজেন ও জিলেটিন তৈরি করা হয়। ওষুধ, প্রসাধন সামগ্রী, ফুড সাপ্লিমেন্ট তৈরি মাছের আঁশ ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া কোলাজেন ও জিলেটিন মাছের আঁশ দিয়ে তৈরি হয়, যা ওষুধ ও প্রসাধন সামগ্রীতে কাজে লাগে। এখন মাছের এয়ার ব্লাডার বা ফটকা যাই বলি না কেন সেটাও হয়ে উঠতে পারে রপ্তানি আয়ের উৎস। সূত্র: বিবিসি