• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মেলা নয় যেন ছাড়ের কার্নিভাল

মিথুন চৌধুরী

  ৩০ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:৩২

আসছে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্দা নামবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার। চলছে শেষ সময়ের বেচাকেনার উৎসব। তাই শেষ সময়ের বিক্রিতে অসম প্রতিযোগিতায় বিক্রেতারা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিচ্ছে নানা রকম ছাড়। এতে প্রতিদিন যানজট ডিঙ্গিয়ে মেলায় যাচ্ছে লাখো মানুষ। বাড়ছে বিক্রেতাদের প্রত্যাশা, হচ্ছে ক্রেতাদের সাথে সখ্যতা।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাণিজ্য মেলা হচ্ছে নিত্যনতুন পণ্য প্রদর্শনী ও বিক্রির মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের জায়গা। বাণিজ্য মেলার মাধ্যমে অনেক ব্যবসায়ী নতুন পণ্যের প্রচার এবং পর্যাবেক্ষণ করে থাকে। তাই বাণিজ্য মেলা হচ্ছে প্রচার ও প্রসারের বড় মাধ্যম। এছাড়া পণ্যের প্রতি ক্রেতার ভালবাসা ও গ্রাহকের দ্বায়বদ্ধতার জন্য বেশিরভাগ পণ্যে ছাড় দেয় বিক্রেতারা। প্রতিবারের ন্যায় এবারও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। মেলা জুড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানাভাবে ছাড় দিয়ে যাচ্ছে ক্রেতাদের।

মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, দেশি ব্র্যান্ডের শার্ট মেলায় পাওয়া যাচ্ছে ৬শ’ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। তবে পণ্যের দাম কম হলেও মান বেশ ভাল। বিভিন্ন শপিং সেন্টারে ডাবল দাম। ফার্নিচার প্যাভেলিয়নগুলোতে মেলায় নিয়মিত দামের চেয়ে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়া হচ্ছে। প্লাস্টিক পণ্যে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

চামড়া, সিনথেটিক, উল আর পাটের তৈরি বাহারি কার্পেট শপিং মলে বড় ছাড় চলছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মেলাকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি কার্পেট নিয়ে এসেছে। প্যাভেলিয়নে চামড়ার ৫ ফুট বাই ৭ ফুট আকারের কার্পেট পাওয়া যাচ্ছে ৯ হাজার ৫০০ টাকায়। সিনথেটিকের সাড়ে ৫ বাই ৭ ফুটের কার্পেট পাওয়া যাবে ২২ হাজার টাকায়। মেলার ইলেকট্রোনিক্স পণ্যে পাওয়া যাচ্ছে ৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড়। মেলায় ডজন খানেক স্টলে বিভিন্ন ধরনের কাশ্মিরের বিছানার চাদর, কুশন ও শাল পাওয়া যাচ্ছে কম দামে। তরুণীদের জন্য বাহারি ব্যাগ আছে প্রায় ১০ ধরনের। ২ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে পাঁচ সেটের কাশ্মিরি বেডশিট। টেবিল ম্যাট পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ৫শ’ টাকার মধ্যে।

বালিশ বা সোফার কুশন পাওয়া যাচ্ছে ১শ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩শ’ টাকায়। কাশ্মিরি নকশায় মেয়েদের হ্যান্ডব্যাগ পাওয়া যাচ্ছে ৩শ’ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায়। মেলায় উইনার প্রতিটি পণ্যে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়া হচ্ছে। এছাড়া মেলায় বড় আকর্ষণ ৩ হাজার ৭শ’ ৫০ টাকার ব্লেজার মাত্র ২ হাজার ৫০০ টাকা। অনেকে সঙ্গে শার্ট ও ফ্রি দিচ্ছে। ৮শ’ থেকে তিনহাজার টাকায় মিলছে ব্লেজার। মেলায় শার্ট ৫শ’ ৫০ টাকা থেকে ৬শ’ টি-শার্ট ১শ’ ৮০ থেকে ৫শ’ টাকা, প্যান্ট ৪শ’ থেকে ৭শ’ টাকা, মেয়েদের টপস ৩শ’ টাকা থেকে ৩শ’ ৫০ টাকা, শাল ৩শ’ ৫০ টাকা, থ্রিপিস ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা, ব্রা ও পেন্টি ৫০ টাকা থেকে ৫শ’ টাকায়, এছাড়া লেদারের বেল্ট ৮শ’ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কসমেটিক্স ও জুয়েলারিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজস্ব স্টাইলে ছাড় দিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।

এছাড়া বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান খুবই কমদামে বা প্যাকেজ মূল্যে বিক্রি করছে। এছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠান প্যাভেলিয়ান করেছে মিনি কারখানার আদোলে। যাতে গ্রাহকরা সরাসরি পণ্য বানাতে দেখে। ফলে খাদ্যপণ্য তৈরির ভাবনাও মিলছে।

ক্রেতারা বলছে, শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ, সকালের উপযোগী এ বাণিজ্য মেলায় সবই আছে। যেন স্বল্প পরিসরে সাজানো গোছানো পণ্যের শহর। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ক্রেতা সমগম। বাড়ছে বিক্রি ও ক্রেতাদের সাথে সখ্যতা।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) উদ্যোগে ১ জানুয়ারি শুরু হয় মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা।

এ বছর মেলায় মোট ৫শ’ ৮০টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নে তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে। এর মধ্যে ১৩টি ক্যাটাগরি রয়েছে। সাধারণ প্যাভিলিয়ন, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, বিদেশি প্যাভিলিয়ন, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ, প্রিমিয়ার স্টল, বিদেশি প্রিমিয়ার স্টল, সাধারণ স্টল ও ফুড স্টল প্রভৃতি।

এছাড়া মেলায় ২১টি দেশ অংশ নিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- ভারত, পাকিস্তান, চীন, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, নেপাল, জাপান, মরক্কো, ভুটান, আরব আমিরাত, মরিশাস ও ঘানা । এছাড়া গেলো মেলার চেয়ে এবারের মেলায় ৭টি স্টল বাড়ানো হয়েছে। এবার সব ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন, সাধারণ স্টল, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়নসহ ৫শ’ ৬০টি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পণ্য নিয়ে অংশ নেবে। যা ২০১৬ সালে ছিল ৫শ’ ৩৬টি।

প্রতিদিন মেলা সকাল ১০ থেকে রাত ১০ পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা রয়েছে।

এমসি/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh