• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

শীত উপেক্ষা করে মেলায় মানুষের ঢল

মিথুন চৌধুরী

  ১৩ জানুয়ারি ২০১৭, ২২:১৩

পৌষের শীত। হিমেল আমেজ। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। বেশির ভাগ মানুষের ঘরেই থাকার কথা। কিন্তু এই শীত ও ঠান্ডা উপেক্ষা করেই বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ এবং আশপাশের এলাকাজুড়ে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঢল।

শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার দৃশ্য ছিল অন্য ছুটির দিনগুলোর মতোই। চোখে পড়ে রোকেয়া সরণির মুখ থেকে আইডিবি ভবন পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে স্থবির যানবাহনের সারি, ফুটপাত ধরে হেঁটে চলা জনস্রোত আর মেলার প্রবেশপথ ও টিকিট কাউন্টারগুলোর সামনে মানুষের দীর্ঘ সারি। বেলা গড়ানোর সঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণ এবং আশপাশের এলাকা পরিণত হয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মিলনস্থলে।

মেলায় ঢুকতেই মূল ফটকের সামনে কথা হচ্ছিল যাত্রাবাড়ী থেকে আসা তরুণ ব্যবসায়ী সুমন ও তার সঙ্গীদের সঙ্গে। তারা প্রত্যেকেই জানালেন, এ দিনের মেলা তাদের কাছে হয়ে উঠেছে শীত উপভোগের উপলক্ষ। সুমন বলেন, এমনিতে ছুটির দিনগুলোতে বন্ধুবান্ধবসহ মেলায় আসার চেষ্টা করি। অল্প-বিস্তর কেনাকাটার পাশাপাশি আড্ডাটাই বেশি হয়। তবে আজকে আসার তাড়াটা একটু বেশিই ছিল।

বিকাল না গড়াতেই মেলা থেকে বেরিয়ে যানবাহনের অপেক্ষায় থাকা ব্যাংক কর্মকর্তা রেজাউল করিমের হাতে ছিল দুটি বড় আকারের ব্যাগ। একটিতে বিভিন্ন রকমের রান্নার সরঞ্জাম, অন্যটিতে বাচ্চাদের খেলনা। তার স্ত্রী সুমনা আক্তার আর তিন ছেলে-মেয়ে সবার হাতে পলিথিনে মোড়ানো একটি করে বাহারি হাওয়াই মিঠাই, কয়েকটি বেলুন। রেজাউল করিম জানালেন, বেলা একটার পর মেলায় ঢুকে তাঁরা মাত্রই বেরিয়েছেন। ভিড় আর ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে কোনো সমস্যা হচ্ছে কী না, জানতে চাইলে বলেন, এত ভিড়ের মধ্যে তো ঠান্ডা লাগার সুযোগ নেই। বরং ভালোই লাগছে।

তবে ভালো লাগার মধ্যেও মেলার ভেতরে খাবারের দোকানগুলোতে অতিরিক্ত দামের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন পরিবারটির সদস্যরা। অনন্যা রেজাউল খানিকটা ক্ষোভের সঙ্গেই বললেন, মেলায় খানিকটা সময় কাটালে কিছু খেতেও ইচ্ছে হয়। কিন্তু মেলার ভেতরের দোকানগুলোতে খাবারের যে দাম রাখা হচ্ছে, তাতে করে আর খাওয়ার ইচ্ছে থাকে না। বাইরের দোকানগুলোর তুলনায় এটি কয়েক গুণ বেশি। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মেলা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

মেলার ভেতরে সবচে’ বেশি ভিড় চোখে পড়ে গৃহস্থালি, পোশাক আর শৌখিন পণ্যের দোকানগুলোতে। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে ক্রেতাদের সামলাতে রীতিমতো গলদঘর্ম হচ্ছিলেন বিক্রয়কর্মীরা। তা সত্ত্বেও হাসিমুখে তাদের অনেকে জানালেন, ভালো বেচা-বিক্রির জন্য তারা ছুটির দিনগুলোর জন্যই অপেক্ষা করেন।

অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে মেলার ভেতরে দাঁড়িয়ে দল বেঁধে আড্ডার সুযোগ কম থাকায় এ রকম অনেকের দেখা মিললো্ মেলার বাইরের বিভিন্ন জায়গায়। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে এমন একজন তরুণ ভুট্টা পোড়া খেতে খেতে হাসিমুখে বললেন, অনেকে মেলায় আসেন পছন্দের জিনিস কিনতে। কেউ আসেন বেড়াতে। আমরা এসেছি মানুষ দেখতে। যত বেশি মানুষ, মেলায় তত বেশি আনন্দ। ধরেন, আজকে আনন্দমেলায় আছি।

১ জানুয়ারি শুরু হওয়া ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা চলবে আসছে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। মেলা চলে প্রতিদিন সকাল ১০টা-রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশের টিকিটমূল্য বড়দের জন্য ২০ টাকা এবং ছোটদের ১০ টাকা। এছাড়া অনলাইনেও মেলে টিকিট।

এমসি/এসজেড

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh