• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ভুলের মাশুল গুণছে অগ্রণী ব্যাংক

ইকরাম হোসেন

  ২০ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৭:০৫

নিয়ম মেনে ঋণ না দেয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কুঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল ১৫ প্রতিষ্ঠানের কাছেই খেলাপি হয়ে আছে পৌণে তিন হাজার কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংকিং চর্চা ও দক্ষতা ঘাটতির পাশাপাশি যথাযথ পদক্ষেপের অভাবই এজন্য দায়ী। অবস্থা উত্তরণে কর্মকর্তাদের যোগ্য করে তোলার তাগিদ দিয়েছেন তারা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকে ১০০ কোটি টাকা বা তার ওপরের খেলাপি গ্রাহক ও ঋণ বিতরণে অনিয়ম নিয়ে কাজ করেছে সংসদীয় কমিটি। ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক ও পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করে কমিটি দেখেছে, আদায় বা অনাদায়ে মামলা করার বদলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জামানত ছাড়াই পুনঃতফসিলের মাধ্যমে ক্যাশ এলসি করার সুযোগ দিয়েছেন।

এদের মধ্যে চট্টগ্রাম করপোরেট শাখায় ইলিয়াছ ব্রাদার্সের কাছে পাওনা দুইশ’ ২৫ কোটি টাকা। ঢাকায় এসডিএস ইন্টারন্যাশনালের কাছে একশ’ ৫১ কোটি, সাত্তার টেক্সটাইল মিলসের কাছে ৪৮ কোটি, রুমা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে ৩৫ কোটি, এসকেএম জুট মিলসের কাছে ২০ কোটি, গুডউইল বেসিক কেমিক্যালের কাছে ১৭ কোটি, ওয়ানটেল কমিউনিকেশনের কাছে ১৩ কোটি, সাঈদ টেক্সটাইলের কাছে ১৩ কোটি ও এপিটি ফ্যাশনের কাছে পাওনা নয় কোটি টাকা।
বলেন, কমিটি ১৫ প্রতিষ্ঠানের তালিকাও করেছে, যাদের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দুই হাজার সাতশ’ ৭৯ কোটি টাকা। এগুলোর মধ্যে মাররিন ভেজিটেবল অয়েলের কাছে চারশ’ ৪৬ কোটি ছয় লাখ, ইলিয়াছ ব্রাদার্সের সুপার অয়েল রিফাইনারির কাছে তিনশ’ ৭৪ কোটি ১৫ লাখ, খালেক অ্যান্ড সন্সের কাছে তিনশ’ ৬৩ কোটি ২৮ লাখ, সিদ্দিক ট্রেডার্সের কাছে দুইশ’ ৫০ কোটি ৪০ লাখ, ম্যাকশিপ বিল্ডার্সের কাছে একশ’ ৭১ কোটি ৯০ লাখ, মুহিব স্টিল অ্যান্ড শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে একশ’ ৬১ কোটি ৯৫ লাখ, জাসমীর ভেজিটেবল অয়েলের কাছে একশ’ ৩৮ কোটি ৫০ লাখ, মুন বাংলাদেশের কাছে একশ’ ৩১ কোটি ৯০ লাখ, চিটাগং ইস্পাতের কাছে একশ’ ৩০ কোটি ২২ লাখ, রুবাইয়া ভেজিটেবল অয়েলের কাছে একশ’ ২৯ কোটি ৪৫ লাখ, সরদার অ্যাপারেলসের কাছে একশ’ ১০ কোটি ৬৪ লাখ, নূরজাহান সুপার অয়েলের কাছে একশ’ চার কোটি ২২ লাখ, সামান্নাজ সুপার অয়েলের কাছে একশ’ তিন কোটি ৮৬ লাখ, মিজান ট্রেডার্সের কাছে ৮৬ কোটি ৬২ লাখ ও এমআর ট্রেডিংয়ের কাছে ৭৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা পাওনা।

ঋণ বিতরণে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং পাওনা আদায়ের জন্য কিছু ক্ষেত্রে আদালতে না গিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চালানোর সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এদিকে অগ্রণী ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস-উল-ইসলাম খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে ১০০ দিনের একটি পরিকল্পনা নিয়েছেন, যার মেয়াদ শেষ হবে ডিসেম্বরে। যদিও ঋণ আদায়ে অগ্রগতি সম্পর্কে কোন কথা বলতে রাজি নন তিনি। তবে সূত্র বলছে, এ প্রচেষ্টায় খেলাপি চার হাজার নয়শ’ কোটি টাকার মধ্যে আদায় হতে পারে বড়জোর পাঁচ থেকে সাতশ’ কোটি টাকা।

এসজে/এসজেড

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh