• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

যে সেতু বদলে দেবে দেশ

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১১:৪০
কাজ চলছে পদ্মা সেতুর

একটি সেতু। তার জন্য অধীর আগ্রহে আছে বাংলার দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জনতা। কারণটা সবার জানা। এই একটি সেতু বদলে দেবে দেশ। কেবল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতিই বদলে দেবে।

মাওয়া-জাজিরায় নির্মাণাধীন গৌরবের পদ্মা সেতু ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। নিজেদের এ স্বপ্ন যেন খুব শিগগির পূরণ হতে হচ্ছে। এই সেতুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের প্রথম কোনও সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে উঠবে। সেতু নির্মিত হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন পাল্টে যাবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল কৃষিতে উন্নত। এই সেতু হয়ে গেলে তাদের কৃষিপণ্য খুব সহজেই ঢাকায় চলে আসবে। মোংলা বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী এবং বন্দরনগরে চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পুরো দেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে।

দীর্ঘ কর্মযজ্ঞের পর রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে এর অগ্রগতি পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে উন্নীত হবে। বর্তমানে প্রবৃদ্ধি আছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। পদ্মা সেতু চালু হলে বাড়বে আরও ২ দশমিক ২ শতাংশ। ফলে ভবিষ্যতে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে উন্নীত হবে। পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হলে যারা এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছিল তাদের উচিত জবাব দেয়া সম্ভব হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাহসের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে চলেছি। আজ কোটি প্রাণের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। বিশ্বে প্রমাণ করেছি, আমরা পারি, বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।

২০১৮ সালেই এই সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি হয়তো এখন আর হচ্ছে না। কাজের প্রয়োজনে লাগতে পারে আরও কিছু সময়।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্মাণযজ্ঞে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, বহুমুখী পদ্মা সেতু ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এ সেতুর কাজ করা অনেক কঠিন। খরস্রোতা নদী তাই সেতু নির্মাণ অনেক কঠিন ছিল। এরইমধ্যে ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প দেশের সর্ববৃহৎ একটি অবকাঠামো প্রকল্প। সেতুটির নির্মাণকাজ টেকনিক্যাল, সময়সাপেক্ষ ও চ্যালেঞ্জিং। গুণগতমান শতভাগ রাখার স্বার্থে আমরা ধৈর্য ও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছি।

১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতুর উদ্বোধন করা হয়। সে সময়েই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের সুবিধার জন্য পদ্মায় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৯৯৮ থেকে ২০০০ এই সময়ে পূর্ব সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়। এরপর ২০০১ সালে জাপানিদের সহায়তায় সম্ভাবত্য যাচাই হয়। ২০০৪ সালে জুলাই মাসে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকার সুপারিশ মেনে মাওয়া-জাজিরার মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্মা সেতুর নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে। মহাজোট সরকার শপথ নিয়েই তাদের নিয়োগ দেয়। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতু করার চূড়ান্ত নকশা করা হয়। নতুন নকশায় নিচে চলবে রেল এবং ওপরে মোটরগাড়ি।

এতে অর্থায়নের কথা ছিল এডিবি, জাইকা ও বিশ্বব্যাংকের। কিন্তু দুর্নীতির ধোয়া তুলে একে একে সবাই অর্থায়ন থেকে ফিরে যায়।

তবে দমেনি ক্ষমতাসীন সরকার। ২০১৩ সালের ৪ মে নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ সালে তিনি মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের মূল পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন।

এসআর

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সেতু ভেঙে ভোগান্তি, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল  
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স উন্নয়নের একটি মূল শক্তি : সমাজকল্যাণমন্ত্রী
প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে কাজ করছে সরকার : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ, নেই ভোগান্তি
X
Fresh