• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

খেলাপি হয়ে পড়ছে হস্তান্তরিত ঋণ, বাড়বে ঝুঁকি

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৮:৩৩

এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের গ্রাহক ঋণ ক্রয় বা টেক ওভার (ঋণ হস্তান্তরের) হচ্ছে। ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকার ঋণ হস্তান্তরের ঘটনা ঘটেছে। এটিকে কেন্দ্র করে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। অনেকাংশে গ্রাহকের সব ধরনের তথ্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যা পরে খেলাপি হয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘লোন টেক ওভার ইন বাংলাদেশ: ইজ ইট এ হেলদি প্রাকটিসেস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকারদের ৯০ শতাংশ মনে করেন হস্তান্তরিত ঋণ ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি বাড়াবে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ ব্যাংকারের মতে হস্তান্তরিত ঋণ ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি তৈরি করেছে।

আর ৫০ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছেন, হস্তান্তরিত ঋণ নিকট ভবিষ্যতে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের পরিচালক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী।

গোলটেবিল বৈঠকে ঋণ হস্তান্তরের উপর গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা। চার সদস্যের গবেষকের মধ্যে আরও ছিলেন বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক ড. মো: মহব্বত হোসেন, বিআইবিএমের লেকচারার তোফায়েল আাহমে এবং লেকচারার রাহাত বানু।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬০ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছেন, পরিচালনা পর্যদের অযৌক্তিক চাপে ঋণ হস্তান্তরে ক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। ৫ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছে, ঋণ হস্তান্তরের অদক্ষতা রয়েছে।

বৈঠকের প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তরা এখন ব্যাংকিং খাতে ঢুকে পড়েছে। সম্প্রতি একটি ব্যাংকে গত তিন বছরে তিনজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এখন নয় মাস যাবৎ কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, দুই থেকে চার লাখ টাকা দিলে এমডি পাওয়া যাবে কিন্তু ব্যাংক চালানোর মতো যোগ্য লোক পাবেন না। ব্যাংকার ভালো হলে নীতিমালার দরকার নাই বলে উল্লেখ করেন।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকগুলোর মধ্যে ঋণ হস্তান্তরের সময়ে সব বিষয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে হস্তান্তর করা উচিত। সব ধরণের যাচাই-বাছাই ছাড়া ঋণ দিলে খেলাপি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত ইসলাম বলেন, ঋণ হস্তান্তরের অনেক খারাপ দৃষ্টান্ত আছে। কিছু গ্রাহক ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য সরকারি ব্যাংককে টার্গেট করে। তারা বিভিন্ন কায়া-কানুন করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা আর পরিশোধ করেন না।

তিনি আরো বলেন, ঋণ হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে তা ব্যাংক খাতের জন্য ক্ষতিকারক। এটি বন্ধ করতে হবে। ঋণ হস্তান্তরে যে গ্রাহকের ঋণ নেয়ার ক্ষমতা ১০ কোটি টাকা, তাকে ২০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে।

বৈঠকে অন্যান্য বক্তারা বলেন, লোন টেকওভারের (ঋণ হস্তান্তর) ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা করতে হবে। ঋণ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মানছে না ব্যাংকগুলো। এখানে এক ধরণের অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে।

এসআর

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ঋণখেলাপি ধরতে প্রার্থীদের তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
৯ মাসে সুদ পরিশোধ ১০০ কোটি ডলারের বেশি
৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিপি
জামিনে মুক্তি পেলেন সেই খালেদা, অঝোরে কাঁদলেন মেয়েকে জড়িয়ে
X
Fresh