• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমেছে, উল্টোরথে বাংলাদেশ

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০৪ নভেম্বর ২০১৭, ১১:২৯

সদ্য শেষ হওয়া অক্টোবর মাসে বিশ্ববাজারে সার্বিকভাবে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে।

গেলো বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, আলোচ্য মাসে দুগ্ধজাত পণ্য, ভোজ্য তেল, চিনি, মাংসের দাম বেশি কমেছে, যার সার্বিক প্রভাব পড়েছে মূল্যসূচকে।

অক্টোবরে খাদ্য মূল্যের গড় সূচক অবস্থান করছে ১৭৬ দশমিক ৪ পয়েন্টে। এটি আগের মাস সেপ্টেম্বর থেকে ১ দশমিক ৩ শতাংশ কম।

তবে বাংলাদেশে সম্প্রতি কয়েক মাসে নিত্য পণ্যের দাম বাড়তে দেখা যাচ্ছে। কোনোভাবেই লাগামহীন এই ঊর্ধ্বগতি থামিয়ে রাখা যাচ্ছে না। যদিও অক্টোবরের কোনো পরিসংখ্যান এখনো জানা যায়নি।

গবেষকরা বলছেন, গেলো তিন বছর খাদ্যের উৎপাদন থমকে আছে। ফলে ঘাটতি মেটাতে নানা দেশ থেকে সরকারকে খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে। এতে করে পণ্যের দাম বেড়েছে।

চাল ও গম আমদানিকারক আবুল বাশার চৌধুরী বলেন, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান ব্যুরোর(বিবিএস)তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

এই অঙ্কটা গেলো অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৪৩ ভাগ।

বিবিএসের প্রতিবেদন মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসেই ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। জুলাই মাসে ৫ দশমিক ৫৭, অগাস্ট মাসে ৫ দশমিক ৮৯ এবং সেপ্টেম্বর মাসে ৬ দশমিক ১২ শতাংশ।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অবশ্য জানিয়েছেন, একদিকে ফসলের ক্ষতি হয়েছে অন্যদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমস্যা হয়েছে। যে কারণে সঠিকভাবে পণ্য সরবরাহ হয়নি। গেলো তিন মাসে খাদ্য খাতের চাহিদা এবং যোগানের মধ্যে সমন্বয় ছিল না। নানা কারণে এ সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই বাড়ছে চালের দাম। সরকারের নানা পদক্ষেপে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকলেও নিত্যপণ্যের বাজারে চড়া রয়েছে শাকসবজির দাম।

বাংলাদেশে খাদ্য বাজারে গেলো দুই মাসে সবচেয়ে বেশি অস্থির ছিল চাল, মরিচ ও পেঁয়াজের দাম। এসব পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে দেখা গেছে।

আরটিভি অনলাইনে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এক হালি ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ২০ টাকা দেখানো হয়। সে হিসেবে এই শ্রেণির এক কেজি পেঁয়াজের দর ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। শুক্রবার পেঁয়াজের দাম ছিল ১০০ টাকা।

তবে পরিকল্পনামন্ত্রী আশা করছেন, আগামী প্রান্তিকে অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মূল্যস্ফীতির এ হার কমে আসবে। চাহিদা আর যোগানেরও সমন্বয় হবে।

অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ভোগ্যপণ্যের অন্যতম আমদানিকারক দেশ। এখানে জিনিসপত্রের দাম অনেকটাই আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করার কথা।

তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থায় ভুল আছে। এগুলো সুধরে নিলেই বাজার স্বাভাবিক গতিতে চলবে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান অবশ্য শুধু আমদানি সঙ্কটকেই দায়ী করেন না। বর্তমানে অস্বাভাবিক বাজার সৃষ্টিতে ব্যবসায়ীদের হাত থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

আরটিভি অনলাইনকে তিনি সম্প্রতি জানান, চালের বাজারে দাম বাড়ার পর পেঁয়াজের বাজারেও এখন আগুন। দেশে প্রাকৃতিক সঙ্কটের কারণে আমদানি ঘাটতি থাকতে পারে। তার কারণে হয়তো একটু আধটু দাম বাড়বে। কিন্তু এতোটা মেনে নেয়া যায় না। এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জিনিসের দাম বৃদ্ধি এখন জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, চালের বাজারে দাম বৃদ্ধির পর ব্যবসায়ীরা সাহস পেয়ে গেছেন। তারা মনে করছেন, নতুন কোনো পণ্যের দাম বাড়ালেও বাজার সয়ে যাবে। এজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন করে কোনো সেল করা দরকার। তারা শুধু দর উঠানামার বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন।

এদিকে রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে শীতের মৌসুম। শীতের সবজি ও নতুন পণ্য বাজারে ঢুকলেই বাজারে স্বস্তি আসবে।

এসআর/এ/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে নতুন নিয়ম চালু
মায়ের বান্ধবীকে বিয়ে, অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশ করে যা লিখলেন বিরসা
চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ঘাতক বাসচালক গ্রেপ্তার
ডেমরায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ভ্যানচালকের মৃত্যু
X
Fresh