• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

পেঁয়াজ আমদানিতে ভারতের বিকল্প খুঁজছে সরকার

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ৩১ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:৪৮

দেশের বাজারে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার। ব্যবসায়ীরা এই দাম বাড়ার জন্য ভারত থেকে আমদানির উপর দায় চাপাচ্ছেন। তবে সরকার বলছে, দেশে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই, মজুদ পরিস্থিতিও ভালো। কিন্তু তারপরও দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিন এই পণ্যের দাম বাড়ছে।

সোমবার সচিবালয়ে এ ব্যাপারে জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে পেঁয়াজের দাম কমিয়ে আনতে সরকার বিকল্প উৎস থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার কথা ভাবছে বলে জানা যায়।

বৈঠক সূত্রে আরো জানা যায়, ভারতের বাইরে মিশর, থাইল্যান্ড এবং চীন থেকে জরুরি ভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানির জন্য ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সভায় বলা হয়, অধিক মুনাফার আশায় অনেক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ মজুদ করেছেন, যা দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এজন্য মজুদকৃত পেঁয়াজ বাজারে নিয়ে আসতে মনিটরিং ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত বাজার মনিটরিং করবে।
বৈঠকের সভাপতি অতিরিক্ত সচিব শামীমা ইয়াসমিন (এনডিসি) জানান, পেঁয়াজ সাধারণত ভারত থেকে আমদানি হয়। বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে ভারত এবং বাংলাদেশে এবার পেঁয়াজের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম চড়া। এজন্য বিকল্প উৎস থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাবে দেখা গেছে, দেশে বছরে ২২ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা আছে। আর চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয়ে থাকে ১৯-২০ লাখ টন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সাত লাখ ৯০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলা হয়েছে। এর বিপরীতে সেটেলমেন্ট হয়েছে আট লাখ ছয় হাজার টন। অর্থাৎ চলতি বছরে ইতোমধ্যে আমদানি করা আট লাখ ছয় হাজার টন পেঁয়াজ দেশে এসে পৌঁছেছে। বর্তমানে পাঁচ লাখ টনের মতো দেশী পেঁয়াজ মজুদ আছে।

শ্যামবাজারের মেসার্স বাণিজ্যালয়ের ব্যবস্থাপক মুক্তার হোসেন বলেন, দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়, তা দিয়ে আসলেই ১২ মাস চলা সম্ভব নয়। তাই আমাদেরকে আমদানির ওপরই নির্ভর করতে হয়’।

’এখন গ্রামের হাটেও পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। দেশি পেঁয়াজের মৌসুম শেষ প্রায়। আবার জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

ভারতীয় পেঁয়াজের যথেষ্ট সরবরাহ বাজারে না এলে দাম কমার লক্ষণ নেই বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে টন প্রতি ৩০২ ডলার মূল্য ধরে ৫৯ হাজার ৭২২ টন পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। ২৯০ ডলারে ঋণপত্র নিষ্পত্তি হয়েছে ৬৫ হাজার ৪৬২ টনের। অর্থাৎ ঋণপত্র খোলার সময়ে পেঁয়াজের কেজি প্রতি মূল্য ধরা হয় ২৪ টাকা। শেষ পর্যন্ত তা নিষ্পত্তি হয় ২৩ টাকায়। এছাড়া চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে টন প্রতি ৩৩০ ডলার মূল্য ধরে ৪৯ হাজার ৩২০ টন পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। ২৮৭ ডলারে নিষ্পত্তি হয়েছে ৫৩ হাজার ৩৫৫ টন। এক্ষেত্রে ঋণপত্র খোলায় পেঁয়াজের দাম ধরা হয় কেজি প্রতি ২৬ টাকা। অন্যদিকে তা নিষ্পত্তি হয় প্রতি কেজি ২৩ টাকায়।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এক মাস আগে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা, যা বর্তমানে ৫৮-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ।
এক মাস আগে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০-৪৫ টাকা। এখন তা সর্বোচ্চ ৭৫-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রায় ৪৩ শতাংশ।

এসআর

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
হিলিতে কমেছে পেঁয়াজ-কাঁচা মরিচের দাম
বাংলাদেশ ও আমিরাতে ভারতের পেঁয়াজ কূটনীতি
রাজবাড়ীতে ‘কালো সোনা’ পেঁয়াজ বীজ চাষে স্বপ্ন দেখছে কৃষক
পেঁয়াজ আমদানিতে আমাদের ঝুঁকি নিতে হয়েছে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
X
Fresh