• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জোর দিয়ে এ মাসেই মুদ্রানীতি ঘোষণা

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১২ জুলাই ২০১৭, ১৮:৫৭

চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে দেশের মুদ্রা ব্যবস্থা পরিচালনা এবং মুদ্রার যোগান ও ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতিতে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগের ওপর জোর দেয়া হবে।

আসছে ২৫ জুলাই গভর্নর ড. ফজলে কবির এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

নতুন এ মুদ্রানীতি তৈরিতে চলতি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, কেন্দ্রীয় ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্টজনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করছেন। বৈঠক থেকে তাদের মতামত ও প্রস্তাবনা নেয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান জানান, আমরা এ মাসের শেষ নাগাদ চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধের মূদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছি। তবে এর আগে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মূদ্রানীতি আরো কার্যকর করতে অর্থনীতিবিদসহ স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করবে। নতুন মূদ্রানীতিতে বিগত বছরের মত সরকারের জন্য ঋণ নেয়ার সুযোগ থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এক্সচেঞ্জ রেট সহনীয় পর্যায়ে আনতে হবে। খেলাপি ঋণ কমানোর বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া তিনি সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজর দেয়ারও পরামর্শ দেন।

এবারের মুদ্রানীতিতে রয়েছে মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ। কারণ গেলো তিন মাস ধরে মূল্যস্ফীতি অল্প অল্প করে বাড়ছে। সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচন ঘিরে এ বছর থেকেই বাজারে টাকার প্রবাহ বেড়ে যেতে পারে। আর এটি বাড়লে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ সম্পদ সীমিত থাকলে আর মানুষের হাতে বেশি টাকা থাকলে তখন বেশি মূল্য দিয়ে হলেও কাঙ্খিত পণ্য ভোগ করার প্রতিযোগিতা থাকে ভোক্তাদের মাঝে। ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা থাকছে। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি জিপিডি প্রবৃদ্ধি অর্জনকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মসংস্থান বাড়ানোর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে নতুন মুদ্রানীতিতে।

মঙ্গলবার পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল জানিয়েছেন, আগাম বন্যা ও বাজেটের প্রভাব মূল্যস্ফীতিতে পড়েছে। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ। জানুয়ারি থেকে মার্চে ছিল ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।

২০১৬-১৭ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়। ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত গড় বার্ষিক ভোক্তামূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বসীমা ধরা হয় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিলের শেষে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ছয় লাখ ৪৪ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময় শেষে তা ছিল পাঁচ লাখ ৫৭ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরে ঋণ বেড়েছে ৮৬ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা বা ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার পরিমাণ কমেছে। ফলে ১ বছরের ব্যবধানে সরকারের ঋণ নেয়ার পরিমাণ কমেছে ১৪ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা। সদ্য সমাপ্ত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৯৪ হাজার ৫২ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নিয়েছে সরকার। যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা।

এছাড়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-মে মেয়াদে বাংলাদেশে সামগ্রিক বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে ২৬৫ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ২১ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা।

এদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-মে মেয়াদে (প্রথম ১১ মাসে) নিট বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) হয়েছে ১৬২ কোটি মার্কিন ডলার বা ১৩ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। ফলে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি।

এমসি/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh