• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর হতে পারে ভ্যাট আইন

মিথুন চৌধুরী

  ২৮ জুন ২০১৭, ১৩:৫৩

২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সবচে’ আলোচিত বিষয় ছিলো ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আইন প্রস্তাব। কয়েক বছর ধরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে ভ্যাট আইনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটে বিধিমালাতেও বেশকিছু রদবদল করা হয়েছে। আইনটি পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর হবার কথা রয়েছে। তবে ১ জুলাই থেকে ভ্যাট আইন কার্যকর হবে কিনা তা জানা যাবে বৃহস্পতিবার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট পাসের পর।

২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে এ আইনটি কার্যকরের কথা থাকলেও ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে সরকার ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। তবে ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় গেলো বছরের বাজেট পাসের সময়ই।

কিন্তু এখন আবার নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের তারিখ পিছিয়ে ২০১৯ সালে নেয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছে।

নতুন ভ্যাট আইন ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা এবং ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ নির্ধারিত করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন।

তবে প্রস্তাবিত বাজেটের পর ব্যবসায়ীরা ভ্যাট হার ও ভ্যাট আইন নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তারা বলছেন, ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ইসিআর (ইলেকিট্রিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার) মেশিন আমদানি করা হয়নি, যা এনবিআরের আমদানি করার কথা ছিলো। ইসিআর মেশিন ছাড়া একজন বিক্রেতা কিভাবে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করেবে? এনবিআর দাবি করছে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে এনবিআর পুরোপুরি প্রস্তুত।

প্রস্তাবিত বাজেটের বিধিমালাতেও বেশকিছু রদবদল করা হয়েছে। একনজরে ভ্যাট আইনে পরিবর্তনগুলো দেয়া হলো:

১. টার্নওভার তালিকাভুক্তি সীমা ৩৬ লাখ টাকা পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেয়া হবে।

২. মূসক নিবন্ধন সীমা ৮০ লাখ থেকে বাড়িয়ে দেড় লাখে উন্নীত করা হয়েছে। ৩৬ লাখ থেকে দেড় কোটি টাকা বিক্রির পণ্যে ব্যবসায়ীকে ৪ শতাংশ হারে টার্নওভার কর দিতে হবে। দেড় কোটি টাকার বেশি বিক্রি হলে শুধু ভ্যাট নিবন্ধন নিতে হবে। ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে।

৩. নতুন বিধিমালা অনুযায়ী সরবরাহ ও তার অনুকূলে মূসক চালান থাকলেই রেয়াত গ্রহণ করতে পারবেন।

৪. সহযোগীর সংজ্ঞা থেকে আত্মীয় বাদ দেয়া হয়েছে।

৫. দেশীয় শিল্প যে ধরনের সুরক্ষা ১৯৯১ সালের আইন অনুযায়ী পেত, নতুন আইনের অধীনেও ওই সুরক্ষা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

৬. বাণিজ্য সুরক্ষার জন্য আমদানি পর্যায়ে ১ হাজার ৬৬৬টি এইচএস লাইনের আওতায় বিদ্যমান সব পণ্যে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

৭. দেশীয় সব সফটওয়্যার উৎপাদন ও সরবরাহকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

৮. বাংলাদেশে উৎপাদিত ফ্রিজ, টিভি, এসি, মোটরসাইকেলে বিদ্যমান অব্যাহতি বহাল রাখা হয়েছে।

৯. নিত্যপণ্যে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

১০. সব প্রকার কৃষিজ পণ্য, হাঁস-মুরগি, গবাদিপশু, পশুর মাংস, মাছ, ফলমূল, শাকসবজি, ভোজ্য তেল, চিনি, গুড়, লবণ, তুলা, পাট, রেসম সুতা ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।

১১. বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সব অস্থায়ী হোটেল ও রেস্তোরাঁ খাদ্যদ্রব্য সরবরাহকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষ যেসব হোটেলে খাওয়া দাওয়া করে তাতেও ভ্যাট হবে না।

১২. জীবনরক্ষাকারী প্রায় সব ওষুধে ভ্যাট উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।

১৩. সমাজকল্যাণ কার্যক্রমকে ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ কার্যক্রমে ৫ শতাংশ যে ভ্যাট ছিলো তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

১৪. কৃষিকাজে ব্যবহৃত উপকরণ, যেমন: বীজ, সেচ সেবা, কীটনাশক, যন্ত্রপাতি ভ্যাটের আওতার বাইরে।

১৫. ডেইরি, ফাউন্ড্রি, পাটশিল্পের কাজে ব্যবহৃত সব যন্ত্রপাতিতেও ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে।

১৬. সব ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ভ্যাটের আওতার বাইরে।

১৭. ব্যাংকিং ও বীমা খাতের কমিশন ছাড়া সব বিষয়ে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

১৮. জীবন বীমা সম্পূর্ণ ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

১৯. স্টক মার্কেট ও তার সব কাজে ভ্যাট প্রত্যাহার।

২০. কম্পিউটার ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশের নতুন করে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

এমসি/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh