• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ঈদ জমাতে এখন সবাই মার্কেটমুখী, বাড়ছে বিক্রিও

মিথুন চৌধুরী

  ১৬ জুন ২০১৭, ২৩:২৫

মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর কাছেই চলে এসেছে। দিনটিকে অনাবিল আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে উদযাপনে নানা আয়োজনে এখন ব্যস্ত সবাই।

ঈদ উল্লাস আরো বাড়াতে নতুন জামা কিনতে ছোট ও বড় বিপনীগুলোতে এখন ভিড়।

আর ক্রেতা আকর্ষণ বাড়াতে পোশাক ও তার আনুসঙ্গিক নানা পণ্যের সমাহার সাজিয়ে রেখেছে ক্রেতারা।

বিশেষ করে নানা রঙ-ঢঙের বৈচিত্র্যময় পোশাক তুলেছেন বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস, শপিংমলসহ খুচরা-পাইকারি মার্কেট ও পথের বাজারগুলোর ব্যবসায়ীরা।

পাশাপাশি মার্কেটে প্রতিবছরের মতো পণ্য ক্রয়ের সঙ্গে র‌্যাফেল ড্রসহ আকর্ষণীয় বিভিন্ন অফারও থাকছে।

সপ্তাহের ছুটির দিন শুক্রবারে রাজধানীর বসুন্ধরা, নিউমার্কেট, রাপা প্লাজা, আজিজ সুপার, মৌচাক মার্কেটগুলোতে এমন ব্যস্তময় চিত্র দেখা যায়।

শপিং মার্কেটগুলো তিল ধারণের ঠাঁই নাই। ক্রেতারা পছন্দের পণ্য পেতে ছুঁটে বেড়াচ্ছেন এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেট।

গেল সপ্তাহে ক্রেতার তুলনায় দর্শণার্থী বেশি থাকলেও আজ এর ভিন্ন চিত্র। ফলে বিক্রেতাদের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি।

বিক্রেতারা প্রত্যাশা করছেন, আসছে কয়েকদিনের মধ্যে ঈদকে কেন্দ্র করে বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতার পরিমাণ আরো বাড়বে। এদিকে ক্রেতাদের নিরাপত্তা বাড়াতে সব বিপনীবিতনগুলোতে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। বিভিন্ন স্থানে ক্রেতাদের প্রতি বাড়তি নজর বাড়তে সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি দেহ তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। তবে রাজধানীর ক্রেতাদের ট্র্যাফিক জ্যামে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়।

রাজধানীর সবচেয়ে জনপ্রিয় বিপণীবিতান বসুন্ধরা সিটির প্রবেশ পথ দিয়ে ভেতরে ঢুকলে চোখে পড়ে নতুন ব্যান্ডের গাড়ি ও মোটরসাইকেল। পাশাপাশি তাৎক্ষণিকভাবে দেয়া হচ্ছে র‌্যাফেল ড্রয়ের ছোট ছোট পুরস্কার। ঈদকে সামনে রেখে পার্কিং ব্যবস্থাও বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ। মার্কেটের প্রতিটি কোনায় কোনায় ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গহনার দোকান, জুতার দোকান ও মোবাইল মার্কেটে দেখা গেছে বেশি ভিড়। পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের সমাহার নিয়ে গড়া দেশি-দশে পছন্দের কাপড় কিনতে দেখা গেছে।

ঈদকে সামনে রেখে দেশি দশের বিভিন্ন দেশীয় ব্যান্ডগুলো নিয়ে এসেছে হাল আমলের নতুন নতুন ডিজাইন ও রঙের পোশাক। পাশাপাশি প্রতিটি ফ্যাশন হাউস নিত্যদিন শোরুমে নতুন নতুন ডিজাইনের কাপড় তোলায় ব্যস্ত। দেশি দশের ব্যান্ডগুলোতে ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকায় পাঞ্জাবী, ১২শ থেকে ৪ হাজার টাকায় থ্রিপিস, ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকায় ১ পিস বা ২ পিস, ১৬শ থেকে ৫ হাজার টাকায় শাড়ি ও ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বাচ্চাদের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। তবে দেশীয় এ শোরুমগুলোতে কাপড়ে দেশীয় নকশায় সিল্ক, সুতি কাপড় বেশি দেখা যায়।

এবারো ঈদবাজারে ক্রেতা আকর্ষণ বাড়াতে ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়াল ও মুভির নামে মেয়েদের পোশাক বেচাকেনা হচ্ছে। বিক্রেতারা পোশাকের গায়ে ঝুলিয়ে রাখছে এসব নাম। যা বিক্রি হচ্ছে এক দামে। এর মধ্যে রাউন্ড, বাহুবলি-২, রূপমতি, ঘাগড়া, সেলফি, সারারা, পাঞ্চু, বাজিরাও মাস্তানি, শারারা, সুলতান, ডার্লিং তেরে লিয়ে, মাস্তি নামের পোশাক চোখে পড়ে। এসব পোশাক পাওয়া যাচ্ছে ৬শ’ থেকে দশ হাজার টাকার মধ্যে।

এছাড়া গোয়েন্দাগিন্নী, উনিশ কুড়ি, বিবি নং-১ শাড়ির প্রতি নারীদের আকর্ষণও বেশি বলে জানা যায়। এছাড়া টপ কটন সিল্ক, শিফন, বর্ষা, লোন, গঙ্গা, অরগেন্ডি ও বিপুল ব্র্যান্ডের মেয়েদের পোশাক ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা ক্যাটালগ দেখিয়ে এসব পণ্য বিক্রি করছেন।

বসুন্ধরা সিটির নূরজাহান ফ্যাশনের বিক্রেতা ইমরান হোসেন বলেন, রোজার প্রথম দিকে বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি হয় বেশি। এরপর আসে শাড়ি ও সালোয়ার-কামিজ। আর শেষ দিকে ছেলেদের পাঞ্জাবি কেনাকাটা চলে। আজ সকাল থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম।

ঈদের কেনাকাটার ধুম পড়েছে রাজধানীর নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝেও। মার্কেটের মতো ফুটপাতেও উপচে পড়া ভিড়। রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, মৌচাক, বাড্ডা, নিউমার্কেটের ফুটপাতে দেখা দিয়েছে বেশ ভিড়। অনেকটা কম দামে জিনিসপত্র কিনতে পারছেন তারা। দোকানীরাও দিচ্ছে মার্কেটের চেয়ে কমে। কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, আমাদের দোকান ভাড়া লাগে না, কর্মচারী খাটাতে হয় না। তাই মার্কেটের চেয়ে ২০০-৩০০ টাকা কমে তারা পণ্য বিক্রি করে বিধায় নিম্ন, মধ্য আয়ের পাশাপাশি সব শ্রেণির ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়।

এমসি/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh