• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ঈদ বাজারে ভিড় হলেও জমেনি কেনাকাটা

মিথুন চৌধুরী

  ০৯ জুন ২০১৭, ২২:৪৪

ঈদের এখনো প্রায় ১৫ দিন বাকি। কিন্তু এরইমধ্যে রাজধানীর বিপনীবিতানগুলোতে দেখা দিয়েছে ঈদের আমেজ।

ছুটির দিনে শুক্রবার প্রায় দিনভর বিপনীবিতানগুলো ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড়।

তবে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এ ভিড় শুধুই পণ্য দেখার জন্য। মার্কেটে আগত মানুষের বেশির ভাগই পণ্য কিনছেন না। ঘুরে ঘুরে দেখছেন। পছন্দ হলে কিনে নিচ্ছেন তবে পরিমাণে তা খুবই কম।

রমজানের ২য় শুক্রবারে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি, নিউ মার্কেট, চাঁদনী চকে ঘুরে দেখা যায়, ছুটির দিনে সব বয়সী ক্রেতা-দর্শণার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মার্কেট।

পরিবার, বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে বাজারে এসেছেন অনেকে। যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

দোকানগুলোতে ঈদকে ঘিরে স্তরে স্তরে সাজানো হয়েছে নতুন নতুন বাহারি রং ও ঢংয়ের কাপড়। কেউ দর-দাম করছেন। কেউ বা পছন্দ হলে কিনে নিচ্ছেন।

এছাড়া বিক্রয়-কর্মীরাও ঈদ উপলক্ষে আসা নতুন ডিজাইনের কাপড় ও গুনাগুণ জানিয়ে ক্রেতাদের কেনার আগ্রহ তৈরির করার চেষ্টা করছেন।

দুপুরের পরপর বসুন্ধরা সিটি মার্কেটে ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন ডাক্তার সুজন আহাম্মদ। ছেলে-মেয়ের জন্য সালোয়ার-কামিজ, পাজামা-পাঞ্জাবি ও জুতা কিনে ফেরার পথে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদের এখনো বেশ দেরি। তবে ঈদুল ফিতর প্রতিবার গ্রামের বাড়িতে করি। রমজানের শেষের দিকে গাড়ির টিকিট কেনাকাটায় ও বাড়ি যেতে বেশ সময় চলে যায়। এতে শপিং করার সময় থাকে না। তাই আগেই কেনাকাটা করছি। আজ সন্তানদের জন্য কেনাকাটা সেরেছি। আমাদেরটা শনিবার না হলে পরের শুক্রবার কিনব।

দাম আগের তুলনায় একটু বেশি হওয়ার কথা জানালেন পান্থপথ থেকে আসা শোভন। তিনি বলেন, ঈদ বাজার, দাম একটু বেশি রাখছেন। তবে ঈদের আনন্দ তো সবার তাই দু-একশ টাকা বেশি তো কিছু না। তবে পোশাক পছন্দ হওয়াটা বড় কথা।

মিরপুর থেকে মৌসুমী এসেছেন শাড়ি কিনতে। তিনিও বসুন্ধরার দেশি দশের বিভিন্ন দোকানে ঘুরছেন। বেশ কয়েকটি মসলিন, জামদানি, তসর বা সিল্ক শাড়ি দেখেছেন। তার চাই গোলাপি আর নীলের মিশ্রণের একটি শাড়ি। ঈদে সালোয়ার-কামিজ কিনেছেন। মা, শাশুড়ির জন্যও কেনা শেষ।

এবার ঈদে ভারতের খাড্ডি শিফন, খাড্ডি বেনারসিসহ কয়েক ধরনের শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামের এ শাড়িগুলো অনেকটা চুন্দ্রি ধাঁচের, কুঁচকানো। শাড়ি কেনার পর তা ইস্তিরি করে সোজা করা হয়। এ দোকানে কাঞ্জিভরম, গাদুয়ান, তসরসহ বিভিন্ন শাড়ির পাশাপাশি বিয়ের শাড়ি ও লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে।

কলাবাগান থেকে পেশায় ব্যাংকার জান্নাতুল ফেরদৌস মাকে নিয়ে জুতা কিনতে এসেছেন বাটা শো রুমে। কী ধরনের জুতা খুজছেন, জিজ্ঞেস করলে বলেন, চাকরি যেহেতু করি, কমফোর্টের কথা চিন্তা করতে হয়। আবার একটু ফ্যাশনেবলও হলে ভালো হয়। নিজের জন্য মাঝারি হিল আর মায়ের জন্য একটু নরম সমান্তরাল জুতা কিনবেন তিনি।

বসুন্ধরা সিটির স্টাইল গার্লসের সত্ত্বাধিকারী খোরশেদ আলম জানান, বাজিরাও মাস্তানি, বজরঙ্গি ভাইজান এবং সারারা নামের ভারতীয় পোশাক ক্রেতারা বেশি কিনছেন। বাজিরাও মাস্তানি পোশাক পাঁচ পিস, তিন পিস ও এক পিসের হয়। এক পিসেরগুলো গাউনের মতো। পাঁচ পিসের এ পোশাক লেহেঙ্গা বা সালোয়ার-কামিজ-দুভাবেই পরা যায়। এ কারণে ক্রেতাদের এ পোশাক বেশি পছন্দ।

দেশি দশে রঙ এর পাঞ্জাবি দেখছিলেন অরণ্য চৌধুরী। অরণ্য বলেন, ঈদে বরাবরই ছেলেদের পছন্দের তালিকায় প্রথমে থাকে পাঞ্জাবি। মূলত পাঞ্জাবি দিয়ে ছেলেদের কেনাকাটা শুরু হয়। ঘুরে ঘুরে দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নেব।

এদিকে দেশি দশের বিভিন্ন শোরুমে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে কাটিং, কাপড়, প্যার্টান সবকিছুতেই পরিবর্তন করে পাঞ্জাবির ভিন্ন কালেকশন সাজিয়েছে ফ্যাশন হাউসগুলো। এরইমধ্যে অন্যতম লাল, নীল, সবুজ, খয়েরি, কমলা, বেগুনী, কালো, সাদা, ছাই ইত্যাদি। একরঙা পাঞ্জাবি রয়েছে ছেলেদের পছন্দের শীর্ষে।

এছাড়া দুপুরের পর নিউমার্কেটে গিয়ে পোশাকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। সারাদিন রোজা রেখে অনেককে ক্যাফেটেরিয়ায় ইফতার করতে দেখা গেছে। অনেকে ক্যাফেটেরিয়ায় ইফতার করার স্থান না পেয়ে মার্কেটের রাস্তায় পত্রিকায় বসে ইফতার করতে দেখা যায়।

রমজানের শুরুতে ক্রেতা উপস্থিতি আশানুরূপ বলে স্বস্তির প্রকাশ করছেন নিউমার্কেটের বিক্রেতারা। তারা বলেন, মানুষ আসছে, দেখছে, ফিরছে পছন্দের পোশাক নিয়ে। ১১ রোজা পার হয়েছে। আবার আজকে ছুটির দিন। বিক্রিও বেশ ভালো। তবে শনিবার ছুটির দিনে বাজার জমবে বলে আশা করছেন বেশির ভাগ বিক্রেতারা।

এমসি/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh