• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

চট্টগ্রামের বাজার

ছোলা ও চিনি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে

জয়নুল আবেদীন, চট্টগ্রাম

  ০৮ মে ২০১৭, ২০:৫৭

মাহে রমজানের আমেজ এরই মধ্যে পেতে শুরু করেছে দেশবাসী। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আসছে ২৮ মে রোজা শুরু হতে পারে। আর এ সুযোগটাকে পূঁজি করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। আমদানী ব্যায় বৃদ্ধি অজুহাতে তারা বাড়িয়ে দিয়েছে রমজান অনুসঙ্গ ছোলা ও চিনির দাম।

এমনকি জেলা প্রশাসকের বেঁধে দেওয়া দামকেও তোয়াক্কা করছে না ব্যবসায়ীরা। সোমবার চট্টগ্রামের বৃহৎ পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জে এমন চিত্র ফুটে ওঠে।
খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি চিনি ৫ থেকে ৭ টাকা বৃদ্ধি করে বিক্রি করা হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। প্রতি কেজি ছোলা ৫ থেকে ৮ টাকা বৃদ্ধি করে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে গেল শনিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ছোলা ও চিনির দাম বেঁধে দেন। এতে প্রতি কেজি ছোলা পাইকারি পর্যায়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হবে। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হবে পাইকারি পর্যায়ে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় এবং খুচরা পর্যায়ে ৬২ থেকে ৬৩ টাকায় বিক্রি করার কথা ঘোষণা দেন। কিন্তু দুই দিন না ঘুরতেই ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো দাম নির্ধারন করে বাড়তি দামে বিক্রি করছে রমজান অনুসঙ্গ।

সরকারি হিসেবে দেশে বছরে ছোলা চাহিদা ১লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন। রমজান মাসে এ চাহিদা আরো বৃদ্ধি পায়। এ বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ছোলা আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার টন। এছাড়াও মিয়ানমার থেকে আসছে বিপুল পরিমাণ ছোলা।

দেশে বছরে চিনির চাহিদা রয়েছে ১৫ লাখ টন। গেল মার্চ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে আড়াই লাখ টনের বেশি চিনি। এ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া দেশের মিলগুলোও উৎপাদন করে এক থেকে দেড় লাখ টন চিনি। রমজান আসতে না আসতে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পাইকারি ক্রেতা ও ভোক্তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে বেশ ক্ষোভ।

কাজীর দেউড়ি বাজারের বাবুল স্টোরের মালিক শাহাবুদ্দীন আরটিভি অনলাইনকে জানান, প্রতিদিন ক্রেতাদের সাথে পণ্যের দাম নিয়ে তর্কাতর্কি করতে হয়। পাইকারি বাজারে প্রতিদিন চাল, চিনি, ছোলার দাম বাড়ছে। এর ফলে দীর্ঘদিনের ক্রেতার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জে দিনমজুরের কাজ করেন মোস্তাফা আলম নামের একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি আরটিভি অনলাইনকে জানান, যে হারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে তাতে তো মনে হয় আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। আমাদের তো মজুরি বাড়ে নাই। গেল ৩ বছর থেকে বস্তায় মজুরি তো ৫ টাকাই আছে।

রিক্সাচালক নুরন্নবী জানান, কড়া রোদে ঘাম ঝরিয়ে যা টাকা পয়সা ইনকাম করি তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হয়না। ছেলে মেয়ে নিয়ে ৫ জনের সংসার এর ওপর ঘরভাড়া। চাল কিনতেই সব টাকা শেষ। দরকারি জিনিসের এভাবে দাম বাড়লে খামু কি।

নগরীর কাজীর দেউড়ি বাজারের এক ক্রেতা জানান, মধ্যপ্রাচ্যের রমজানে দ্রব্যমূল্য কমিয়ে দেয়। আর আমাদের দেশে রমজানে দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়। সিন্ডিকেট করেই দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে প্রশাসনের অভিযান চান তিনি।

খাতুনগঞ্জের ছোলা আমদানিকারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল মদিনার পরিচালক ও চাকতাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ জেহাদি আরটিভি অনলাইনকে জানান, হঠাৎ করে ডলারের দাম বৃদ্ধি হয়েছে। মণ ৭৫০ ডলার যে ছোলা কিনেছি বর্তমানে ৯শ থেকে ৯৫০ ডলারে কিনতে হচ্ছে। দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো হাত নেই।

খাতুনগঞ্জের চিনির সোল এজেন্ট মীর আহমদ গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, মিল মালিকদের সরবরাহ কম থাকলে বাজারে চিনির ঘাটতি থাকে। ফলে দাম বৃদ্ধি পায়। আপনারা মিল মালিকদের কাছে যান। তারা এক ট্রাক মাল দিতে ১৫ দিন ঘুরায়।

তবে ডালের দাম কম রয়েছে। খেসারী, মুগডাল, মাসকলাই এর দাম কমেছে। মুগ ডাল ১২০ টাকা, দরে। মাসকলাই ১৩৫, ছোলার ডাল ৯০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৩০ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মান বেধে ৫ লিটার বোতলের সয়াবিন ৪৮০ থেকে বেড়ে ৫০৫ টাকা। পাম ওয়েল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এমসি/এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh