• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মৃত্যুর অনুমতি চাওয়া পরিবারের পাশে ভারতীয় হাসপাতাল

মাজেদুল হক মানিক, মেহেরপুর

  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:১২

মেহেরপুরে মৃত্যুর অনুমতি চাওয়া সেই তিন জনের চিকিৎসায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলো ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থিত নিউরোজেন ব্রেইন অ্যান্ড স্পাইন ইনস্টিটিউট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। দুরারোগ্য ব্যাধি ‘ডুসিনি মাসকুলার ডিসট্রফি’ আক্রান্ত রোগীদের ভারতে নিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসার আগ্রহ প্রকাশ করায় আশার আলো দেখছেন দারিদ্র তোফাজ্জেল হোসেন। শুধু তাই নয়, তাদের সাহায্য করতে চীনও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

দু’ছেলে ও নাতির চিকিৎসা ও ভরণ-পোষণ ব্যয় মেটাতে ব্যর্থ তোফাজ্জেল হোসেন তাদেরকে মেরে ফেলার অনুমতি চেয়ে গেলো ১৯ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছিলেন। পরে দেশি ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে খবরটি দেখে ভারতীয় ওই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেন মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খানের সঙ্গে।

রোববার বিকেলে নূর খানের সঙ্গে ঢাকায় দেখা করেন তোফাজ্জেল হোসেন। তার চিকিৎসার সব কাগজপত্র দেখান তাকে।

তোফাজ্জেল হোসেন জানান, তার মোবাইল ফোনের নম্বরসহ দরকারি কাগজপত্র নূর খানকে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে যোগাযোগ করবে জানান নূর খান।

এদিকে, ভারত থেকে এই সাহায্যের খবর শুনে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তোফাজ্জেল। তিনি গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গণমাধ্যমের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। তার সন্তান ও নাতির চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসছেন বিভিন্ন সংস্থা। এজন্য সব অবদানই গণমাধ্যমের।

মৃত্যুর আবেদনের বিষয়টি গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রকাশ হলে দেশের অনেক সহৃদয় ব্যক্তিও তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন।

মেহেরপুর শহরের বেড়পাড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তোফাজ্জেল হোসেন দুই ছেলের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে গিয়ে ভিটেমাটি সব বিক্রি করেছেন। তাদেরকে নিয়ে ঘুরেছেন বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে। কিন্তু মারণব্যাধি ‘ডুসিনি মাসকুলার ডিসট্রফি’ রোগের কোন ওষুধ বিশ্বে আজো আবিষ্কার হয়নি। বড় ছেলে আবদুস সবুর (২৪), ছোট ছেলে রায়হান হোসেন এবং নাতি সৌরভ হোসেন (৮) এ রোগে আক্রান্ত। বড় ছেলে এখন বিছানায় পড়ে আছেন। ছোট ছেলে কোনরকম চলাফেরা করতে পারলেও নাতি কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হাবিব ইখতেখার আহমাদ জানান, সাধারণত মায়েদের কাছ থেকে ছেলেরা এ রোগে আক্রান্ত হয়। মায়েদের থেকে মেয়ে সন্তান আক্রান্ত হয় না। তবে ওই মেয়ের গর্ভের পুত্র সন্তানও একই রোগে আক্রান্ত হতে পারে-যা এই পরিবারের বেলায় ঘটেছে। ক্রোমোজমগত কারণে ছেলেদের এ রোগ হয়। প্রথমে তারা হাঁটার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে শরীরের মাংসপেশী জমাট বেধে পঙ্গুত্ব এবং মৃত্যুবরণ করেন।

এসএস/এসজেড

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh