• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ফুল চাষীর ঘুম হারাম করেছে প্লাস্টিক ফুল

শানে আলম সজল

চট্টগ্রাম

  ২১ জানুয়ারি ২০১৭, ১৯:১১

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ফুল চাষ শুরু হয় দু’যুগ আগে। প্রথমে বাণিজ্যিক ফুল চাষে কৃষক তেমন আগ্রহী না হলেও দিনে দিনে কৃষক ফুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠে।তাদের চাষ করা ফুল দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রপ্তানি হয়েছে বিদেশেও।

ফুল চাষ হাসি ফুটায় হাজার হাজার কৃষকের মুখে। কিন্তু বর্তমানে কৃষকের হাসি মুখ মলিন হয়ে উঠেছে। কারণ এখন নানা অনুষ্ঠানে কাঁচা ফুলের চাহিদা মেটাতে মানুষ কৃত্রিম ফুলের দিকে ঝুকছে।

কৃষকরা জানায়, কৃত্রিম ফুল বাজারে আসায় কাঁচা ফুলের চাহিদা কমে গেছে। এজন্য কাঁচা ফুলের দাম আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। এখন ফুল চাষ করে যে দাম পাওয়া যায় তাতে খরচই উঠে না।

সরেজমিনে খাগরিয়ার চরে দেখা যায়, সবজি ক্ষেতের পাশাপাশি বাণ্যিজিকভাবে চাষ হচ্ছে গাদাঁ, গ্ল্যার্ডিওলাস, গোলাপ, স্টার, জিপসি, রঙ্গিন স্টিক, সাদা স্টিক ও বেলী ফুল। ফুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে পুরো এলাকা। প্রাকৃতিক অপরূপ শোভা পাচ্ছে বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে।

সাতকানিয়ায় চলতি বছরে ২ হেক্টর গাদাঁ, ৪ হেক্টর গ্ল্যার্ডিওলাস ও রঙ্গিন-সাদা ষ্টিক, ২ হেক্টর গোলাপ, ৬ হেক্টর স্টার ও ১ হেক্টর জমিতে জিপসি মিলিয়ে মোট ১৫ হেক্টর জমিতে ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়েছে।

চরখাগরিয়া রসুলপুর এলাকার ফুল চাষী আব্দুর রশিদ বাহাদুর আরটিভি অনলাইনকে বলেন,গেলো ৩ বছর আগে ফুলের দাম বেশি ছিল। ফুল চাষ করে কৃষক লাভবান হয়। কিন্তু এখন প্লাষ্টিকের ফুল বাজারে আসার কারণে ফুলের ভাল দাম পাচ্ছে না কৃষক। গেলো দু’ বছর আগে একটি রঙ্গিন ষ্টিক ফুল (গ্ল্যার্ডিওলাস) ১৫-১৮টাকায় বিক্রি করতে পারলেও এখন তা ৪-৫ টাকায় বিক্রি করতে হয়।

আব্দুর রহিম নামে আরেক ফুল চাষী আরটিভি অনলাইনকে বলেন, বর্তমানে শ্রমের দাম বেড়ে গেছে। আমরা ফুল চাষ করে লাভ করতে পারছি না।

খাগরিয়া ইউনিয়নের ফুলচাষী হাফেজ মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন বলেন, এক সময় শখের বশে ফুল চাষ করলেও এখন আমরা বাণিজ্যিক ভাবে ফুল চাষ করছি। অপর চাষী মোহাম্মদ রফিক বলেন, এখন ফুলের বাজার ভাল নয় কোন রকমে চলছি আমরা। ফুলের বাজারে চাহিদা বাড়লে বেশি লাভ হবে।

এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শোয়েব মাহমুদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, সাতকানিয়ার ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ হচ্ছে। আমরা ফুল চাষীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। ফুল চাষে সফলতা আসায় দিন দিন চাষীর সংখ্যা বাড়ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাষীরা জানিয়েছেন সরকারিভাবে ফুল চাষে তারা কোন সাহায্য সহযোগীতা পাচ্ছেন না। কৃষি অধিদপ্তর থেকে তাদের কোন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে না। চাষীরা মনে করেন ফুল চাষের জন্য চরখাগরিয়ার চর সবচে ভালো জমি। ফুল চাষে যদি সরকারিভাবে বাড়তি সাহায্য সহযোগীতা পাওয়া যায় তাহলে চরখাগরিয়ায় ফুল চাষের সুদিন ফিরে আসবে।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh