• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

অবহেলায় পর্যটন শহরের একমাত্র শিশুপার্ক

ইয়াছিন রানা সোহেল, রাঙামাটি

  ১৭ জানুয়ারি ২০১৭, ১৩:৩৭

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রূপের রানী খ্যাত রাঙামাটিতে পাহাড়, ঝর্ণা ও কাপ্তাই লেকসহ অসংখ্য দর্শনীয় স্থান থাকলেও শিশুদের বিনোদনের জন্য নেই কোনো শিশু পার্ক। জেলা শহরের একমাত্র শিশু পার্কটিতে ২০০৫ সালে তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান একটি কমিউনিটি সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নিলেও স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন গ্লোবাল ভিলেজের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়। পরবর্তীতে আদালত এটির মালিকানা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে এটিকে পূর্ণাঙ্গ পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশ দেন।

শহরের একমাত্র শিশু পার্কটি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকায় একদিকে যেমন শহরের শিশু-কিশোরদের মেধা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি এই পার্কের ভিতরেই প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড। দিনের বেলায় মাদকসেবীদের নিরাপদ আড্ডাস্থল আর রাতের আধারে চলে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ।

এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পার্কটি অবহেলায় পড়ে থাকায় দিনদিন এটি অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হচ্ছে। পার্কের পাশ দিয়েই যেতে হয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের। স্কুল কলেজগামী ছাত্রীদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে বখাটেরা। আর সন্ধ্যার পর পর্যটকদেরও নানাভাবে এখান থেকে হয়রানি করা হয়।

এরইমধ্যে পার্কটি দ্রুত চালু করার জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকেও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।

পার্কটির অভ্যন্তরে ২০০৫ সালে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ বন্ধ করার দাবিতে হাইকোর্টে রিটকারী পরিবেশবাদী সংগঠন গ্লোবাল ভিলেজের নির্বাহী পরিচালক ফজলে এলাহী জানান, কমিউনিটি সেন্টার করার বরাদ্দ ছিল শিশু পার্কের নিচের অংশ থেকে। অর্থাৎ মূল পার্কটিকে ঠিক রেখেই এর পরিকল্পনা আর অর্থায়ন হয়েছিল। কিন্তু পৌর চেয়ারম্যানের এক নিকটাত্মীয় কাজটির ঠিকাদার হওয়ায় পার্কটির মূল জায়গার উপরেই কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের কাজ শুরু করে। আমরা এর প্রতিবাদ করি। কিন্তু চেয়ারম্যান তাতে সাড়া না দিয়ে কাজ এগিয়ে নিতে থাকেন। এক পর্যায়ে আমরা হাইকোর্টে রিট করি।

তিনি আরো বলেন, লোকজন পার্কটিকে পৌর কর্তৃপক্ষের বলে জানলেও রিট করার পর বিভিন্ন কাগজ-পত্র দেখে বুঝতে পারি আসলে পার্কটি পৌরসভার নয়। এটির প্রকৃত মালিক জেলা প্রশাসন। ফলে দীর্ঘদিন পর কোর্ট পার্কটির মালিকানা জেলা প্রশাসনের হাতে ন্যস্ত করে এটির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। পৌরসভা স্থাপনা উচ্ছেদ করার পর এর সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈয়বিয়া আইডিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষ মো. আখতার হোসেন চৌধুরী জানান, শিশুদের বিনোদনের একমাত্র পার্কটি সংস্কারহীন পড়ে থাকায় শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রসস্ত হচ্ছে। এটিকে সংস্কার করে শিশু-কিশোরদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হলে তারা বিনোদনের সুযোগ পাবে।

এদিকে দীর্ঘদিন পর আশার বাণী শুনালেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে শীঘ্রই এটির সংস্কার কাজ শুরু হবে। এটির সংস্কারের জন্য পূর্ববর্তী জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন উন্নয়ন বোর্ডের কাছে প্রায় দু’কোটি টাকার একটি প্রকল্পও জমা দেন। সেই প্রেক্ষিতে উন্নয়ন বোর্ড প্রাথমিক পর্যায়ে ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়। শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে।

ওয়াই/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh