• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

অনলাইন ডেস্ক
  ২৮ জুলাই ২০১৬, ১৪:১২

টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বেশ কয়েকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বাড়ছে বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ।বন্যা দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। বন্যার পানিতে ডুবে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় এক ব্যক্তি মারা গেছেন।

প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদে বন্যা পরিস্থিতির চিত্র:

লালমনিরহাট: ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধিতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।তিস্তার পানি প্রবাহ বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করলেও ধরলার পানি প্রচন্ড গতিতে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। ফলে ধরলার নদী তীরবর্তী এলাকা ও আশপাশের অন্তত হাজার হাজার পরিবার নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার একশ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো সূত্র জানায়, ধরলা পাড়ের লোকজনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। অনেকেই ঘর বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। পানি প্রচন্ড গতিতে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধরলার পানি ১’শ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীতে অস্বাভাবিক পানি বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে ডুবে ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের উত্তর খাটিয়ামারি গ্রামের লালচান মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তি মারা যান।

জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩ লাখ মানুষ। ফুলছড়ি বাজার হাটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় বন্যার্তরা গবাদিপশুসহ পরিবার পরিজন নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে। বন্যা কবলিত মানুষের বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার, গবাদি পশুর খাদ্য ও পয়ঃনিস্কাশন সংকটে পড়েছে।

জামালপুর: যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এতে করে পাঁচ উপজেলার ৩৩ টি ইউনিয়নের দেড়শ গ্রামের দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদী তীরবর্তী দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে ৩৩৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ২ হাজার ৪শ’ ৫০ হেক্টর জমি ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

সিরাজগঞ্জ: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বৃস্পতিবার সকালে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার নতুন করে আরো ৭টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এরফলে ১৩৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার চরাঞ্চলের ৭টি ইউনিয়ন বেড়ে এখন ৩১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। খাবার ও পানির সংকটে বন্যা কবলিতরা এখন দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।

এদিকে, ব্রহ্মপুত্রের পশ্চিম বাঁধে পানির চাপ বাড়ছে। অনেক জায়গায় প্রবল চাপ থাকায় বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বুধবার রাতে রানীগ্রামে বাঁধের নিচ দিয়ে পানি চুইয়ে পড়তে দেখে এলাকাবাসীর মধ্যে বাঁধ ভাঙার আতঙ্ক দেখা দেয়। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা গিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বালির বস্তা ফেলে তা নিয়ন্ত্রণে আনে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh