• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

গোবিন্দগঞ্জে কোটি টাকার গাছ কেটে সাবাড়

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

  ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:৪৮

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ সাপমারা ইউনিয়নের সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কের প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের প্রায় তিন হাজার ইউক্যালিপটাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটা হচ্ছে। এসময় গাছ কাটতে গিয়ে সড়কের উভয়পাশে কৃষকের আমন ধানের ক্ষেতও নষ্ট করা অভিযোগ উঠেছে।
সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আহম্মেদ বুলবুল ও সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য আব্দুল করিম যোগসাজশ করে এসব গাছ কেটে আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের বৈরাগীহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সড়কের চৌহুদপুর ও পজয়পুর গ্রামের সাড়ে চার কিলোমিটার অংশ জুড়ে সড়কের দু’পাশে স্থানীয় সামাজিক বনায়ন সমিতির আওতায় চার হাজার ইউক্যালিপটাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। এরমধ্যে প্রায় তিন হাজার জীবিত গাছ কাটার উপযোগী হওয়ায় তা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সামাজিক বনায়ন সমিতি। এসব গাছ দরপত্র আহ্বান ছাড়াই ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আহম্মেদ বুলবুল ও সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য আব্দুল করিম গোপন সমঝোতা করে রানু মিয়া নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
তারা আরও অভিযোগ করেন, তড়িঘড়ি করে শুধু দিনে নয়, রাতেও গাছ কেটে ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গাছ কাটার সময় সড়কের দু’পাশের জমিতে তা পড়ে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
অথচ নীতিমালা অনুযায়ী সড়কের পাশে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় লাগানো গাছের ১০ শতাংশের মালিক ইউনিয়ন পরিষদ। বাকি টাকা উপকারভোগী ও সড়কের পাশে জমির কৃষকরা পাবেন। সমিতির মাধ্যমে লাগানো গাছ বিক্রি করতে হলে অবশ্যই দরপত্র আহ্বান করতে হবে। এছাড়া গাছ কাটার করার পর পর আবার নতুন করে গাছ লাগাতে হবে।
কিন্তু সাপমারা ইউনিয়নের সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কের প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের প্রায় তিন হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটার সময় কোনও নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। বিক্রির সময় এক কোটি টাকা মূল্যের প্রায় তিন হাজার ইউক্যালিপটাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সংখ্যা কমিয়ে কাগজে কলমে ৮০৩টি দেখানো হয়েছে। যা ১৫ লাখ টাকায় কাইয়ারগঞ্জ এলাকার কাঠ ব্যবসায়ী রানু মিয়া কাছে বিক্রি করা হয়। বাকি প্রায় ৭০ লাখ টাকা মূল্যের ২ হাজার ২০০টি গাছ ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আহম্মেদ বুলবুল ও সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য আব্দুল করিমের মধ্যে ভাগাভাগি হয়।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আহম্মেদ বুলবুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দরপত্র আহ্বান না করে গাছ বিক্রি ও তিন হাজার গাছকে মাত্র ৮০৩টি দেখিয়ে বিক্রি করা এবং বাকি ২ হাজার ২০০ গাছ আত্মসাতের বিষয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে তিনি সামাজিক বনায়ন সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য আব্দুল করিমের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
গাছ ক্রেতা কাইয়ারগঞ্জ এলাকার কাঠ ব্যবসায়ী রানু মিয়া জানান, প্রায় দুইবছর আগে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে ৮০৩টি গাছ আমি কিনে নেই। সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাকিল আহম্মেদ বুলবুল ও সামাজিক বনায়ন সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য আব্দুল করিমের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এসব গাছ কিনা হয়েছে। গত তিন মাস আগে আমি গাছ কাটা শুরু করি। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে হঠাৎ চেয়ারম্যান গাছ কাটা বন্ধ করে দেন। বর্তমানে চেয়ারম্যান নিজেই লোক দিয়ে আমার কেনা বাকি গাছগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।
সামাজিক বনায়ন সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য আব্দুল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, উপকারভোগী হিসেবে আমরা গাছগুলো ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুলের মাধ্যমে কাঠ ব্যবসায়ী রানু মিয়ার কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। তবে গাছের সংখ্যা কতো, তিনি তা বলতে পারেন না। এ ব্যাপারে তিনি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
আরও পড়ুন :
এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে গাছে ধাক্কা দিয়ে উড়ে গেল বাসের ছাদ, নিহত ১
‘পরিবারের লোকজনও আমাদের শুধু টাকার গাছ মনে করে’
পঞ্চগড়ে গাছের ডালের আঘাতে শ্রমিকের মৃত্যু
ছাগলে আম গাছের পাতা খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ১
X
Fresh