• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

অজানা কারণে দৌলতদিয়া ঘাটে বন্ধ সিসি ক্যামেরা, তৎপর অপরাধীরা

এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী

  ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১০:৫৪

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার বলা হয় রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাটকে।

দৌলতদিয়া টু পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন ও লক্ষাধিক যাত্রী পদ্মা পাড়ি দেয়। লঞ্চ ও ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিতে ঘাটে আসা এসব যাত্রীদের নানা ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

ঘাটে সক্রিয় থাকা পকেটমার, ছিনতাইকারী, মলমপার্টি, দালালসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের দৌরাত্ম্য কমাতে ২০১৬ সালে দৌলতদিয়া ঘাটের বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপন করা হয় সিসি ক্যামেরা। তবে স্থাপনের পর থেকেই অপরাধীদের গলার কাটা হয়ে যাওয়া এসব ক্যামেরা বেশি দিন আলোর মুখ দেখতে পারেনি।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে অপরাধীদের তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে ঘাটের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের স্থাপিত সিসি ক্যামেরাগুলো দীর্ঘদিন ধরে অজানা কারণে বিকল রয়েছে। ক্যামেরাগুলো বিকল থাকায় ঘাট এলাকায় বিভিন্ন অপরাধী চক্রের দৌরাত্ম্য কয়েকগুণ বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ ও ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের জুন মাসে রাজবাড়ীর তৎকালীন পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির দৌলতদিয়া ঘাটকে অপরাধমুক্ত ও যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘাটের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেন। সিসি ক্যামেরাগুলো স্থাপনের পর থেকে ঘাটে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রেখে আসছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সিসি ক্যামেরাগুলো বিকল হয়ে পড়ে থাকলেও অদৃশ্য কারণে এ ক্যামেরাগুলো সচল করার কোনও উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পর থেকেই ঘাট সংশ্লিষ্ট অপরাধীরা তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে করতে ক্যামেরার ক্যাবল (সংযোগ তার) কাটা, ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে রাখাসহ বিভিন্নভাবে ক্যামেরাগুলো বিকল করে রাখতো। কিন্তু তৎকালীন পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় খুব কম সময়ের মধ্যেই তা মেরামত করে সচল করা হতো। এছাড়া ঘাটে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরাও ক্যামেরাগুলো সচল রাখতে এর প্রতি বিশেষ নজর রাখতেন। কিন্তু সিসি ক্যামেরা স্থাপনের চার মাসের মাথায় পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির রাজবাড়ী থেকে পাবনা জেলায় বদলী হয়ে যান। এরপর থেকেই সিসি ক্যামেরাগুলো যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।

-----------------------------------------------------
আরও পড়ুন : পুকুরে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু
-----------------------------------------------------

ঘাট সংশ্লিষ্ট অনেকেই অভিযোগ করেন, সিসি ক্যামেরা না থাকায় স্থানীয় দালাল চক্র নির্বিঘ্নে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সিরিয়াল তৈরি হয়। এতে করে দীর্ঘ সময় যানবাহন আটকে থেকে ঘাটে সাধারণ যাত্রী ও চালকরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহান। আর এরই মধ্যে সংঘবদ্ধ দালাল চক্র আরও সক্রিয়তার সঙ্গে তাদের কর্মকাণ্ড চালান।

অভিযোগ রয়েছে, দৌলতদিয়া ঘাটে দালাল না ধরলে কোনও পণ্যবাহী ট্রাক ফেরির সিরিয়াল পায় না। এছাড়া ছিনতাই পকেটমারের মতো ঘটনা তো প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে।

একে ট্রাভেলস পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম জানান, ঘাটের সিসি ক্যামেরাগুলো সচল থাকলে ঘাট এলাকার সব ধরনের অনিয়ম কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেকটা অসুবিধায় থাকে অপরাধী চক্র। দ্রুত সিসি ক্যামেরাগুলো চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই।

পরিবহনের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারা জানান, দালালদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর অবস্থানের কারণে মাঝে মধ্যেই গোয়েন্দা পুলিশ ঘাটে অভিযান চালিয়ে দালাল চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে। সিসি ক্যামেরাগুলো সচল থাকলে দালালসহ অন্যান্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য আরও অনেক সহজ হবে।

বিআইডাব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সিসি ক্যামেরাগুলো অচল হয়ে পরে আছে। এতে করে ঘাট এলাকার বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।

ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আবুল হোসেন জানান, গত মার্চ মাসে রাজবাড়ীর নতুন পুলিশ সুপার যোগদানের পরই তিনি ঘাটের সিসি ক্যামেরাগুলো সচলের উদ্যোগ নেন। ইতোমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশাকরি শিগগিরই সবগুলো সিসি ক্যামেরা সচল করা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন :

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের চাপ কম
দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
প্রমাণ মুছতে সিসি ক্যামেরা নষ্ট করে অস্ত্রের মুখে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৯
দূষণ রোধে খালের পাড়ে বসানো হবে সিসি ক্যামেরা
X
Fresh