• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

খুঁটি নাই, লাইন নাই, সংযোগ নাই, তবু ৪২ জনের নামে ২ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল!

হাসান-উল-আজিজ, লালমনিরহাট

  ১৪ জুলাই ২০১৮, ১৭:৩১

খুঁটি-লাইন-সংযোগ কিছুই নাই অথচ ৪২ পরিবারের নামে বিদ্যুতের বিল দুই লাখ ১৮ হাজার ৯৯৯ টাকা। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। দ্রুত ভুয়া বিল বাতিল এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেছেন তারা।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী ছোট্ট একটি গ্রামের নাম মহিষাশ্বহর। গ্রামটিতে অধিকাংশই হতদরিদ্র আর অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী। উন্নয়নের ছোঁয়া একদম নেই বললেই চলে। এ গ্রামের ৪২টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসে ২০১৫ সালে আবেদন করে। আবেদনের পরপরই এক শ্রেণির দালালচক্র তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার আশ্বাস দেয়। সহজ-সরল গ্রামবাসীর অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে তিন মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বলে দালালচক্রটি হাতিয়ে নেয় অন্তত ১০ লক্ষাধিক টাকা। এদিকে তিন বছর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও ওই এলাকায় বসেনি কোনও বিদ্যুতের খুঁটি কিংবা মিটার। এমনকি নকশাও তৈরি হয়নি। ফলে বিদ্যুতবিহীন রয়েছে ওই গ্রামটি।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা আক্ষেপের সুরে জানান, আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মহিষাশ্বহর গ্রামের বিদ্যুতহীন ৪২ গ্রাহকের বিদ্যুতের সংযোগের জন্য বিগত তিন বছর দুই মাস আগে আবেদন করা হয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কালীগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে। আবেদনের পর বিদ্যুতের স্থানীয় চিহ্নিত একটি চক্র প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে মিটার প্রতি ১২-১৮ হাজার টাকা বুঝে নেন এবং তিন মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও মিলেনি বিদ্যুতের খুঁটি, লাইন কিংবা মিটার। এরইমধ্যে সরকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বেসরকারি খাতে নেয়ার পরিকল্পনা হাতে নেয়। নিয়ম অনুযায়ী পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় তাদের নতুন সংযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। এতেই বিপাকে পড়েন বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা ও দালাল চক্রটি।

এদিকে গ্রাহকদের চাপের মুখে গত বছর ওই গ্রামের ৪২টি পরিবারের জন্য ৪২টি মিটার পাঠানো হয়। খুঁটি কিংবা লাইন না পেয়ে গ্রাহকরা মিটারগুলো বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরইমধ্যে গত জুন মাসে ওই গ্রামের ৪২টি পরিবারের নামে জনপ্রতি ৫ হাজার ৯৩ টাকা হারে দুই লাখ ১৮ হাজার ৯৯৯ টাকার বিদ্যুৎ বিল পাঠায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নেসকো।