রোগীরা দুর্ভোগে পড়লে ব্যবস্থা: ভ্রাম্যমাণ আদালত
অভিযান চলাকালে হাসপাতাল বন্ধ করে যারা জনদুর্ভোগ তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানালেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম।
রোববার বিকেলে ম্যাক্সসহ তিনটি হাসপাতালে অভিযান শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি হিসেবে ডা. দেওয়ান মাহমুদ মেহেদি হাসান উপস্থিত ছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, নানান অনিয়মের কারণে ম্যাক্স হাসপাতালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অনিয়ম সংশোধনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
--------------------------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : ম্যাক্স হাসপাতালে অভিযান, চট্টগ্রামে চিকিৎসা বন্ধের ঘোষণা
-------------------------------------------------------------------------
এসময় ব্রিফিংয়ে সারোয়ার আলম জানান, এ অভিযানের সাথে রাইফার মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই। এটা আমাদের নিয়মিত অভিযানেরই অংশ।
সারোয়ার আলম বলেন, একজন নমুনা সংগ্রহ করছে, অন্যজন পরীক্ষা করছে আবার অ্যানালাইসিস করা হচ্ছে অন্য জায়গায়। এভাবে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে ম্যাক্সের ল্যাবে। এগুলো আসলেই পরীক্ষা হয়েছে কি না সেটাই তো নিশ্চিত না।
তিনি আরও বলেন, বায়োকেমিস্ট্রি ল্যাবে এইচএসসি পাস লোকজন চাকরি করছে। এখানে মিনিমাম স্নাতক ডিগ্রিধারী বা বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্নদের কাজ করার কথা। একটা হাসপাতাল চালাতে হলে অবশ্যই নমুনা পরীক্ষার নিজস্ব ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেটা তাদের নেই।
এদিকে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগের মুখে থাকা ম্যাক্স হাসপাতালে র্যাবের অভিযানের প্রতিবাদে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে মালিকরা।
রোববার দুপুরে নগরীর জিইসি মোড়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যালয়ে জরুরি সভা শেষে প্রাইভেট হসপিটাল অ্যান্ড ল্যাব ওনারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. লিয়াকত আলী খান এ ঘোষণা দেন।
লিয়াকত আলী বলেন, হাসপাতালগুলোতে ভর্তি থাকা রোগীরা এ ঘোষণার আওতায় পড়বেন না, তাদের চিকিৎসা চলবে। এদিকে হাসপাতাল মালিকদের এ ঘোষণার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি মুজিবুল হক খান।
গলাব্যথা নিয়ে গেলো ২৮ জুন বিকেলে নগরীর মেহেদীবাগের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দৈনিক সমকালের সিনিয়র রিপোর্টার রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী শিশুকন্যা রাইফা পর দিন শুক্রবার রাতে মারা যায়।
অভিযোগ ওঠে- কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটে। ‘রাইফাকে হত্যা করা হয়েছে’এ অভিযোগ তুলে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সংগঠনগুলো আন্দোলন এবং দায়ীদের বিচার দাবি করা হয়।
পরে ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে থেকে একটি কমিটি করে দেয়া হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটিও এ ঘটনার তদন্ত করে। সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন কমিটি বৃহস্পতিবার রাতে তাদের প্রতিবেদন দেয়।
এতে বলা হয়, চিকিৎসক ও ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে শিশু রাইফার মৃত্যু হয়েছে। রাইফার মৃত্যুর সঙ্গে সম্পৃক্ত তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাইফার মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রাইফার বাবা-মা যে অভিযোগ করেছিলেন, তার সত্যতা পাওয়া গেছে।
এতে আরও বলা হয়, রাইফা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তার রোগ নির্ণয় ও ওষুধ প্রয়োগ যথাযথ থাকলেও সে যখন খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয়, তখন চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলার দক্ষতা ও জ্ঞান তাদের ছিল না।
আরও পড়ুন :
পাগলা মসজিদে দিনে দান লাখ টাকা
এমসি/পি
মন্তব্য করুন