• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কোথায়-কেমন কাটবে পাহাড়ধসে মা-বাবা হারানো শিশুদের ঈদ

ইয়াছিন রানা সোহেল

  ১৪ জুন ২০১৮, ২০:২১

গত বছরের ১৩ জুনে রাঙামাটিতে ঘটে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড়ধসের এক বছর পার হলো। বিভীষিকাময় সেই পাহাড়ধসে মা-বাবাসহ আত্মীয় স্বজনদের হারায় জিহাদ, মীম, সুমাইয়া, ফারিয়া, রাকিব। দেখা যাক, এই বছর কোথায় আর কেমন কাটবে তাদের ঈদ?

১৩ জুন চোখের সামনেই পাহাড়ধসে নিহত হন জিহাদের বাবা জিয়া, মা কাজল বেগম ও আদরের একমাত্র ছোট বোন বৃষ্টি। অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া জিহাদকে মুমূর্ষু অবস্থায় মাটির ভেতর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় স্থানীয়রা।

খবর পেয়েই ছুটে যান তার বন্ধুর মা রুমা আকতার। পরম মমতায় নিজের ছেলের মতো করেই জিহাদকে বুকে টেনে নেন তিনি। জিহাদের দুই খালা ঢাকা ও চট্টগ্রামে এবং তার বড় চাচা সপরিবারে রাঙামাটি শহরে অবস্থান করলেও কেউ তার দায়িত্ব নিতে চাননি।

জিহাদের নানিও ঘটনার পর থেকে রয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। তিনি চেয়েছিলেন জিহাদকে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখতে। তার অন্য আত্মীয়রা চেয়েছিল তাকে আশ্রয় কেন্দ্র বা আনসারের হোস্টেলে রাখতে। কিন্তু কিশোর জিহাদ কোথাও থাকতে রাজি হয়নি।

তবে তাকে মায়ের স্নেহে বুকে টেনে নেন রুমা আক্তার। আনসারের পক্ষ থেকেও বলা হয়, রুমার বাসায় তাকে রাখতে। সেনা কর্মকর্তা জহির ও রুমার পরিবারের আছে এক ছেলে এক মেয়ে।

জিহাদের দায়িত্ব নেয়ার পর জহির-রুমার এখন দুই ছেলে এক মেয়ে। গেলো ঈদে এই দম্পতি দুই ছেলেকেই একই কালারের পাঞ্জাবি, জামা-কাপড় কিনে দেন। তাদের ছেলে জাকিরের মতো সাইকেলও কিনে দেন জিহাদকে। কিন্তু এবছর জিহাদ ঈদ করতে গেছে দাদুর বাড়িতে।

রুমা আক্তার জানান, জিহাদ যেন মা-বাবা আর বোনের শোকে শোকাতুর হতে না পারে সেজন্য তার সব চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করি। আমার সন্তানদের সঙ্গেই কাটে তার দিন। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায় থেকে আর্থিক সহযোগিতা এসেছে। সব টাকা জিহাদের নামেই রেখে দিয়েছি আমরা।

ঘটনার মাত্র পাঁচ মিনিট আগে ছোট শিশু মীম ও সুমাইয়া তাদের ঘর থেকে বের হয়। ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে বের হওয়ার কথা ছিল তাদের মা-বাবার। কিন্তু চোখের পলক ফেলতেই মাটির নিচে চাপা পড়েন তারা। খুঁজে পাওয়া যায়নি তাদের মরদেহ।

মীম-সুমাইয়ার আশ্রয় দিয়েছেন তাদের চাচা কাউছার। মীম এখন ক্লাস ওয়ানে পড়ে। আর সুমাইয়া মাত্র কথা বলতে শিখেছে। এবার দাদি, চাচা ও ফুফুর সঙ্গে ঈদ করবে তারা। চাচা কাউছার জানান, অনেকেই মেয়ে দুটিকে দত্তক নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি দিইনি।

মা হারা দুই বছরের ফরিয়া আর চার বছরের রাকিব ঘটনার দিন হারায় তাদের বাবাকে। এরপর তাদেরকে বুকে আগলে রেখেছেন চাচা অলি। তিনি জেলার লংগদু উপজেলার মাইনীতে একটি বেসরকারি স্কুলে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন।

গতবছর আশ্রয় কেন্দ্রে ঈদ কাটলেও এবছর দাদি, চাচার সঙ্গে ঈদ কাটবে ফারিয়া-রাকিবের।

কে/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ঈদযাত্রায় বেশি মৃত্যু মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়
৩০ বছর বয়সে ১৪ নারীর স্বামী সাঈদ
কক্সবাজারে ঈদ স্পেশাল ট্রেন লাইনচ্যুত
ঈদযাত্রায় সড়কে ঝরল ৩২০ প্রাণ 
X
Fresh