• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সেই যমজ দু’বোন তোফা-তহুরা পাচ্ছে নতুন ঘর

ফেরদৌস জুয়েল, গাইবান্ধা

  ২৭ মে ২০১৮, ১৫:২৬

দেশব্যাপী আলোচিত কোমরে জোড়া লাগানো যমজ দুইবোন তোফা-তহুরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে। মার হাত ধরেই তোফা-তহুরা হাঁটছে। একাই চেয়ারে বসে থাকতে পারে তারা।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে নানার বাড়িতে হাঁসি-কান্না ও খেলাধুলায় কেটে যাচ্ছে তাদের দিন।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম গোলাম কিবরিয়া আরটিভি অনলাইনকে জানান, ঢাকায় টানা চিকিৎসা শেষে গেলো ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে তারা ফিরে আসে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামের নানার বাড়িতে। এখনও সেখানেই আছে তারা। এখন শারীরিকভাবে ভালো আছে তোফা ও তহুরা, হেসে খেলে দিন কাটছে তাদের। সবসময় শিশু দু’টির সার্বিক খোঁজ খবর রাখছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরও বলেন, তোফা ও তহুরার নানার বাড়িতে বিদ্যুৎ নাই। তাই তাদের জন্য বাড়িতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়। কয়েক মাস পর তোফা ও তহুরা সুবাদে কাশদহ গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগও দেয়া হয়। তোফা-তহুরার নানার বাড়িসহ ওই গ্রামের অন্তত চারশ’ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। এবার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তোফা-তহুরা থাকার জন্য ঘর করে দেয়া হচ্ছে নানার বাড়িতে। গরম থেকে রক্ষার জন্য তাদের ফ্যানও দেয়া হয়েছে প্রশাসন থেকে।
মা শাহিদা বেগম আরটিভি অনলাইনকে বলেন, তোফা-তহুরা এখন ভালো আছে। তারা দু’জনে বুকের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবারও খাচ্ছে। এছাড়া তারা খেলছে ও বাড়ির উঠানে বাঁশ ধরে হাঁটা শিখছে। তহুরা এখনো মূত্র জটিলতায় ভুগছে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শে তহুরাকে ক্যাথেটার দিয়ে তিন ঘণ্টা পরপর প্রসাব করাতে হয়। সেটাও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া আর কোন সমস্যা নেই তাদের।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো বিষয়ে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করি। তারপর তাদের পরামর্শে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তবে সব মিলে এখন দু’জনে ভালো আছে। ঈদের পর তোফা-তহুরার বাকি দু’টি অপারেশন করার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসক।
নানা শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি দরিদ্র হওয়ায় বাড়িতে শুধু দু’টি ঘর আছে। একটি ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে নিজে থাকেন এবং অপর ঘরে ছোট ছেলে থাকে। ছোট ছেলের ঘরেই এখন তোফা-তহুরাকে নিয়ে থাকেন মেয়ে শাহিদা বেগম। এক সঙ্গে থাকতে গিয়ে তোফা ও তহুরার অনেক সমস্যা হয়। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে শিশু দু’টির জন্য আলাদা ঘরের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল আরটিভি অনলাইনকে বলেন, জন্ম নেয়ার পর থেকেই তোফা ও তহুরার পাশে ছিল স্থানীয় প্রশাসন। কয়েকদিন আগেও চিকিৎসার জন্য ঢাকা যাওয়া-আসার খরচ হিসেবে তাদের আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। তবে এবার শিশু দুটির বেড়ে ওঠার সুবিধার জন্য তাদের নানার বাড়িতেই আলাদা একটি ঘর করে দেয়া হচ্ছে।
২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কোমরে জোড়া লাগানো অবস্থায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে নানার বাড়িতে তোফা ও তহুরার জন্ম হয়। এরপর ৭ অক্টোবর তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মলদ্বার একটি থাকায় পরে ১৬ অক্টোবর প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয়। আবার ২০১৭ সালের ১লা আগস্ট তাদেরকে আলাদা করার জন্য করা হয় দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার। পরে সুস্থ হলে সে বছরেরই ১০ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় ফিরে আসে তোফা-তহুরা। পরে আবারও তহুরা অসুস্থ হলে গত বছরের ৮ অক্টোবর তহুরাকে ঢাকায় নেয়া হয়। দীর্ঘ সাড়ে চার মাস চিকিৎসা শেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নানার বাড়িতে ফিরে আসে তারা।
এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ইজারা নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কায় ছাতকে ১৪৪ ধারা জারি 
ঈশ্বরদীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০
ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ, নিহত ৩
নারকেল পাড়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৮
X
Fresh