মিষ্টি কুমড়ায় ভরপুর মানিকগঞ্জ
৮ হাজার টাকায় ১০০০ মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন
এবার মানিকগঞ্জে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় আর সঠিক পরিচর্যার কারণে এই সুফল এসেছে বলে মনে করছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার সাতটি উপজেলায় কমবেশি মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়। তবে, ঘিওর, মানিকগঞ্জ সদর, সাটুরিয়া ও সিংগাইর উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়। এবার জেলায় ৫ হাজার চাষি ৮৯০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেখানকার চাষিরা এবার ব্যাপকভাবে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন। অল্প পরিশ্রম আর অল্প খরচে বেশি মুনাফা হওয়ায় মিষ্টি কুমড়া চাষে ঝুঁকছেন চাষিরাও।
তারা বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষে খরচ হয় প্রায় ৮ হাজার টাকা। এতে মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন হয় প্রায় ১০০০টি। প্রতিটি মিষ্টি কুমড়ার পাইকারি বিক্রয়মূল্য ২০ থেকে ২৫ টাকা আর খুচরা বিক্রয়মূল্য প্রায় ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ছোট সাইজের কুমড়ার দাম একটু কম এবং বড় সাইজের কুমড়ার দাম একটু বেশি।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : কাঁধ-হাতে ৪ কেজি ওজনের টিউমার, মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছে জাকির
--------------------------------------------------------
বালিয়াখোড়া এলাকার আব্দুর রহিম জানান, এবছর তিনি ২ হাজার ৪৬০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন। পেঁয়াজ ও আলুর সঙ্গে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করাতে খরচ হয়েছে খুব কম। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারের ফলনও হয়েছে সন্তোষজনক। অন্যান্য ফসলের তুলনায় মিষ্টি কুমড়া চাষে ঝুঁকি ও শ্রম খুবই কম। এজন্য প্রায় ১৮ বছর ধরে নিয়মিতভাবে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে আসছেন তিনি।
স্থানীয় বাজারে খুচরাভাবে এতো কুমড়া বিক্রি করা সম্ভব নয় বলে তিনি পাইকারিভাবে জমি থেকেই চুক্তিতে সব কুমড়া বিক্রি করেছেন।
একই এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, অল্প পরিশ্রম আর অল্প খরচে মিষ্টি কুমড়ার চাষে লাভবান হওয়া যায়। গাছে পুরোপুরি ফলন আসার আগেই পাইকারিভাবে চুক্তিতে জমি থেকেই মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করা যায়। এছাড়া অন্যান্য ফসলের সঙ্গে মিষ্টি কুমড়া চাষ করা যায় বলে এলাকার অনেক কৃষকদের মধ্যে মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
পাইকারি ক্রেতা আবু রায়হান বলেন, রাজধানীর কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী, বাইপাইলে মানিকগঞ্জের মিষ্টি কুমড়ার অনেক চাহিদা রয়েছে। আর এ জেলার সঙ্গে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও বেশ ভালো। প্রতিবছরের মতো এবারও তিনি এ জেলা থেকে পাইকারিভাবে মিষ্টি কুমড়া কিনেছেন।
তবে আরেক পাইকারি ক্রেতা আসলাম মিয়া বললেন দুর্ভোগের কথা। তিনি বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মিষ্টি কুমড়া মজুদ করা যাচ্ছে না। আর সেই সঙ্গে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত পরিবহন খরচও। সবমিলিয়ে এবছর লাভ হবে কিনা তার আশঙ্কায় রয়েছেন পাইকারি ক্রেতারা।
মানিকগঞ্জ জেলার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে কুমড়ার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। জেলার প্রায় ৫ হাজার চাষি এবার মিষ্টি কুমড়া চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছে।
এসএস/এসআর
মন্তব্য করুন