না ফেরার দেশে মুক্তামনি
বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের ১২ বছরের কিশোরী মুক্তামনি আর নেই।
বুধবার সকালে সে নিজ বাড়িতে মারা যায়।
তার পরিবারের লোকজন আরটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তার বাবা ইব্রাহিম হোসেন জানান, কয়েক দিন ধরে তার অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। বিষয়টি ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের ডাক্তার সামন্ত লাল সেনকে জানানো হয়েছিল।
ফোন করে মুক্তমনির খোঁজখবর নিয়ে তিনি রোজার পরে আবারও মুক্তামনিকে ঢাকায় নিয়ে আরও কিছু পরীক্ষার-নিরীক্ষা করার কথা জানিয়েছিলেন।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : দুটি অমেরুদণ্ডী প্রাণি আবিষ্কার বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর
--------------------------------------------------------
সাতক্ষীরার কামার বায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহিম হোসেনের শিশুকন্যা মুক্তামনি বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে ডান হাত ফুলে বিকট আকার ধারণ করে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েও তার কোনো চিকিৎসা হয়নি।
গত বছর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশের পর প্রথমে স্বাস্থ্যসচিব মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
পরে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গেল বছর ১১ জুলাই মুক্তামনিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। মুক্তামনির চিকিৎসায় ১৪ সদস্যের টিম গঠন করা হয়।
সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে মুক্তামনির হাত রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত। তার ডান হাতে গাছের ছালের মতো বিরাট একটি স্তূপ রয়েছে, যার ওজন প্রায় ৮/১০ কেজি হবে। একই সঙ্গে এ রোগটি তার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
তারপর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করা হয় তার হাতের অতিরিক্ত মাংস পিণ্ড।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মুক্তামণিকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।
এবিষয়ে পরে ডা. সামন্ত লাল বলেন, তার রোগ বিষয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বি. কে ট্যাংয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টা কথা হয়।
ভিডিওতে মুক্তামণিকে দেখানো হয়। সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজপত্রও দেয়া হয়। কিন্তু ২৮ জুলাই ডাক্তার বি.কে ট্যাং সাফ জানিয়ে দেন তাদের পক্ষে মুক্তামণির চিকিৎসা করা সম্ভব নয়।
এরপরই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তার অস্ত্রোপচারের উদ্যোগ নেয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে মুক্তামনিকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন :
জেএইচ
মন্তব্য করুন