• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ধর্ষক শিক্ষকের বিচার চান ধর্ষিতাসহ বাবা-মা

মাদারীপুর প্রতিনিধি

  ০৯ মে ২০১৮, ১৬:০১
ধর্ষক শিক্ষক রবিউল ইসলাম

দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাকে ধর্ষণের পর ধর্ষণদৃশ্য ভিডিও করেছেন একই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। এমনকি ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে দুই বছর ধরে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।

এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষিশিক্ষার শিক্ষক রবিউল ইসলাম।

ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী বিয়ের জন্য চাপ দিলে রবিউল বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এরপর ছাত্রী বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানালে রবিউল ছুটি না নিয়েই স্কুল ছেড়ে পালিয়ে যায়।

বর্তমানে ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। এই ঘটনায় গেল সোমবার মাদারীপুর থানায় রবিউলকে আসামি করে মামলা করেন ছাত্রীর মা।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন :রোহিঙ্গাদের জন্য ভারতের ত্রাণসামগ্রী বাংলাদেশকে হস্তান্তর
--------------------------------------------------------

ঘটনার শিকার ওই ছাত্রী বর্তমানে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছাত্রীর মা আরটিভি অনলাইনকে বলেন, রবিউলের লাম্পট্যের শিকার আমার মেয়ে মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আমরা ধর্ষক শিক্ষকের বিচার চাই।

মামলা সূত্রে জানা যায়, উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষার শিক্ষক রবিউল স্কুলের পাশেই বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। তার স্ত্রী অন্যত্র চাকরি করার কারণে বাসায় আর কেউ ছিল না। সেখানে প্রায়ই স্কুলের ছাত্রীরা পড়ার জন্য রবিউলের কাছে যেতেন। এই সুযোগে দুই বছর আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন রবিউল। পরে তাকে ধর্ষণ করে ভিডিও করেন। এরপর দুই বছর ধরে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে রবিউল। গেল মার্চ মাসে ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে রবিউল তাকে ফরিদপুর নিয়ে গর্ভপাত ঘটায়। পরে ওই ছাত্রী বিয়ের জন্য রবিউলকে চাপ দিলে সে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। পরে ছাত্রী ১৩ মার্চ ঘটনাটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানান। এরপরে রবিউল পালিয়ে যান। এরপর প্রধান শিক্ষক বিষয়টি ইউএনও ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের জানান। পরে দেড় মাসেও বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় সোমবার মাদারীপুর থানায় মামলা করেন ছাত্রীর মা।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। রবিউলকে ধরার চেষ্টা চলছে।

ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর দাবি, পুলিশ নিজ থেকেই আমাদের বাড়ি ও স্কুলে গিয়ে ঘটনার খোঁজ-খবর নিয়েছে। আমি রবিউলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

মামলার বাদী ছাত্রীর মা বলেন, শিক্ষক রবিউল আমার মেয়েসহ অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা তার শাস্তি চাই।

ছাত্রীর বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি গরীব মানুষ, বাবুর্চির কাজ করি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাজ করার কারণে সবসময়েই হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু এই ঘটনার পর মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে খুবই মেধাবী। ক্লাস ফাইভে বৃত্তি পেয়েছে। এইটেও ভালো রেজাল্ট করেছে। শিক্ষক হয়ে মেয়ের এই সর্বনাশ করবে ভাবতেই পারছি না।

শিবচর উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রোকনউজ্জামান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, রবিউল ২০১৪ সালে আমার স্কুলে কৃষি শিক্ষার শিক্ষক হিসেবে চাকরি শুরু করে। তার বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায়। তার স্ত্রী একটা স্কুলে চাকরি করে। সেই সুযোগে বাসা ফাঁকা থাকায় স্কুলের এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মার্চের ১৪ তারিখ থেকে সে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। কোনো ছুটি নেয়নি। সিক লিভ পাঠিয়েছে। আমরা তা গ্রহণ করেনি। শুনেছি তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।

এবিষয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. কাদের খালাসীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন :

জেবি/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
প্রাথমিকের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার, মানতে হবে যেসব সতর্কতা
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের মায়ের দাফন সম্পন্ন
এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড, পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বিচার
গণবিজ্ঞপ্তির আগেই বদলির প্রজ্ঞাপনের দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন
X
Fresh