• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

চিরিরবন্দরে লিচুর বাগানে ‘মধুর হাঁড়ি’

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা

  ০৩ মে ২০১৮, ১৮:২৬

দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দরের সুস্বাদু ও মিষ্টি লিচুর পরিচিতি দেশজুড়ে। এবার লিচু বাগানে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মৌয়ালরা। এর ফলে একদিকে যেমন মৌ চাষিরা মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে মৌমাছির মাধ্যমে মুকুলে মুকুলে পরাগায়ন ঘটায় লিচু গাছ মালিকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। এককথায় বাগানে মৌ চাষ করে চাষিরাও যেমন খুশি তেমনি মালিকরাও খুশি।

চিরিরবন্দরে গড়ে উঠেছে প্রায় এগারোশ’ লিচু বাগান। লিচু বাগানে প্রতি বছর খরচ করতে হয় না এবং অল্প পরিচর্যায় মোটা অঙ্কের অর্থ আয় হয় বলে অনেকেই লিচুর বাগান করেছেন। চলতি বছর চিরিরবন্দর উপজেলায় পাঁচশ’ ১০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে লিচুর বাগানগুলো মুকুলে ছেয়ে গেছে।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন :ব্যালট পেপার ছিনতাই হলে কঠোর ব্যবস্থা: ইসি
--------------------------------------------------------

উপজেলার পুন্ট্রি ও ভিয়েল ইউনিয়ন সড়কের পাশ দিয়ে অবস্থিত লিচু বাগানগুলোতে ব্যাপক মুকুল এসেছে। এরমধ্যে ব্যবসায়ী আলহাজ ফেরাজ উদ্দিন ও আলহাজ ওয়াদুদ রহমানের বাগানগুলোতে প্রায় দুই শতাধিক লিচু গাছ থাকায় টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ ও সাতক্ষীরা থেকে মো. রাশেদুল ইসলাম বাবলু ও নজরুল ইসলামসহ ১০ জন মৌয়াল ১৫টি বাগানে একশ’ থেকে দেড়শটি করে ছোট বড় বিভিন্ন আকৃতির মৌমাছির বাক্স বসিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৌ চাষ করে মধু সংগ্রহ করছেন।

মৌ চাষি দুলাল ইসলাম আরটিভি অনলাইনকে জানান, বৈজ্ঞানিক উপায়ে উদ্ভাবিত মৌচাষ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন তারা। ওই বাগানে তারা দুই শতাধিকের বেশি ব্রড ও নিউক্লিয়াস নামের ছোট বড় কাঠের বাক্স স্থাপন করেছেন। প্রতিটি বাক্সে একটি রাণী মৌমাছি, একটি পুরুষ মৌমাছি ও অসংখ্য এপিচ মেইলিফ্রা জাতের কর্মী মৌমাছি রয়েছে। কর্মী মৌমাছিরা মৌ মৌ গন্ধে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে যায় লিচুর মুকুলে। পরে মুকুল হতে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছির দল নিজ নিজ কলোনিতে মৌচাকে এনে জমা করছে। ১০-১৫ দিন অন্তর অন্তর প্রতিটি বাক্স হতে চাষিরা ৫-৬ মণ মধু সংগ্রহ করছেন। যে লিচু গাছে মৌমাছির আগমন বেশি হয় সে গাছের মুকুলে পরাগায়ন ভালো হয়। ফলে ওই গাছে বা বাগানে লিচুর যেমন বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকে তেমনি মৌ চাষিরা বেশি মধু সংগ্রহ করে বাণিজ্যিকভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন। উপজেলার বিভিন্ন বাগান থেকে মৌ চাষিরা প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ মণ মধু সংগ্রহ করে বাজারজাত করছে।

কাঠের তৈরি শত শত বিশেষ বাক্সের মাধ্যমে মৌ চাষ, মধু সংগ্রহ করার দৃশ্য দেখে এলাকাবাসীও ছুটে আসছেন মধু কেনার জন্য লিচু বাগানে।

ক্রেতা দেলোয়ার হোসেন আরটিভি অনলাইনকে জানান, বাজারে খাঁটি মধু পাওয়া যায় না। কিন্তু এখানে এসে খাঁটি মধু পাওয়া যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহমুদুল হাসান আরটিভি অনলাইনকে জানান, চলতি বছর প্রতিটি লিচু বাগানে ভালো মুকুল এসেছে। আর এ কারণে প্রচুর মৌমাছির আগমন দেখা দিয়েছে। লিচু গাছ থেকে মৌমাছি মধু আহরণের ফলে গাছে গাছে বেশি করে পরাগায়ন হয় এবং শতকরা ২০-৩০ ভাগ লিচুর বেশি ফলন হয়। এতে কৃষক ও মৌচাষি উভয়ই লাভবান হয়ে থাকেন।

আরও পড়ুন :

জেবি/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সোনারগাঁয়ে গাছে গাছে লিচুর সোনালি মুকুল
মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে লিচু বাগান, বাম্পার ফলনের আশা 
হাবিপ্রবি শিক্ষকের আবেদনে দিনাজপুরে হচ্ছে লিচু চত্বর
X
Fresh