• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

শরীয়তপুরে ওয়ারেন্ট জালিয়াতির নায়ক গ্রেপ্তার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

  ১৮ এপ্রিল ২০১৮, ১৭:৪৪

জালিয়াতি ওয়ারেন্ট দিয়ে বহু লোককে হয়রানির নায়ককে গ্রেপ্তার করেছে পালং মডেল থানার পুলিশ। এ ঘটনায় পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, ভুয়া ওয়ারেন্ট দিয়ে অনেক লোককে হয়রানি করার দায়ে ওয়ারেন্ট জালিয়াতির নায়ককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পালং মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম আরটিভি অনলাইনকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি ওয়ারেন্ট জালিয়াতির চক্রের নায়ক মাসুদ রানা ওরফে জলিল টাকার বিনিময়ে কোর্ট থেকে কারো সহায়তায় ভুয়া ওয়ারেন্ট তৈরি করে এলাকার নিরীহ গরীব লোকদেরকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করতো।

তিনি আরও জানান, এ চক্রটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জেলার কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটদের ও পুলিশ কোর্টের সিল তৈরি করে বিভিন্ন লোকের নামে ভুয়া ও জালিয়াতি ওয়ারেন্ট দিয়ে হয়রানি করে আসছে। বিশেষ করে কয়েকদিন আগে জাজিরা উপজেলার ছাব্বিশ পাড়া গ্রামের আ. রাজ্জাক এর নামে দিনাজপুর কোর্টের সিআর মামলার (২৬৬/১৭ ধারা ৪৬৭/৪৬৮/১০৯) বরাতে ভুয়া ওয়ারেন্ট তৈরি করে শরীয়তপুর পুলিশ সুপারের কাছে পাঠায়।
উক্ত ওয়ারেন্ট পুলিশ সুপারের মাধ্যমে শরীয়তপুর পুলিশ কোর্ট হয়ে জাজিরা থানায় চলে যায়। এ ওয়ারেন্টের আসামি আ. রাজ্জাক শরীয়তপুর শহরের বসবাস করার কারণে পালং মডেল থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে সোপর্দ করে।

আদালতের বিচারক আসামির জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরে তাকে পুলিশ কাস্টরিতে দিনাজপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়। আসামির স্বজনরা দিনাজপুর গিয়ে জানতে পারে উল্লেখিত মামলার কোনো অস্তিত্ব নেই। দীর্ঘ ১ মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পায় আসামি।

পরে রাঙামাটি কোর্টের সিআর মামলা নম্বর ১৫৫/১৭ ধারা ৪৬৭/৪৬৮/৪২০/১০৯ ও সিআর মামলা নম্বর ১২০/১৭ ৪২০/৪০৬/৪৬৭/৪৬৮/১০৯ ধারা নাম করে সেখান থেকে আরও দুটি মামলার ওয়ারেন্ট আসে। এরপর দিনাজপুর থেকে আরও একটি মামলার ওয়ারেন্ট আসে। এ সকল ওয়ারেন্টে উল্লেখিত আসামিরা বেশীর ভাগই জাজিরা উপজেলার ছাব্বিশ পাড়া গ্রামের।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : শিশু ধর্ষণের পর হত্যায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
--------------------------------------------------------

এদের মধ্যে হয়রানির শিকার হয়েছেন আ. রাজ্জাক মাদবর, রেজাউল করিম, আবুল বাশার মাদবর, মো. ইব্রাহিম, মো. খোকন, রিজিয়া বেগমসহ অনেকে। খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে এ সংক্রান্ত মামলার কোনো অস্তিত্ব নেই। এ সব ভুয়া ও জালিয়াতি ওয়ারেন্ট। এরপরই তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্তে বের হয়।

এক পর্যায়ে দেখা যায়, দিনাজপুরের ভুয়া ওয়ারেন্টে শরীয়তপুর থেকে গ্রেপ্তারকৃত আ. রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করার মূল নায়ক জাজিরা উপজেলার পশ্চিম ছাব্বিশ পাড়া গ্রামের ডা. হাবিবুর রহমান মাদবরের ছেলে মাসুদ রানা ওরফে আ. জলিল মাদবর।
পালং মডেল থানা পুলিশ বুধবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ধীরে ধীরে বের হতে থাকে তার অপকর্মের খবর।

পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানায়, শরীয়তপুর শহরের মনিরুজ্জামান খোকন, আইনজীবী সহকারী আনোয়ার হোসেনসহ অনেকেই তার এ কাজে সহায়তা করেছে। এ ঘটনায় আবুল বাশার মাদবর বাদী হয়ে বুধবার পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

আবুল বাশার মাদবর বলেন, মাসুদ রানা ভুয়া ওয়ারেন্ট দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করে কমপক্ষে ৪ লাখ টাকা ক্ষতি করেছে। বিনা অপরাধে আমরা জেল খেটেছি। এখনো ৬টি ভুয়া ওয়ারেন্ট আমাদের নামে। যা পুলিশের কাছে আছে। আমরা জালিয়াতের বিচার চাই।

ভুক্তভোগী রিজিয়া বেগম বলেন, মাসুদ রানা আমাদেরকে অনেক হয়রানি করেছে। পুলিশের ভয়ে আমরা অনেক কষ্ট করেছি। আমরা মাসুদ রানার শাস্তি চাই।

পালং মডেল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, মাসুদ রানা ওরফে জলিল ভুয়া ওয়ারেন্ট দিয়ে অনেক লোককে হয়রানি করেছে। অনেক লোক জেল খেটে টাকা নষ্ট করেছে। এক ওয়ারেন্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে গ্রেপ্তার করার পর অনেক তথ্য বের হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুন :

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh