• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান পিয়ন মাসুদ

আজিজুর রহমান পায়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

  ২১ মার্চ ২০১৮, ১৪:৩৪

নাম মাসুদুর রহমান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে আয়কর অফিসের পিয়ন ছিলেন ১৯৯৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত। পরের ইতিহাস আঙুল ফুলে কলাগাছ। কাড়িকাড়ি অর্থের মালিক এখন তিনি।

ঢাকায় ও নিজ এলাকায় বহু জায়গা-জমি, ফ্ল্যাট ও একাধিক দামি গাড়ির মালিক। প্রাডো গাড়ি হাঁকিয়ে বেড়ান নিজে। রয়েছে আধুনিক মডেলের একাধিক প্রাইভেটকার। পিয়নের চাকরি ছেড়ে ২০১০ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে দুটি অ্যাকাউন্ট খোলেন।

যেখানে অ্যাকাউন্ট খুলতে প্রয়োজন হয় ১০ কোটি টাকার। মাসুদুর রহমানের এই বিস্ময়কর উত্থান কাহিনী ঢাকার একটি প্রথম শ্রেণির দৈনিকে ছাপা হয় কয়েক বছর আগে।

সেই মাসুদুর রহমান এবার আলোচনায় এসেছেন আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দিয়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২(সরাইল) আসনে দলের মনোনয়ন চাওয়ার কথা জানাতে গত ১৮ মার্চ সরাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মাসুদুর রহমান।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: মঞ্চ প্রস্তুত, অপেক্ষা শেখ হাসিনার
--------------------------------------------------------

বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল আজাদ হত্যা মামলার আসামিদের সঙ্গে নিয়ে মাসুদ এই সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন। এ নিয়েও সমালোচনার ঝড় উঠে।

সংবাদ সম্মেলনে মাসুদের সঙ্গে ছিলেন সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের স্থগিত হওয়া কমিটির বহিষ্কৃত সভাপতি আবদুল হালিম, সহ-সভাপতি মো. ছাদেক মিয়া, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ইসমত আলী, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মাহফুজ আলী, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফেজুল আসাদ সিজার। এরা সবাই ইকবাল আজাদ হত্যা মামলার তালিকাভুক্ত আসামি।

সংবাদ সম্মেলনে মাসুদুর রহমান বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ লালন করে আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করেছি। মুক্তিযোদ্ধা যুবকমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমি কেন্দ্রীয় কমিটির সংকেত পেয়েই প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছি।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, মাসুদ কী ছিলেন সরাইলের সবাই সেটা জানে। বিএনপি আমলে হাওয়া ভবনের সিন্ডিকেটের সঙ্গে কথিত বৃটিশ আমলের পিলার ব্যবসা করে পিয়ন থেকে কোটিপতি হয়ে যান মাসুদ। তিনি এখন আওয়ামী লীগ নেতা। আসলে টাকা হলে সবই সম্ভব।

ইকবাল আজাদ হত্যা মামলার বাদী ও তার ছোট ভাই মো. জাহাঙ্গীর আজাদ জানান, যে কেউই মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে হত্যা মামলার আসামিদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থিতার কথা জানানোর বিষয়টি দুঃখজনক।

এদিকে মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ঢাকার ৩৩৪ নম্বর বাউনিয়ার হজরত খাজা মহিউদ্দিন শাহ (র:) এর মাজারের দায়দায়িত্ব ও সম্পত্তি দখল চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বাউনিয়ার হজরত খাজা মহিউদ্দিন শাহ (র.) এর মাজারের পরিচালক শাহজাদা শাহ মো. শাহজালাল আরটিভি অনলাইনকে জানান হজরত মাওলানা খাজা ইলিয়াছ শাহ (র.) এর খলিফা রত্ন ছিলেন তার নানা হজরত মাওলানা খাজা মহিউদ্দিন শাহ(র.)।

তার মৃত্যুর পর ওছিয়ত অনুযায়ী বাউনিয়ায় তাদের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়। এখানেই তার দরবার ও মাজার করা হয়।

তিনি বলেন, নানা হজুরের মৃত্যুর পর ওছিয়ত মোতাবেক আমার আম্মা হুজুর কেশমতি বেগম মাজারের দায়দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

আমার আম্মা হুজুরের মৃত্যুর পর আমার মামা পীরজাদা শাহ মো. জিয়াউদ্দিনকে নিয়ে মাজারের জায়গা ও এর দায়দায়িত্ব গ্রহণ করার চেষ্টা শুরু করেন মাসুদুর রহমান। মাসুদুর রহমানের সাহায্যে জায়গা দখলে একটি জাল দলিল করা হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসী পাঠিয়ে প্রতিনিয়ত তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করছে। মাসুদুর রহমানের এই তৎপরতার বিরুদ্ধে তিনি ঢাকা ও আশুগঞ্জে দুটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

মাসুদুর রহমান সরাইল উপজেলার চুন্টা গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে। এসব বিষয়ে মাসুদুর রহমান মাসুদের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।

আরও পড়ুন:

জেবি/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চাঁদপুরে তিন উপজেলার ২৬ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, বাতিল ৪ 
গৌরীপুরে ১৫ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল
সেনবাগে সাইফুল আলম দিপুসহ চেয়ারম্যান পদে ১০ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল
দ্বিতীয় ধাপে ২০৫৫ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল
X
Fresh