• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

নাবি গম ক্ষেতে হেড ব্লাস্টের আশঙ্কা, দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

মেহেরপুর প্রতিনিধি

  ১৯ মার্চ ২০১৮, ১৫:৪৭

মেহেরপুরে গম ক্ষেতে এবারও ব্লাস্ট (ছত্রাক) এর নমুনা দেখা দিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে বপনকৃত ক্ষেতে ব্লাস্টের আক্রমণ না থাকলেও নাবি বপনকৃত কিছু ক্ষেতে ব্লাস্ট হতে পারে বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এতে দুশ্চিন্তায় পরেছে কৃষকরা।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে, ব্লাস্ট নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। নাবি বপনের ফলে এমনটি হয়েছে।

জানা গেছে, গাংনী উপজেলার ধর্মচাকী, ভোমরদহসহ আশপাশের মাঠে গম ক্ষেতে ব্লাস্ট দেখা দিয়েছে। কয়েকটি ক্ষেতের গমের শীষ উপর থেকে সাদা হয়ে নিচের দিকে নামছে। যা হেড ব্লাস্ট হিসেবে পরিচিত।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৫ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত গম বপনের উপযুক্ত সময়। এর পরে বপন করলে গমের শীষ আসতে দেরি হয়। মার্চের শুরু থেকেই দিন ও রাতের তাপমাত্রার বড় পার্থক্য থাকায় রবি ফসল আক্রান্ত হয়। যার ফলশ্রুতিতে ব্লাস্ট হানা দিতে পারে। মৌসুমের শুরুতে অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ে যারা গম বীজ বপন করেছিলেন তাদের গম কাটা মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। যারা নাবি আবাদ করেছেন তাদের ক্ষেতে গম রয়েছে। তবে এর পরেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছে চাষিদের। তবে এই ব্লাস্ট আক্রমণের প্রতিকার হিসেবে যারা নাটিভো স্প্রে করছেন তাদের সমস্যা হচ্ছে না।

গেলো দুই বছর মেহেরপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৮টি জেলায় ব্লাস্টের আক্রমণে কয়েক হাজার হেক্টর গম বিনষ্ট হয়। এতে এ অঞ্চলে গম আবাদ হুমকির মুখে পড়ে।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ নেতা শাওনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন
--------------------------------------------------------

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ৩০ নভেম্বরের পরে গম আবাদ করতে চাষিদের নিরুৎসাহিত করা হলেও অনেকেই আবাদ করেছেন। এবার মৌসুমের শুরুতে মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে গম ক্ষেতের প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষণ করা হয়।

ধর্মচাকী গ্রামের কৃষক সামসুজ্জামান বলেন, গত বছর ব্লাস্টে আমার এক বিঘা জমির গম নষ্ট হয়ে যায়। এবার কৃষি বিভাগের পরামর্শে বীজ শোধন করে বপন করেছি ও নাটিভো স্প্রে করেছি।

গাড়াডোব গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, ২০১৬ সালে আমার দেড় বিঘাসহ গ্রামের অনেক কৃষকের গম নষ্ট হয় ব্লাস্টে। এবার আমার সতর্ক রয়েছি। নিয়মিত ক্ষেত দেখাশুনা করছি। এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা দেখা দেয়নি। কৃষি বিভাগের পরামর্শে স্প্রে দিয়ে যাচ্ছি।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ব্লাস্টের আক্রমণ চিহ্নিত করার পর হাজার হাজার হেক্টর ক্ষেতের গম পুড়িয়ে দেয়া হয়। গেল দুই বছর এ অঞ্চলে গম বীজ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ব্লাস্ট মুক্ত করতে পর পর তিন বছর এ অঞ্চলে গম আবাদে নিরুৎসাহিত করে কৃষি বিভাগ।

গেল বছর মেহেরপুর জেলায় স্বল্প পরিমাণে গম আবাদ হয়। এতেও ব্লাস্টের আক্রমণ হয়েছিল। চলতি বছরেও গম আবাদে নিরুৎসাহিত করে কৃষি বিভাগ।

জানা গেছে, বারি গম ৩৩ নামে জাতীয় বীজ বোর্ড এ মৌসুমে ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাতটির অনুমোদন দিয়েছে। খামার ও কৃষক প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে চলতি মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় জাতটি আবাদ হচ্ছে। আগামী মৌসুম থেকে চাষি পর্যায়ে বীজ সরবরাহ করা যাবে বলে আশা করছে বিএডিসি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে গম আবাদ হয়েছে।

আরও পড়ুন:

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh