• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

একটি সেতুর জন্য ৩৮ গ্রামে হাহাকার

চৌধুরী ভাস্কর হোম, মৌলভীবাজার

  ১৭ মার্চ ২০১৮, ১৯:০৩

একটি সেতুর জন্য ৩৮টি গ্রামের মানুষের চলছে হাহাকার! ভোট এলে মেলে আশ্বাস। ভোটের পর আর কারও দেখা পায় না এই গ্রামের মানুষ। গর্ভবতী নারীসহ শিশুদের জরুরি চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে না পারায় এই অঞ্চলে বেড়েছে মৃত্যুঝুঁকি। কমছে শিক্ষার হার।

নদী পারাপারের ভয়ে অনেকেই অল্প বয়সে লেখাপড়া ছেড়ে অন্য কাজে লেগে যাচ্ছেন। ফলে লেখাপড়া আর উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৩৮টি গ্রামের শিক্ষার্থীরা।

সদর উপজেলার কাজিরবাজার সংলগ্ন প্রায় ৬০০ ফুট প্রস্থ মনু নদীতে একটি সেতুর অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষায় নৌকা আর শীতে সাঁকো পারাপার করছে হাজারো ছাত্র-ছাত্রীসহ লক্ষাধিক মানুষ।

এই একটি সেতুর অভাবে মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে ওই তিনটি উপজেলার ৩৮টি গ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যাতায়াতের অভাবে লেখাপড়া ও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে পড়তে হচ্ছে দুর্ঘটনার মুখে। প্রতি বছর বর্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে নৌকা ডুবে যায়। নদী পারাপারের ভয়ে অনেকেই অল্প বয়সে লেখাপড়া ছেড়ে অন্য কাজে লেগে যাচ্ছেন।

ওই জায়গায় সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসীকে স্বাধীনতার পর থেকে যখন যে সরকার ক্ষমতায় গেছে তারাই আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু কেউই কথা রাখেনি। বর্ষকালে রাতের বেলায় নদী পারাপারে নৌকা মেলে না। তাই দূর-দূরান্ত থেকে বাড়ি ফিরতে দেরি হলে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়।

মুহিত মিয়া নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি আরটিভি অনলাইনকে জানান, বর্ষা মৌসুমে নদীতে নৌকা ডুবে যায়। যার কারণে ছেলে-মেয়েদের সময়মতো ক্লাসে ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় না। ফলে স্কুলে যাবার জন্য চাপও দিতে পারেন না ছেলে-মেয়েদের।

স্থানীয় শিক্ষক এবাদুল হক দুলু আরটিভি অনলাইনকে জানান, বর্ষায় নদী পারাপারের ভয়ে স্কুলে উপস্থিতির সংখ্যা হাতে গোনা। নদীর ওই পারে গিয়ে বর্ষায় ক্লাস নিতে ভয় পান শিক্ষকরা। কারণ বর্ষায় মনু নদী থাকে উত্তাল।

কাজিরবাজারের বাসিন্দা বদরুল হাসান আরটিভি অনলাইনকে জানান, সেতু না থাকার কারণে প্রসূতি রোগীদের অমানবিক কষ্টে পরতে হয়। বর্ষা মৌসুমে দুটি নৌকা এবং শুকনা মৌসুমে পাশাপাশি দুটি সাঁকো দিয়ে পারাপার হন ওই তিন উপজেলার ৩৮ গ্রামের লক্ষাধিক নারী-পুরুষ।

বর্ষা মৌসুমে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নদীতে নৌকা পাওয়া যায়। রাত ১০টার পরে ওই নদীতে মাঝি থাকেন না। মাঝি না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় শহর থেকে ফিরে আসা মানুষদের।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ভিপি মিজানুর রহমান আরটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, এই সেতুর জন্য আমি নিজেও বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করেছি। বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য ও প্যানেল স্পিকার সৈয়দা সায়রা মহসিন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি এই সেতুর ব্যাপারে সংসদে দাবি জানিয়েছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সেতুটির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেবি/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সেতু ভেঙে ভোগান্তি, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল  
সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ, নেই ভোগান্তি
সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে বাড়ছে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ 
ছুটির ৫ দিনে পদ্মা সেতুতে যত টাকার টোল আদায়
X
Fresh