ছাত্রলীগের ভয়ে আহত মাওলাকে কেউ তোলারও সাহস পাচ্ছিল না
রাজশাহী কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র গোলাম মাওলা বিভাগের সেমিনার কক্ষে বসে পড়ছিলেন। সেখান থেকে তাকে ছাত্রলীগের টেন্টে ধরে এনে নির্মমভাবে হাতুড়িপেটা করা হয়।
সেখানেই পড়ে ছিলেন গোলাম মাওলা। পাশ দিয়ে অনেকেই হেঁটে যাচ্ছিলেন কিন্তু ছাত্রলীগের ভয়ে কেউ তাকে তুলতে যেতে পারছিলেন না।
ইতিহাস বিভাগের একজন শিক্ষক ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। গতকাল বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে।
এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান পার্থ সারথী বিশ্বাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
এক দিনের মধ্যেই তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ হামলাকারীদের নির্দিষ্ট নাম দিয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন গোলাম মাওলা বলেন, তিনি মনোবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বেলা ১১টার দিকে তিনি বিভাগের সেমিনারে বসে পড়ছিলেন।
এসময় তার বিভাগের একই বর্ষের ছাত্র জালাল উদ্দিন তাকে কথা বলার জন্য ডেকে বাইরে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তাকে টেনে নিচে ছাত্রলীগের টেন্টে নিয়ে যান।
সেখানে তাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় একটা আঘাত করতেই তিনি পড়ে যান। তারপর ১০ থেকে ১২ জন মিলে তাকে মেরেছেন। গোলাম মাওলা বলেন, জালালের কাছে হাতুড়ি ছিল। তিনিই প্রথম আঘাত করেন। একপর্যায়ে তার জ্ঞান ছিল না।
তার ওপর তাদের রাগ কেন, জানতে চাইলে গোলাম মাওলা বলেন, তার বিভাগের একটি মেয়ের সঙ্গে নাকি জালালের সম্পর্ক রয়েছে। সেই মেয়েটি তার (গোলাম মাওলা) সঙ্গে কথা বলে।
জালাল তাকে ওই মেয়েটির সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন। কিন্তু একই সঙ্গে পড়ার কারণে মেয়েটি তার সঙ্গেও কথা বলে। এই ক্ষোভে তাকে ধরে এনে মারা হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী তিন–চারজন বলেন, ওই সময় ছাত্রলীগের টেন্টে সংগঠনের রাজশাহী কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাসিক দত্ত, প্রচার সম্পাদক রোজেলসহ ১০ থেকে ১২ জন নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। জালাল ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী।
জালালের ফোন নম্বর পাওয়া যায়নি। এ জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। রাসিক দত্তের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। তারা কালকেই (বৃহস্পতিবার) প্রতিবেদন দেবে। কারা সেখানে ছিল, সব তাদের সিসি ক্যামেরায় রয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই জড়িতদের নামে মামলা করবেন।
আরও পড়ুন:
জেবি/এমকে
মন্তব্য করুন