যশোরে সরকারের গাছ কাটা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত যশোর রোডের গাছ রক্ষায়, ক্রমেই একাট্টা হচ্ছেন সবস্তরের মানুষ। ইতিহাসের স্বাক্ষী গাছগুলো কেটে সড়ক প্রশস্ত করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভের দানা বাঁধছে। সবার দাবি একটাই গাছ না কেটে বিকল্প উপায়ে রাস্তা বড় করা হোক।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সম্প্রসারণের কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে মহাসড়কের দুই পাশে ২ হাজার ৩১২টি গাছ কাটা পড়বে।
গাছগুলো না কেটেই রাস্তা চওড়া করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন পরিবেশবিদ ও স্থানীয়রা। তারা এই গাছগুলোকে ঐতিহ্যবাহী তকমা দেওয়ারও দাবী জানিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে, সভা ও সেমিনার করে প্রতিনিয়ত গাছ না কাটার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: যশোর-বেনাপোল সড়কের গাছ কাটা বন্ধে আইনি নোটিশ
--------------------------------------------------------
যশোর শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল হাসান বলেন, শতবর্ষী গাছগুলো স্বাধীনতাসংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত। আমাদের উন্নয়ন অবশ্যই দরকার, তবে ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষা করে।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি যশোর জেলা শাখার সভাপতি ইকবাল কবির বলেন, ২ হাজার ৩১২টি গাছ কেটে মহাসড়ক চার লেন করার যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। যাঁরা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেখাচ্ছেন, তাঁদের বিশেষ মতলব রয়েছে। এরূপ সিদ্ধান্ত পরিবেশবিরোধী শুধু নয়, গণবিরোধীও।
যশোরের স্থানীয়রা জানান, মহাসড়কের দুই পাশে স্থানভেদে ১০০ থেকে ১৪০ ফুট পর্যন্ত সড়ক ও জনপথের (সওজ) জমি আছে। তাই সম্প্রসারণ কাজের জন্য গাছ কাটার কোনো প্রয়োজন নেই। পাশে গাছ থাকলে সড়কের ক্ষয়রোধ হয়। রাতে গাছে আলো প্রতিফলিত হয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে। শতবর্ষী গাছগুলো মহিরুহ হিসেবে কাজ করে। শতবর্ষী গাছগুলো স্বাধীনতাসংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত। ৎ
এলাকাবাসী বলছেন, আমাদের উন্নয়ন অবশ্যই দরকার, তবে ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষা করে। ২ হাজার ৩১২টি গাছ কেটে মহাসড়ক চার লেন করার যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। যারা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেখাচ্ছেন, তাদের বিশেষ মতলব রয়েছে। এরূপ সিদ্ধান্ত পরিবেশবিরোধী শুধু নয়, গণবিরোধীও।
কেবল ইতিহাসের দায়ই নয়, যশোর রোডের সব গাছ কেটে ফেললে পরিবেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
যশোর এমএম কলেজের ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সোলজার রহমান বলেন, গাছগুলো পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রের উন্নয়নে কাজ করছেন।
যশোর সওজ ও জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, মহাসড়কটির উভয় পাশের গাছের মধ্যে রয়েছে রেইনট্রি, মেহগনি, বাবলা, খয়ের, কড়ই, আকাশমণি, বট, শিশু, ঝাউ, আম, কাঁঠাল, সেগুন, শিমুল ও দেবদারু। এর মধ্যে ১০০ বছরের বেশি পুরোনো রেইনট্রি রয়েছে ৭৪৫টি।
আরও পড়ুন
এমসি/ এমকে
মন্তব্য করুন