ভালো নেই ‘যুবরাজ’
কুমিল্লা চিড়িয়াখানার সিংহ ‘যুবরাজ’ ভালো নেই। অনেকদিন ধরে শয্যাশায়ী। খাবারও তেমন মুখে তুলছে না। যুবরাজকে দেখতে গিয়ে দর্শনার্থীদেরই উল্টো মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে তার মুমূর্ষু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এরপর থেকেই চিড়িয়াখানার ঠিকাদার ও জেলা পরিষদ সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
সুমি নামের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুবরাজের ছবি পোস্ট করে লিখেন, ‘যারা যুবরাজের খবার খেয়ে ফেলেছে তাদের বিচার চাই। তাদেরও এভাবে খাঁচায় বন্দী করে রাখা হোক।’
সাজ্জাদ হোসেন নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘ঠিকাদার জেলা পরিষদ যুবরাজের খাবারের টাকা খেয়ে ফেলার কারণেই তার এই অবস্থা হয়েছে।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা চিড়িয়াখানা শুধু নামেই চিড়িয়াখানা। নেই উল্লেখযোগ্য কোনো পশু-পাখি। যে কয়েকটি পশু-পাখি আছে তাদের অবস্থাও মুমূর্ষু। অধিকাংশ খাঁচা শূন্য পড়ে আছে। কয়েকটি খাঁচা ভেঙে গেছে। একটু বৃষ্টি হলে চিড়িয়াখানা ডুবে যায়। ডুবে যায় এর প্রবেশ পথও। এতে দিন দিন দর্শনার্থী কমছে। গেলো পাঁচ বছর ধরে এমন দুরবস্থা কুমিল্লা চিড়িয়াখানার।
১৯৮৬ সালে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরি মৌজায় জেলা প্রশাসকের বাংলোর পাশে ১০.১৫ একর ভূমিতে গড়ে ওঠে কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন। এই ভূমির মালিক জেলা প্রশাসন। আর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে জেলা পরিষদ। এই দুই প্রতিষ্ঠানের দুটানায় চিড়িয়াখানার কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না।
কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখা যায়, তেমন দর্শনার্থী নেই। অনেকটা পরিত্যক্ত বাড়ির মতো চিড়িয়াখানাটি। খাঁচাগুলো শূন্য পড়ে আছে। সব মিলিয়ে নয়টি বানর, একটি মিশরি মোরগ, অজগর সাপ একটি ও দুইটি হরিণ রয়েছে। একটি মাত্র সিংহ ‘যুবরাজ’ মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় সিংহটি মারা যেতে পারে।
সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সাবেক সভাপতি আলী আকবর মাসুম আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কুমিল্লার মতো বড় শহরে চিড়িয়াখানার এই অবস্থা খুবই দুঃখজনক।’ চিড়িয়াখানাটি সংস্কার ও পশু-পাখি দিয়ে নতুন করে সাজানো সময়ের দাবি বলে জানান তিনি।
লিজ নেয়া অংশীদারদের একজন মামুনুর রহমান পাটোয়ারী। তিনি আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘লিজ ও পশু-পাখির খাবার মিলিয়ে বছরে ১৫ লাখ টাকা খরচ। কিন্তু পশু-পাখি না থাকায় দর্শনার্থী তেমন আসছে না। এতে আমাদের লোকসান গুণতে হবে।’
কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার ভৌমিক আরটিভি অনলাইনকে বলেন, যুবরাজ সিংহটি মুমূর্ষু অবস্থার রয়েছে। তার চিকিৎসা করিয়েছি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একটি সিংহ সাধারণত ১৪ বছর বাঁচে। যুবরাজের বর্তমান বয়স ১৮ বছর। সিংহটি মূলত বাড়তি জীবনকাল অতিবাহিত করছে।
তিনি আরো বলেন, চিড়িয়াখানার মাটি ভরাট করেছি। দেওয়াল নির্মাণ চলছে। কিছু দিনের মধ্যে পশু-পাখি আনা হবে। আশা করছি চিড়িয়াখানার উন্নয়নে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবো।
জেবি/এসএস
মন্তব্য করুন